অলংঙ্করণ: শৌভিক দেবনাথ।
সবে মাত্র বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। মন্ত্রোচ্চারণ করে যুগলের বিয়ে দিয়েছেন পুরোহিত। এত ক্ষণ পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। বিপত্তি বাধল বিয়ের পর শ্বশুরমশাই যৌতুক হিসাবে জামাইয়ের হাতে দামি বাইক তুলে দিতেই। বাইক তো দিলেন, কিন্তু হেলমেট কই? জামাই অবাক! ঠিক সেই সময়েই ভিড়ের মধ্যে থেকে বেরিয়ে এলেন এক অতিথি। সটান শ্বশুরমশাইকে প্রশ্ন করলেন, ‘‘আপনি কি মেয়ে-জামাইয়ের মৃত্যু চান?’’
প্রশ্ন শুনেই ঢোক গিললেন শ্বশুরমশাই! কাচুমাচু মুখে জানতে চাইলেন, ‘‘এ কথা কেন বলছেন দাদা আপনি?’’ এর পরেই নিজের পরিচয় প্রকাশ করলেন সেই অতিথি। জানালেন, তিনি দুর্গাপুর সাব ট্র্যাফিক গার্ডের ভারপ্রাপ্ত অফিসার বিনয় লায়েক। শ্বশুরমশাইকে এ-ও বললেন, ‘‘আপনার মেয়ে-জামাইয়ের জন্য হেলমেটের ব্যবস্থা আমিই করছি।’’
এ কোনও বাস্তবে ঘটা ঘটনা নয়। পথনাটিকার গল্প। এই পথনাটিকার মধ্যে দিয়েই পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরের রাস্তায় সচেতনতা প্রচার চালাল ট্র্যাফিক পুলিশ। সেখানে উপস্থিত সাধারণ মানুষকে বিনয় বোঝালেন— হেলমেট না পরলে কী কী হতে পারে, কত টাকা জরিমানা হতে পারে ইত্যাদি।
বুধবার দুর্গাপুর সাব ট্র্যাফিক গার্ডের উদ্যোগেই দুর্গাপুরের বেনাচিতি পাঁচমাথা মোড়ে এই অভিনব প্রচার চলে। বর ও কনে রূপে যাঁদের দেখা গিয়েছে, তাঁরা দুর্গাপুর ট্র্যাফিক গার্ডের দুই সিভিক ভলান্টিয়ার গঙ্গেস গোপ এবং রাধা বল্লভ মুখোপাধ্যায়। বিনয় বলেন, ‘‘সামনেই রথযাত্রা। বহু মানুষ হেলমেট ছাড়া বাইকে চালিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন। অনেকের মৃত্যু হয়। এই বর্ষার সময় তো আরও বেশি করে এই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। আমরা নানা ভাবে মানুষকে সচেতন করি। মেয়ে-জামাইকে যদি যৌতুক দিতেই হয়, তা হলে বাইকের সঙ্গে দুটো হেলমেটও দিন।’’