দিলীপ ঘোষ।
এ বার ‘দুয়ারে দুয়ারে’ বিজেপি-ও।
সরকারি কর্মসূচি ‘দুয়ারে সরকার’কে হাতিয়ার করে যখন দরজায় দরজায় পৌঁছনোর চেষ্টায় রাজ্যের শাসকদল, তখন পাল্টা তৎপরতা বিরোধী শিবিরেও। ‘আর নয় অন্যায়’ কর্মসূচির দ্বিতীয় পর্যায় শুরুর কথা ঘোষণা করে রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানালেন, প্রচারপত্র হাতে নিয়ে ১ কোটিরও বেশি নাগরিকের দরজায় পৌঁছবেন তাঁরাও।
‘আর নয় অন্যায়’ এই স্লোগানকে হাতিয়ার করে এর আগেও তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে প্রচারে নেমেছেন বিজেপি নেতারা। ফের ওই একই স্লোগানকে সামনে রেখে বিরোধিতার সুর আরও তীব্র করতে চাইছে বিজেপি। দিলীপ জানিয়েছেন, ‘আর নয় অন্যায়’ স্লোগানকে সামনে রেখে তৃণমূলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে মানুষকে জাগ্রত করার জন্য আগামী ৫ তারিখ থেকে সমস্ত বুথে প্রচার অভিযান শুরু করবেন বিজেপিকর্মীরা। ১ কোটিরও বেশি বাড়িতে লিফলেট বিতরণ করা হবে। দিলীপের কথায়, ‘‘তৃণমূলের দুর্নীতি বিরুদ্ধে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে লিফলেট নিয়ে পৌঁছে যাব। তৃণমূলের বিরুদ্ধে মানুষকে জাগ্রত করার চেষ্টা করব।’’
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্যবিমা নিয়ে তৃণমূল-বিজেপি তরজা, লকেটের তোপ, পাল্টা জবাব দিলীপের
বিধানসভা ভোট মাত্র কয়েক মাস দূরে। এই রকম একটা সময়ে এসেই ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচির সূচনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচি চার দফায় প্রায় দু’মাস ধরে চলবে। পঞ্চায়েত ও পুরসভা এলাকায় ধাপে ধাপে ২০ হাজার শিবির খুলে মানুষের অভাব অভিযোগ শুনবেন প্রশাসনের আধিকারিকরা। প্রথম দিনেই ওই কর্মসূচিতে ব্যাপক সাড়া মিলেছে। শিবিরগুলিতে ২ লক্ষেরও বেশি নাম নথিভুক্ত হয়েছে।
‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচিকে ঘিরে এই সাড়া কি চাপে ফেলছে বিজেপি-কে? তার জেরেই কি পাল্টা ‘দুয়ারে দুয়ারে’ পৌঁছনোর তোড়জোড়? এই প্রশ্ন তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক শিবিরে। তবে বিজেপি নেতারা সে তত্ত্ব নস্যাৎ করেছেন।
বুধবারের সাংবাদিক সম্মেলনে দিলীপের সঙ্গে ছিলেন বিজেপি-র রাজ্যসভা সাংসদ স্বপন দাশগুপ্তও। তিনি বলেন, ‘‘গ্রামবাংলায় একটি স্লোগান সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় হয়েছে। তা হল ‘চাল চোর সরকার’। লকডাউনের সময় কেন্দ্র যে চাল পাঠিয়েছিল তাতেও দুর্নীতি করেছে তৃণমূল। ভাল চাল খোলা বাজারে বিক্রি করে, পচা চাল বিলি করা হয়েছে।’’
আরও পড়ুন: বেআইনি সুদের কারবারেই কি খুন রায়দিঘির বৃদ্ধ?
আমপানের পরে ত্রাণ ও ক্ষতিপূরণ বণ্টনে দুর্নীতি হয়েছে, এই অভিযোগের ভিত্তিতে জনস্বার্থ মামলাও হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। মঙ্গলবার হাইকোর্টের রায় মামলাকারীদের পক্ষেই গিয়েছে। ত্রাণ ও ক্ষতিপূরণ বণ্টনে দুর্নীতি হয়েছে কি না, তা নিয়ে হাইকোর্ট তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। বুধবার দিলীপ অভিযোগ করেছেন, শুধু আমপান নয়, ২০০৯ সালে হওয়া ঘূর্ণিঝড় আয়লার পরেও বিপুল দুর্নীতি হয়েছে। ওই দুর্নীতির বিরুদ্ধেও তদন্তের দাবি তুলেছেন তিনি। বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি বলেছেন, ‘‘আয়লার ক্ষতিপূরণ বাবদ ২০১০ সালে কেন্দ্র যে ৫ হাজার কোটি টাকা দিয়েছিল, ২০১১ সালে রাজ্যে ক্ষমতায় এসে সেই টাকারও দুর্নীতি করেছে তৃণমূল। তাই আমরা ওই টাকারও তদন্তের দাবি করছি।’’