অপেক্ষা: এনজেপি স্টেশনে ট্রেনের জন্য বসে। নিজস্ব চিত্র
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রথমে জানানো হয়েছিল, বুধবারও উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের মধ্যে যাতায়াতকারী সব ট্রেন বাতিল। কিন্তু তার পঁয়তাল্লিশ মিনিটের মধ্যে পটবদল। নতুন বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হল, অসম ও কলকাতা বা হাওড়ার মধ্যে যাতায়াতকারী ট্রেনগুলির কয়েকটি এ দিন থেকেই চালু করা হল। তবে এই ভরা পর্যটন মরসুমে দক্ষিণবঙ্গ থেকে আসা বা দক্ষিণবঙ্গে যাওয়া মূলত উত্তরবঙ্গের ট্রেন বলে যেগুলি পরিচিত, সেগুলি আপাতত বাতিলই থাকবে।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের তরফে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জানানো হয়েছে, কামরূপ, সরাইঘাটের মতো কয়েকটি ট্রেন উত্তরবঙ্গের দিক থেকে দক্ষিণবঙ্গের দিকে চালানো শুরু হয়েছে। গুয়াহাটি কলকাতা গরিবরথ, শিয়ালদহ-শিলচর কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস, শিলচর-তিরুঅনন্তপুরম এক্সপ্রেসও রয়েছে সেই তালিকায়। এত দিন কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস চলছিল কলকাতা থেকে মালদহ পর্যন্ত। গৌড় এক্সপ্রেসও চলছিল। এ বারে উত্তরবঙ্গের দক্ষিণ অংশের সঙ্গে কলকাতা সংযোগকারী কলকাতা-বালুরঘাট এক্সপ্রেসও চালানো হবে।
এখানেই প্রশ্ন উঠেছে, লাইন যখন খোলা হল, তখন শুধু অসমের ট্রেন কেন? কেন উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের মধ্যে চলাচলকারী মূল ট্রেনগুলিকেও ছাড়পত্র দেওয়া হল না? সেই তালিকায় রয়েছে দার্জিলিং মেল, পদাতিক এক্সপ্রেস, উত্তরবঙ্গ, কাঞ্চনকন্যা, এমনকি এনজেপি শতাব্দীও। কলকাতা থেকে কেউ উত্তরবঙ্গে আসতে গেলে বা উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গে যেতে গেলে মূলত এই ট্রেনগুলিতেই চাপেন যাত্রীরা। এই ভরা পর্যটন মরসুমে এই ট্রেনগুলিতে বুকিং একেবারে উপচে পড়ছিল। সেখানে এমন গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনগুলিকে এখনও বাতিল করে রাখায় কয়েকটি মহলে প্রশ্নও তৈরি হয়েছে।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক শুভানন চন্দ বলেন, ‘‘এখনও পরিস্থিতি বিচার করার কাজ চলছে। কিছু মালগাড়ি চালানো হচ্ছে। বুধবার এই ট্রেনগুলি চালিয়ে পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হবে। সফল হলে বাকিগুলিও দ্রুত চালু হবে।’’
রেল সূত্রে অবশ্য জানানো হচ্ছে, যে দু’টি স্টেশনে গোলমাল হয়েছে, হরিশ্চন্দ্রপুর ও ভালুকা, অসমের ট্রেনগুলি এই দু’টি স্টেশন হয়েই যাবে। দুই স্টেশন থেকেই জানা গিয়েছে, লুপ লাইনে ট্রেন আনা নিয়ে সমস্যা রয়েছে। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল সূত্রে বলা হয়েছে, সিগন্যালিংয়েও সমস্যা রয়েছে। বুধবার এই লাইন দিয়ে যখন ট্রেনগুলি যাবে, ম্যানুয়াল সিগন্যালিংই ব্যবহার করা হবে। প্রশ্ন উঠেছে, সেই সিগন্যালিং ব্যবস্থায় যদি কামরূপ বা সরাইঘাট এক্সপ্রেস চালানো যায়, তা হলে দার্জিলিং মেল বা পদাতিক কেন চালানো যাবে না? এর কোনও সরাসরি জবাব উত্তর-পূর্ব রেল সূত্রে মেলেনি। তবে রেলকর্তারা জানিয়েছেন, আপ ও ডাউনে মোট ৯টি ট্রেন চালানো হবে পরীক্ষামূলকভাবে।
এনজেপি-কলকাতা রুটে প্রায় ১৯ কিলোমিটার এলাকায় এখনও স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল ব্যবস্থা চালু করা যায়নি। তাই একসঙ্গে সব ট্রেন চালাতে মুশকিল হবে।