Union Ministry of Transport

২০ বছরের বেশি বয়স, এমন বাণিজ্যিক গাড়ির ‘সিএফ’ না পেলে লাটে উঠবে পরিবহণ পরিষেবা! কড়া চিঠি কেন্দ্রকে

এক একটি গাড়ির জন্য প্রতি বছর গুনতে হবে ৪২ হাজার ৪৮০ টাকা করে। প্রসঙ্গত, এই বেসরকারি পরিবহণের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে কয়েক লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থানের বিষয়টি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৩:৫০
Share:
Transport traders have applied to the Union Ministry of Transport to reduce the cost of renewing CF of commercial vehicles over 20 years old

২০ বছরের বয়ঃসীমার ঊর্ধ্বে থাকা গাড়িগুলির ‘সিএফ’ করাতে গিয়ে গুনতে হবে বিরাট অঙ্কের টাকা। —ফাইল ছবি।

বয়স ২০ বছরের বেশি এমন বাণিজ্যিক গাড়ির ‘সিএফ’ (সার্টিফিকেট অফ ফিটনেস) করাতে গিয়ে লাটে উঠবে বেসরকারি পরিবহণ পরিষেবা। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় পূর্ত পরিবহণ ও সড়ক মন্ত্রকের তরফে দেশের সর্বোচ্চ সময় ধরে চলাচল করা যানবাহনের নিয়মবিধির খসড়া বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। সেই খসড়া প্রস্তাবে দেখা যাচ্ছে, ২০ বছরের বয়ঃসীমার ঊর্ধ্বে থাকা গাড়িগুলির ‘সিএফ’ করাতে গিয়ে গুনতে হবে বিরাট অঙ্কের টাকা। তাই কেন্দ্রীয় সরকার এই বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করুক। বেসরকারি পরিবহণ সংগঠন ‘অল ইন্ডিয়া মোটর ট্রান্সপোর্ট কংগ্রেস’ এ বিষয়ে নিজেদের কড়া অবস্থানের কথা জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারকে। প্রশাসন সূত্রে খবর, নতুন প্রস্তাবে কেন্দ্রীয় পূর্ত সড়ক ও পরিবহণ মন্ত্রক জানিয়েছে ২০ বছরের ঊর্ধ্বে থাকা বয়ঃসীমার বাণিজ্যিক যানবাহনগুলির ক্ষেত্রে এ বার থেকে ‘সিএফ’ পেতে ৩৬ হাজার টাকা করে গুনতে হবে। সঙ্গে দিতে হবে ১৮ শতাংশ জিএসটি। অর্থাৎ, এক একটি গাড়ির জন্য প্রতি বছর গুনতে হবে ৪২ হাজার ৪৮০ টাকা করে। প্রসঙ্গত, এই বেসরকারি পরিবহণের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে কয়েক লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থানের বিষয়টি। কারণ, এ ক্ষেত্রে বেসরকারি বাস, ট্যাক্সি, লরি, ছোট হাতি, ম্যাটাডোর-সহ বিভিন্ন ধরনের যাত্রী এবং পণ্যবাহী অসংখ্য গাড়ি সরাসরি যুক্ত রয়েছে নাগরিক পরিষেবার সঙ্গে। ফলে এই সব বিষয়ের কথা উল্লেখ করে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে খসড়া নোটিফিকেশন পাল্টাতে নিজেদের যুক্তি জানিয়েছে বেসরকারি পরিবহণ সংগঠনগুলি।

Advertisement

বর্তমানে এক থেকে আট বছর বয়সের বাণিজ্যিক গাড়ির ক্ষেত্রে দু’বছর অন্তর সিএফ পেতে ৮৪০ টাকা করে দিতে হয়। ওই একই গাড়ির নয় থেকে ১৫ বছর বয়স পর্যন্ত সিএফ পেতে প্রতি বছরে গুনতে হয় ৮৪০ টাকা। আর পনেরো বছরের ঊর্ধ্বে ১২ হাজার টাকা দিতে হয় বছরে। সব ক্ষেত্রেই ১৮ শতাংশ জিএসটি দেওয়া বাধ্যতামূলক। কিন্তু নতুন খসড়া অনুযায়ী বলা হয়েছে, কুড়ি বছরের ঊর্ধ্বে যে কোন গাড়ির সিএফ পেতে ৪২ হাজার ৪৮০ টাকা করে দিতে হবে। পশ্চিমবঙ্গ থেকে এ বিষয়ে নিজেদের অবস্থান জানিয়ে কেন্দ্রীয় পূর্ত সড়ক পরিবহণ মন্ত্রকে চিঠি পাঠিয়েছে অল বেঙ্গল বাস মিনিবাস সমন্বয় সমিতি। সংগঠনের তরফে চিঠি পাঠানো হয়েছে দিল্লিতে পরিবহণ ও জাতীয় সড়ক মন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিবকে। যেখানে স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছে যে, ২০ বছরের ঊর্ধ্বে গাড়ির বয়ঃসীমা বৃদ্ধি করতে যে পরিমাণ অর্থ চাওয়া হয়েছে, তাতে পরিবহণ ব্যবসায়ীদের বিস্তর ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। এমন সিদ্ধান্তের ফলে প্রচুর গাড়ি যেমন রাস্তা থেকে উঠে যাবে, তেমনই আবার অনেক ক্ষেত্রেই সিএফ না নিয়ে গাড়ি চালানোর প্রবণতা দেখা দেবে। যা দেশের পরিবেশের পক্ষে সংকটজনক হবে। তাই তাদের অনুরোধ, খসড়া প্রস্তাবে থাকা ওই আর্থিক বৃদ্ধির বিষয়টি নিয়ে পুনরায় বিবেচনা করুক পূর্ত পরিবহণ ও সড়ক মন্ত্রক। এই বিষয়টি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পরিবহণ দফতরকেও জানিয়েছে রাজ্যের বেসরকারি পরিবহণ সংগঠনগুলি।

এ প্রসঙ্গে অল ইন্ডিয়া বাস মিনিবাস সমন্বয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কলকাতা ও দিল্লি শহরে ১৫ বছর বয়সের ঊর্ধ্বে গাড়ি চালানো যায় না। আদালতের নির্দেশে এই সিদ্ধান্ত আমরা মেনে নিয়েছি। কিন্তু দেশের এমন বহু প্রান্ত আছে, যেখানে ২০-২৫-৩০ বছরের পুরনো গাড়ি চালানো হয়। অনেক ক্ষেত্রে সেই সব প্রান্তিক এলাকায় পরিবহণ পরিষেবা মানে ওই ধরনের গাড়িই। তাই যদি কেন্দ্রীয় সরকার এই ধরনের কর বাণিজ্যিক গাড়ির ক্ষেত্রে আরোপ করে, তাতে গণপরিবহণ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘করোনা অতিমারির সময় থেকে আমাদের বেসরকারি পরিবহণ ব্যবসা যে ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাতে যদি এই ধরনের কর চাপানো হয়, তা হলে দেশের সর্বস্তরের পরিবহণ পরিষেবা একেবারে ভেঙে পড়বে। তাই এমন পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আগেই সতর্ক হোক কেন্দ্রীয় পূর্ত সড়ক ও পরিবহণ মন্ত্রক।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement