ক্রমবর্ধমান পেট্রোল ও ডিজেলের দাম বৃদ্ধিতে বিকল্প গণপরিবহণ ব্যবস্থার দিকে ঝুঁকছে রাজ্য। সেই লক্ষ্যেই এবার নতুন কম্প্রেসড ন্যাচারাল গ্যাস (সিএনজি) বা বিদ্যুৎ-সহ ব্যাটারি চালিত বাস কিনলে তাতে কর ছাড় দেবে পরিবহণ দফতর। সম্প্রতি এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে দফতর। সেই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ব্যাটারি, বিদ্যুৎ ও সিএনজি চালিত দুই বা চার চাকার যানবাহনের ক্ষেত্রে ছাড় ঘোষণা করছে রাজ্য সরকার। মে মাসে এই বিজ্ঞপ্তি জারি হলেও তা কার্যকর হবে ২০২২-এর ১ এপ্রিল থেকে। এবং তা কার্যকর থাকবে ২০২৪-এর ৩১ মার্চ পর্যন্ত। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ওই যানবাহনগুলির ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশন ফি মকুব করবে পরিবহণ দফতর। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে অর্থ দফতর এই ছাড়ের কথা ঘোষণা করে। ২৫ মে সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার কাজ শুরু করেছে পরিবহণ দফতর। তাদের কথায়, এই ধরনের পরিবহণ পরিষেবা শুধুমাত্র সাশ্রয়ের দিকে লক্ষ্য রাখছে না, পরিবেশ দূষণের মাত্রা কমানোও এর উদ্দেশ্য।
বেসরকারি পরিবহণ ক্ষেত্রে এই ছাড়ের কথা চলতি বছর বাজেট অধিবেশনেই ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই নির্দেশ কার্যকর হওয়ার পর মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, "বিকল্প পরিবহণ ব্যবস্থাকে সাহায্য করতেই আমাদের সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পর পর দু'বছর বেসরকারি বাস মালিকরা এই কর ছাড় পাবেন। আশা করব, এই কর ছাড় পেলে বেসরকারি পরিবহণ ব্যবস্থা আরও চাঙ্গা হবে।" তবে এই কর ছাড় বেসরকারি বাস মালিকদের কাছে সাময়িক স্বস্তির হলেও, শেষ পর্যন্ত সুরাহার নয় বলেই দাবি উঠেছে। কারণ, একটি সিএনজি চালিত বাসের মূল্য হচ্ছে ২৫-৩১ লক্ষ টাকা। আর বিদ্যুৎ চালিত বাসের মূল্য ৮০ লক্ষ থেকে এক কোটি ২০ লক্ষ টাকার মধ্যে। মুখে দু'বছর কর ছাড়ের কথা বলা হলেও, তার পরিমাণ খুব একটা বেশি নয় বলেই জানিয়েছেন বাস মালিকরা। তাই এই ছাড়ের পাশাপাশি, পরিবহণ মন্ত্রীর কাছে আরও বাড়তি ছাড়ের আবেদন জানিয়েছেন বেসরকারি বাস মালিকদের সংগঠন সিটি সাবারবান বাস সার্ভিসেস।
সম্প্রতি পরিবহণ মন্ত্রীকে একটি চিঠি পাঠিয়েছে বাস মালিকদের এই সংগঠন। সেই চিঠিতে আবেদন করা হয়েছে, নতুন সিএনজি বাস নামাতে অসম সরকার ২৫ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিচ্ছে সেখানকার বেসরকারি বাস মালিকদের। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে সেই নীতি কার্যকর করে বেসরকারি বাস মালিকদের ৩০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হোক। বাস মালিকদের সংগঠনের পক্ষে টিটো সাহা বলেন, "রাজ্য সরকার যে বাস মালিকদের কথা ভেবে দু'বছর পর ছাড়ের কথা ঘোষণা করেছেন, এতে আমরা খুশি। কিন্তু অতিমারি পরিস্থিতিতে যে ভাবে বেসরকারি পরিবহণ ব্যবস্থা মার খেয়েছে, তাতে আরও বেশি সরকারি সহায়তা প্রয়োজন বেসরকারি বাস মালিকদের। তাই আমরা লিখিত ভাবে পরিবহণ মন্ত্রীকে আমাদের দাবি-দাওয়ার কথা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছি।"
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।