নবান্ন। — ফাইল চিত্র।
রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের পদোন্নতির বিষয়টি ঠিক করতে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করল নবান্ন। সম্প্রতি কমিটি গঠনের কথা উল্লেখ করে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। মোট ১০ জন প্রতিনিধি থাকবেন এই কমিটিতে। কমিটির চেয়ারপার্সন করা হয়েছে রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকে। এ ছাড়াও কমিটির সহ-সভাপতি হয়েছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। দু’জন মন্ত্রী ছাড়া বাকি যাঁরা রয়েছেন তারা সকলেই রাজ্য সরকারের উচ্চপদস্থ আধিকারিক। কমিটিতে রয়েছেন কর্মী বিনিয়োগ ও প্রশাসনিক, অর্থ এবং পূর্ত দফতরের প্রধান সচিবেরা। সঙ্গে সরকারি কর্মচারী ইউনিয়নের তিন জন প্রতিনিধিকেও রাখা হয়েছে। এই কমিটি বৈঠক করে আগামী ছয় মাসের মধ্যে পদোন্নতি সংক্রান্ত বিষয়ে বেশ কিছু সুপারিশ করবে নবান্নে। তার ভিত্তিতেই সরকারি কর্মচারীদের পদোন্নতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য সরকার। তবে রাজ্য সরকারের তরফে এই কমিটিকে পরামর্শ দেওয়ার অধিকার দেওয়া হয়েছে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে।
এই কমিটি গঠন নিয়ে প্রশাসনিক মহল থেকে জানা গিয়েছে, রাজ্য সরকারের কর্মচারীরা তিন স্তরে কাজ করেন। সচিবালয়, ডিরেক্টরেট এবং আঞ্চলিক অফিসে কর্মরত থাকেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কর্মচারীরা। এ ক্ষেত্রে যাঁরা সচিবালয় কাজ করেন তাঁদের পদোন্নতির সুযোগ সবচেয়ে বেশি। অথচ রাজ্য সরকারের প্রাণভোমরা হিসাবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কাজ করেন আঞ্চলিক বিভাগের কর্মীরা। দীর্ঘ দিন ধরেই এই ক্ষোভ বিভিন্ন কর্মী ইউনিয়ন মারফত রাজ্য সরকারের কাছে জানিয়েছিলেন সরকারি কর্মচারীরা। তাই এবার সরকারি কর্মচারীদের পদোন্নতির বিষয়ে নীতি ঠিক করতে পদক্ষেপ করতে চলেছে নবান্ন। উল্লেখ্য, এই কমিটি মূলত ৭টি বিষয় পর্যালোচনা করবে। কেন্দ্রীয় সরকারের সচিবালয় এবং অন্য রাজ্যের সচিবালয়ের কর্মীদের মতোই, বাংলার সচিবালয়ের কর্মীদের পদোন্নতির সুযোগ দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করবে কমিটি। ডিরেক্টরেট এবং আঞ্চলিক স্তরের সরকারি অফিসের কর্মীদের পদোন্নতি সংক্রান্ত বিষয়গুলিও পর্যালোচনা করার দায়িত্ব থাকছে এই কমিটির কাঁধেই।
আপাতত নবান্নের এই ঘোষণার ফলে খুশি রাজ্য সরকারের কর্মচারীরা। তাঁদের একাংশ জানিয়েছেন, কেবলমাত্র সচিবালয়ে চাকরি করলেই পদোন্নতি সুযোগ মিলবে, আর ডিরেক্টরেটে কাজ করলে পদোন্নতির কোনও রকম সুযোগ-সুবিধা মিলবে না। এই নিয়ম বিমাতৃসুলভ। দেরিতে হলেও সরকার পক্ষ যে এই বিষয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ নিয়েছেন তাতেই খুশি সরকারি কর্মচারী ইউনিয়নের একাংশ।