ঝাড়গ্রাম মহকুমার বিনপুরের মালাবতী জঙ্গলে বাঘের পায়ের ছাপ। —নিজস্ব ছবি।
পায়ের ছাপে বাঘের ভয়ই পাকা হচ্ছে জঙ্গলমহলে।
অজানা প্রাণীর পায়ের ছাপে রবিবারই বাঘের আতঙ্ক ছড়িয়েছিল বাঁকুড়ার বারিকুল ও ঝাড়গ্রাম জেলার বিনপুরে। শুরু হয়েছিল পর্যবেক্ষণ, মাপজোক নেওয়া। সোমবার সকালে বাঁকুড়ার বারিকুলের খেজুরখেন্নায় পৌঁছন মুখ্য বনপাল (কেন্দ্রীয় চক্র) রাজীব শর্মা। সঙ্গে ডিএফও (বাঁকুড়া দক্ষিণ) দেবাশিসমহিমা প্রধান। খেজুরখেন্না, দুবরাজপুর, পুনশ্যা ঘুরে জঙ্গল লাগোয়া কিছু জায়গায় বন্যপ্রাণীর পায়ের ছাপ দেখতে পান তাঁরা। পরে রাজীব বলেন, ‘‘দেখে বাঘের পায়ের ছাপ বলেই মনে হচ্ছে।’’
ঝাড়গ্রামের বিনপুরের মালাবতীর জঙ্গলে পাওয়া পায়ের ছাপও বাঘের বলেই প্রাথমিক ভাবে অনুমান সুন্দরবন থেকে আসা বিশেষজ্ঞদের। বন দফতরের তরফে এ নিয়ে নির্দিষ্ট ভাবে কিছু বলা হয়নি। তবে সুন্দরবনের বিশেষজ্ঞরা পায়ের ছাপ দেখে জানান, দু’টি নয়, একটি প্রাণী রয়েছে। সেটা বাঘও হতে পারে। জঙ্গলের কয়েক জায়গায় ফাঁদ-ক্যামেরা লাগানোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। বিকেলে মালাবতীর জঙ্গল লাগোয়া সাতবাঁকি মৌজায় একটি ফাঁদ-খাঁচা বসানো হয়েছে। ডিএফও (ঝাড়গ্রাম) বাসবরাজ হলেইচ্চি বলেন, ‘‘সুন্দরবন থেকে চার জন বিশেষজ্ঞ বিশেষ খাঁচা নিয়ে এসেছেন। একটি খাঁচা এদিন বসানো হয়েছে। মঙ্গলবার ট্র্যাপ-ক্যামেরা বসানো হবে।’’
বাঁকুড়ার বারিকুলেও সুন্দরবন থেকে আসছে ‘ক্যামেরা ট্র্যাপ’। তবে কোনও শাবকের পায়ের ছাপ বারিকুলে পাওয়া যায়নি বলেই জানান বনকর্তারা। রাজীব বলেন, ‘‘কাদামাটিতে পা পড়ায় ছাপ ছড়িয়ে গিয়েছে। আরও বেশ কিছু ছাপের নমুনা সংগ্রহ করে মিলিয়ে দেখতে হবে। তার আগে প্রাণীটি পুরুষ না মহিলা, তার আঁচ পাওয়া যাচ্ছে না।’’
আরও পড়ুন: অতি সক্রিয় হতে পুলিশকে নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর
বছর দুয়েক আগে ঝাড়গ্রামের লালগড়ে হাজির হওয়া রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারটিকে বাঁচানো যায়নি। এ বার তাই বাড়তি সতর্ক বন দফতর। নজরদারি চলছে। গ্রামবাসীদের সচেতন করতে এ দিন বন দফতরের গাড়ি থেকে মাইকে প্রচারও চলে। পুণের একটি বন্যপ্রাণ সংক্রান্ত বেসরকারি সংস্থার রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত ফিল্ড ভলান্টিয়ার পিন্টু মাহাতোও এ দিন বিনপুরে গিয়ে গ্রামবাসীদের বাঘ নিয়ে সচেতন করেছেন।
আরও পড়ুন: ছাত্র-নিগ্রহে দায়ী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক : মমতা
এ দিন বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে অনেকেই আসেন বিনপুরের লক্ষ্মণপুরে। চিয়ানবেড়া গ্রামের তরুণ সৌমেন কিস্কু তো বাঘের পায়ের ছাপের সঙ্গে নিজস্বীও তোলেন। সৌমেন বলছেন, ‘‘বাঘ না-দেখতে পাই, পায়ের ছাপ তো দেখলাম।’’