সাতশোর ঘর দু’হাজার, ক্ষোভ পর্যটকদের

পর্যটকদের অভিযোগ নিয়ে দিঘা পুলিশের দাবি, প্রতারিত পর্যটক বা কেউ এই নিয়ে থানায় কোনও অভিযোগ জানাননি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দিঘা শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০১৯ ০০:০৬
Share:

—ফাইল চিত্র।

পর্যটকরা অতিথি। তাই তাঁদের কাছ থেকে সুযোগ বুঝে অতিরিক্ত হোটেল ভাড়া নেওয়া যাবে না।

Advertisement

দিঘায় প্রশাসনিক বৈঠকে এসে, হোটেল মালিকদের এভাবেই সতর্ক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর সেই নির্দেশ কার্যত ভেসে গেল গত এত সপ্তাহ ধরে পর্যটকদের জোয়ারে। স্কুলগুলিতে গরমের ছুটির শেষ পর্যায়, তার উপর পিঠোপিঠি ইদ ও জামাইষষ্ঠী, সঙ্গে দোসর ছিল রবিবারের ছুটি। ফলে লক্ষাধিক পর্যটকের সমাগমে সরগরম সৈকত শহর। আর তাতেই পৌষ মাস হোটেল ব্যবসায়ীদের। সুযোগ বুঝে কিছু অসাধু হোটেল ব্যবসায়ী তিন-চারগুণ হোটেল ভাড়া নিচ্ছেন বলে পর্যটকদের অভিযোগ। দিঘার বহু হোটেলে এখনও ঘরের সংখ্যা, বিবরণ ও তার ভাড়া সংক্রান্ত সাইনবোর্ড নেই। পর্যটকদের অভিযোগ, অনেক হোটেলে গিয়ে দেখা যায় ঘর রয়েছে। কিন্তু তা ভাড়া নিতে গেলে হোটেল কর্তৃপক্ষ অজুহাত দেখান, অনলাইন সংস্থার সঙ্গে হোটেলের ঘর বুকিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। তাই ওই সব ঘর বুক হয়ে গিয়েছে। একটা অসাধু চক্র ঘরের এমন কৃত্রিম অভাব তৈরি করছে বলে পর্যটকদের অভিযোগ। তাঁদের কাছে কয়েক গুণ বেশি ভাড়া নিয়ে, ওই অসাধু চক্র ঘরের ব্যবস্থা করে দেওয়ার কারবার চালাচ্ছে। অসাধু চক্রে শিকার এমনই এক পর্যটক জানান, হোটেল থেকে ঘর না পেয়ে ফিরে আসার পর ওই অসাধু চক্রের লোকেরা তাঁকে বেশি ভাড়ার বিনিময়ে ওই হোটেলেই ঘরের ব্যবস্থা করে দেয়। এই চক্রে হোটেল কর্তৃপক্ষও শামিল থাকেন বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ।

নদিয়ার কৃষ্ণনগর থেকে সপরিবার দিঘা আসা এমনই এক পর্যঠক অভিজিৎ রায় বলেন, ‘‘ফণীর কারণে পুরীতে এখন অধিকাংশ হোটেলের পরিষেবা ঠিক হয়নি। তাই দিঘায় এসেছিলাম। কিন্তু আগে হোটেলে যে সব ঘর ৭০০-৮০০ টাকায় পাওয়া যেত। ইদ- জামাইষষ্ঠীতে ভিড়ের সুযোগ নিয়ে সেই ঘরের ভাড়াই ২০০০ টাকা ছুঁয়েছে। সাধারণ সময়ে ১৫০০ টাকার এসি রুম এখন ৪ হাজার টাকা। এভাবে চললে দিঘার সুনাম নষ্ট হবে। মার খাবে এখানকার পর্যটন শিল্প।’’

Advertisement

দিঘা শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী বলেন, “দিঘার সব হোটেল নয়। তবে কিছু হোটেল এভাবে পর্যটকদের থেকে বেশি ভাড়া নিচ্ছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা খোঁজ নিচ্ছি। প্রয়োজনে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

পর্যটকদের অভিযোগ নিয়ে দিঘা পুলিশের দাবি, প্রতারিত পর্যটক বা কেউ এই নিয়ে থানায় কোনও অভিযোগ জানাননি। তা ছাড়া অনেক পর্যটকও চড়া দাম দিয়ে হোটেলে ঘর নেন। এমনকী তার জন্য হোটেলের বিলও নেন না। ফলে কোনও প্রমাণ না থাকায় পদক্ষেপ করা যায় না। তবে অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট হোটেল মালিকের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলাও করা যেতে পারে।

দিঘা শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের এক আধিকারিক জানান, ইতিপূর্বে দিঘার বিভিন্ন হোটেল মালিকদের সংগঠনকে নিয়ে বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে বেশি ভাড়া নেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁদের সতর্ক করা হয়েছিল। কিন্তু ফের এমন অভিযোগ ওঠায় শীঘ্রই বৈঠক ডেকে কড়া হুঁশিয়ারি দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।’’

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement