—প্রতীকী ছবি।
ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা বা বিএনএসএস-এর ১০৫ এবং ১৮৫ ধারা অনুযায়ী কোনও অপরাধের তদন্তে ঘটনাস্থল থেকে কিছু বাজেয়াপ্ত করতে হলে, তার পুরোটাই অডিয়ো-ভিডিয়ো রেকর্ডিং করে পরবর্তী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে আদালতে জমা দিতে হবে। এই প্রক্রিয়া নিয়েই পুলিশকর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছিল। কোন ক্যামেরা ব্যবহার করা হবে, রেকর্ডিং করা ফুটেজ কোথায় রাখা হবে, কত ক্ষণ রেকর্ডিং করতে হবে বা আদালতে কী ভাবে তা জমা দেওয়া হবে তা নিয়ে স্পষ্ট কোনও নির্দেশিকা না থাকায় বিভ্রান্তিতে পড়েছিলেন পুলিশের নিচুতলার কর্মীরা। পুলিশকর্মীদের ওই বিভ্রান্তি দূর করতে রাজ্য পুলিশের তরফে আদর্শ কর্তব্যবিধি চালু হল।
বাজেয়াপ্ত করার সময় থেকে আদালতে জমা দেওয়া পর্যন্ত পুলিশকর্মীদের কী কী পদ্ধতি মেনে চলতে হবে তা বলা হয়েছে ২৫ দফা ওই আদর্শ কর্তব্যবিধিতে। রাজ্য পুলিশের এক কর্তা জানান, স্বামী বিবেকানন্দ রাজ্য পুলিশ অ্যাকাডেমির আইজি ওই আর্দশ কর্তব্যবিধি তৈরি করেন। তার পর তা পাঠিয়ে দেওয়া হয় ভবানী ভবনে। সেখান থেকেই সোমবার সব জেলা এবং পুলিশ কমিশনারেটে ওই আদর্শ কর্তব্যবিধি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই আদর্শ কর্তব্যবিধিতে বলা হয়েছে, যাবতীয় প্রক্রিয়া ঠিকঠাক মানা হচ্ছে কি না তা দেখার জন্য প্রতি থানায় এক জন পুলিশকর্মীকে মনোনীত করতে হবে।
পুলিশ জানিয়েছে, বাজেয়াপ্ত করার সময়ে ছবি রেকর্ডিং করার জন্য ক্যামেরা, ট্যাবলেট প্রভৃতি ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। যাতে ‘রিমুভাল মেমরি কার্ড’ থাকবে। একই সঙ্গে পুলিশকর্মীরা মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারেন, তবে তাতে নতুন মেমরি কার্ড থাকতে হবে। এই জন্য থানায় যথেষ্ট সংখ্যক মেমরি কার্ড রাখতে বলা হয়েছে। দীর্ঘ সময় রেকর্ডিং করতে হলে একাধিক নতুন মেমরি কার্ড ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে। কোনও রকম বাধা ছাড়াই টানা রেকর্ডিং করতে হবে, সেটি যত ক্ষণের হোক না কেন। এক পুলিশ আধিকারিক জানান, রেকর্ডিং হার্ড ডিস্ক বা পেন ড্রাইভে রাখা যেতে পারে। যা হবে মাস্টার নেগেটিভ। পরবর্তী সময়ে তা থেকেই কপি করা যেতে পারে। বাজেয়াপ্তের তালিকা আদালতকে জানাতে হবে নির্দিষ্ট ফর্মে। একই সঙ্গে ভিডিয়ো রেকর্ডিংয়ের কপিও আদালতে পাঠাতে হবে।
দশ দিনের বেশি সময় হয়ে গিয়েছে গোটা দেশের সঙ্গে এ রাজ্যে বাতিল হয়ে গিয়েছে ১৮৬০ সালে তৈরি ‘ইন্ডিয়ান পেনাল কোড’ (ভারতীয় দণ্ডবিধি), ১৮৯৮ সালের ‘ক্রিমিনাল প্রসিডিয়োর অ্যাক্ট’ (ফৌজদারি দণ্ডবিধি) এবং ১৮৭২ সালের ‘ইন্ডিয়ান এভিডেন্স অ্যাক্ট’ (ভারতীয় সাক্ষ্য আইন)। আর তাদের জায়গা নিয়েছে ‘ভারতীয় ন্যায় সংহিতা’, ‘ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা’ এবং ‘ভারতীয় সাক্ষ্য অধিনিয়ম’ আইন।