—প্রতীকী চিত্র।
সরকারি বাস চালিয়ে পরিবহণ দফতরের লোকসান কোনও নতুন ঘটনা নয়। এ বার সেই লোকসানের পথ পুরোপুরি বন্ধ করতে চাইছে পরিবহণ দফতর। সেই লক্ষ্যেই এ বার সরকারি বাস 'পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ'-এ (পিপিপি) মডেলে চালানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে দফতর, এমন ইঙ্গিত মিলেছে। মূলত তিনটি পরিবহণ নিগম মারফত বাস চালিয়ে থাকে দফতর। কিন্তু সব ক’টি ক্ষেত্রেই দফতরকে লোকসানের সম্মুখীন হতে হয়েছে ধারাবাহিক ভাবে। তাই বিভিন্ন নিগমের হাতে থাকা বাসগুলিকেই পিপিপি মডেলে চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। কারণ প্রসঙ্গে জানা গিয়েছে, এক একটি বাস চালাতে যে পরিমাণ খরচ হয়, তা তোলা সম্ভব হচ্ছে না। গাড়ির তেলের দাম থেকে শুরু করে ড্রাইভার ও কন্ট্রাক্টারের বেতন দিতে হয় পরিবহণ দফতরকে। অথচ দেখা যায়, কয়েকটি বাস ছাড়া বাকি ক্ষেত্রে খরচ তোলা সম্ভব হচ্ছে না। সেই কারণেই বাসগুলিকে পিপিপি মডেলে চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার পথে দফতর।
পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীর কথায়, "পিপিপি মডেলে বাস চালানোর কথা দফতর বিবেচনা করছে। শর্তসাপেক্ষে বাসগুলিকে বিভিন্ন সংস্থাকে চালানোর বরাত দেওয়া হবে। এর ফলে বেশি সংখ্যায় বাস রাস্তায় নামানোই আমাদের লক্ষ্য। কারণ রাস্তায় বাস না থাকার অভিযোগ যাত্রীদের থেকে পরিবহণ দফতরের কাছে এসেছে, সেই অভিযোগের নিরসন করতেই পিপিপি মডেলে সরকারি বাস চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।" তবে দফতরের এক কর্তা জানাচ্ছেন, দিনভর বাস চালিয়ে, ড্রাইভার ও কন্ডাক্টররা যে হিসাব দেন, তাতে বলা হয়, বাস চালিয়ে লাভ হচ্ছে। তাই এ বার বেসরকারি সংস্থাকে দায়িত্ব দিয়ে রাজ্য সরকার দেখতে চায়, বাস চালিয়ে আদৌ কোনও লাভ হচ্ছে কি না। বাস চালানোর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সংস্থা নিজেদের চালক ও কন্ডাক্টর নিয়োগ করতে পারবে। তবে দিনের শেষে বাস জমা রাখতে হবে কোনও সরকারি ডিপোতেই। আবার সকালবেলায় এসে দফতরের নির্দিষ্ট বিভাগকে জানিয়ে ডিপো থেকেই বাস রাস্তায় নামাতে হবে।
পরিবহণ দফতরের একাংশ মনে করছে, নতুন এই পদ্ধতিতে চললে রাজস্ব কয়েক গুণ বাড়ানো সম্ভব হবে। বুধবার বিধানসভায় এক প্রশ্নের উত্তরে পরিবহণ মন্ত্রী জানিয়েছেন শেষ অর্থবর্ষগুলিতে লাভের মুখ দেখেছে দফতর। আয়ের পরিমাণও বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে বালুরঘাটের বিজেপি বিধায়ক অশোক লাহিড়ীর প্রশ্নের জবাবে স্নেহাশিস জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার যে তিনটি নিগম মারফত বাস চালায়, সেই নিগমগুলির একটিতেও লাভ হয়নি। পরে পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস এক প্রশ্নের উত্তরে জানিয়েছেন, তাঁর লক্ষ্য লোকসানে চলা নিগমগুলিকে মুনাফার মুখ দেখানো। তার ফলস্বরূপ নতুন পিপিপি মডেলে বাস চালানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পথে পরিবহণ দফতর।