গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
শনিবার বৃষ্টি কিছুটা কমেছে দক্ষিণবঙ্গে। কিন্তু ডিভিসি জল ছাড়ায় নতুন করে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। মাইথন জলাধার থেকে ১০,০০০ কিউসেক এবং পাঞ্চেত জলাধার থেকে ৮০,০০০ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। দুই জলাধার থেকে মোট ৯০,০০০ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে শনিবার রাত ৮টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত। ডিভিসির জল ছাড়া নিয়ে আগেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ নিয়ে শনিবার ডিভিসির দিকে আবারও আঙুল তুলেছে নবান্ন।
মাইথন, পাঞ্চেত জলাধার থেকে জল ছাড়ছে ডিভিসি, রাজ্যে প্রভাব পড়বে কতটা?
শনিবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, এই পরিস্থিতিতে ডিভিসি থেকে আরও এক লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হবে, যা রাজ্যবাসীর জন্য বিপজ্জনক বলেই মনে করছে রাজ্য সরকার। তিনি এ-ও দাবি করেছেন, রাজ্য সরকারের সঙ্গে এই জল ছাড়ার বিষয়ে কোনও আলোচনা করা হয়নি। আলাপন জানিয়েছেন, বিভিন্ন জেলায় ‘জল-যন্ত্রণা’র দিকে ২৪ ঘণ্টা নজর রাখছেন মুখ্যমন্ত্রী। জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারদের সঙ্গে কথা বলছেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যবাসীকে আতঙ্কিত না-হয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে নবান্ন। চার জেলাকে সতর্কও করা হয়েছে। পরিস্থিতি আজ কেমন থাকে, সে দিকে নজর থাকবে।
বিপর্যস্ত বিভিন্ন জেলার ‘জল-যন্ত্রণা’র পরিস্থিতি
কলকাতা-সহ দক্ষিণের জেলাগুলিতে শনিতে বৃষ্টির দাপট কিছুটা কমেছে বটে, তবে একেবারে নিস্তার মেলেনি। শহরতলির একাধিক জায়গা জলমগ্ন। রাস্তায় জল জমে বিঘ্নিত হয়েছে স্বাভাবিক যান চলাচল। বিপর্যস্ত অবস্থা বীরভূম, হুগলি-সহ দক্ষিণের অনেক জেলাতেই। জল ঢুকেছে চাষের জমিতে। অন্য দিকে, শনিবার থেকে উত্তরের জেলাগুলিতে বৃষ্টি বেড়েছে। তিস্তায় জারি হয়েছে হলুদ সতর্কতা। আজ নজর থাকবে এই খবরে।
মৃত্যুপুরী ওয়েনাড়ে প্রাণের সন্ধানে চলছে উদ্ধার কাজ
বিপর্যয়ের পর চার দিন পেরিয়ে গিয়েছে। প্রাণের সন্ধানে পঞ্চম দিনেও উদ্ধারকাজ জারি রইল ধস-বিধ্বস্ত ওয়েনাড়ে। মৃতের সংখ্যা বাড়তে বাড়তে তিনশো ছাড়িয়ে গিয়েছে। সংবাদ সংস্থা এএনআইতে প্রকাশ, সরকারি হিসাবে ৩০৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। অসমর্থিত সূত্রে, মৃতের সংখ্যা আরও বেশি, অন্তত ৩৪০। নিখোঁজ এখনও শতাধিক মানুষ। কাদা-মাটির স্তূপের মধ্যে এখনও কি চাপা পড়ে রয়েছে প্রাণের স্পন্দন? কী ভাবে এগোবে উদ্ধারকাজ? সত্যিই কি জীবিত আর কাউকে উদ্ধার করা যাবে? ওয়েনাড়ের সামগ্রিক পরিস্থিতির দিকে নজর থাকবে আজ।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
কেমন আছে উত্তরাখণ্ড, হিমাচল? স্বাভাবিক কবে?
গত বুধবার রাত থেকে মেঘভাঙা বৃষ্টি আর ধসে বিপর্যস্ত হিমাচলপ্রদেশের শিমলা, মান্ডি এবং কুলু জেলা। ধসের কবলে ভেঙেছে বহু ঘরবাড়ি, স্কুল, হাসপাতাল। ইতিমধ্যেই রাজ্যের ওই তিন জেলায় ছ’জনের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ ৫৩ জন। মেঘভাঙা বৃষ্টি আর ধসে বিপর্যস্ত উত্তরাখণ্ডও। সেখানে এখনও পর্যন্ত ২৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। এই দুই রাজ্য-সহ সমগ্র উত্তর ভারতের আবহাওয়া পরিস্থিতির দিকে নজর থাকবে।
উত্তরে ভারী, দক্ষিণে মাঝারি, রাজ্যে কোথায় কেমন বৃষ্টি?
আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, গাঙ্গেয় বঙ্গের উপরে যে ঘূর্ণাবর্তটি অবস্থান করছিল, তা থেকে আগেই নিম্নচাপ অঞ্চল তৈরি হয়। তা এ বার ঘনীভূত হয়ে গিয়েছে নিম্নচাপে। এই মুহূর্তে ঝাড়খণ্ডের উপর তা অবস্থান করছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় নিম্নচাপ আরও পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিম দিকে সরবে। এর প্রভাবে বিক্ষিপ্ত ভাবে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হবে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে। উত্তরবঙ্গে আগামী কয়েক দিন ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। বৃষ্টির কারণে জলাধারগুলি থেকে নতুন করে জল ছাড়া হলে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত বানভাসি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের আবহাওয়া কেমন থাকে, সে দিকে নজর থাকবে।