TMC

‘স্থানীয় টোটকা’ লোকসভা ভোটে কৌশল তৃণমূলের

উত্তরবঙ্গের সামগ্রিক অনুন্নয়নের অভিযোগ নতুন নয়। তার সঙ্গে সীমান্ত লাগোয়া জেলাগুলিতে সম্প্রদায়গত বঞ্চনার প্রচারে তৃণমূলকে অনেকটাই কোনঠাসা করে ফেলেছিল বিজেপি।

Advertisement

রবিশঙ্কর দত্ত

শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৬:৪০
Share:

—প্রতীকী ছবি।

সাগরদিঘির উপনির্বাচন বিরোধীদের ‘মডেল’ হিসেবে কাঁটা হয়েই রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের সামনে। এই অবস্থায় ধূপগুড়ির নির্বাচনী ফলকে ‘ঢাল’ করে বিরোধীদের মোকাবিলায় ‘কাজের কথা’য় জোর দিতে চাইছেন শাসক দলের নেতৃত্ব। সম্প্রদায় বা এলাকাভিত্তিক জনগোষ্ঠীর টানাপড়েন এড়িয়ে এই কৌশলে আসন্ন লোকসভা ভোট পেরোতে চান তৃণমূল নেতৃত্ব।

Advertisement

হাতে থাকা সাগরদিঘি আসনের উপনির্বাচনের হার চূড়ান্ত চাপে ফেলে দিয়েছিল তৃণমূলকে। শুধু তা-ই নয়, দলের ভোটব্যাঙ্ক হিসেবে পরিচিত সংখ্যালঘুদের অবস্থান বদলের ইঙ্গিতেও উদ্বেগ বেড়েছিল তৃণমূলের। লোকসভা ভোটের আগে ধূপগুড়ির জয়ে সেই চাপমুক্তির পথ দেখছে শাসক দল। এখানে হাতছাড়া চা-বাগান এলাকায় রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক তৎপরতা, জলের চাহিদা মেটাতে খাল তৈরি এবং মহকুমা তৈরির সিদ্ধান্তে বাজিমাত হওয়ার পরে সেই ভাবেই লোকসভা ভোটকে সামনে রেখে রাজ্যব্যাপী দলের রণকৌশল সাজাতে চাইছে তৃণমূল। দল ও প্রশাসনের সমন্বয়ের দায়িত্বে থাকা এক নেতার কথায়, ‘‘সরাসরি স্থানীয় সমস্যার সমাধান করা গেলে ফল পাওয়া যায়। তাতে বাকি অনেক বিষয়ই গৌন হয়ে যায়।’’ তবে বিধানসভার একটি উপনির্বাচনে কাজে এলেও সামগ্রিক ভাবে লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল একই কৌশল নিয়ে সফল হতে পারে কি না, তা এখনও দলের অন্দরে আলোচনাসাপেক্ষ।

উত্তরবঙ্গের সামগ্রিক অনুন্নয়নের অভিযোগ নতুন নয়। তার সঙ্গে সীমান্ত লাগোয়া জেলাগুলিতে সম্প্রদায়গত বঞ্চনার প্রচারে তৃণমূলকে অনেকটাই কোনঠাসা করে ফেলেছিল বিজেপি। ২০১৯-এর লোকসভা ভোট ও পরে বিধানসভা ভোটেও উত্তরবঙ্গের বহু আসন গিয়েছিল বিজেপির দখলে। এই অবস্থায় রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ পেতে স্থানীয় কাজে জোর দেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। চা শ্রমিকদের জমির পাট্টা আর পারিশ্রমিক বৃদ্ধির দাবিতে কয়েক দফার আন্দোলন চা-বাগান অঞ্চলে খানিকটা এগিয়ে দিয়েছে তৃণমূলকে। ধূপগুড়ি বিধানসভার বানারহাটের চা-বাগানের তিনটি অঞ্চলে গত বিধানসভা ভোটে ৫২৭৩ ভোটে পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। বিজেপির শক্তঘাঁটি বাগানে এই উপনির্বাচনে পিছিয়ে থাকলেও সেই ব্যবধান দেড় হাজারে কমিয়ে আনতে পেরেছে তারা। বীরুবাগ অঞ্চলে দলের ‘পরামর্শ’ মতো জলের ব্যবস্থা করতে সেচ দফতর পড়িমরি যে খাল কেটেছিল, তিনটি অঞ্চলে তারও ফল পেয়েছে তৃণমূল। এর সঙ্গেই ভোটের মুখে ধূপগুড়িকে মহকুমা করার সিদ্ধান্ত ঘোষণায় পিছিয়ে থাকা শহরাঞ্চলে বিজেপির সঙ্গে ব্যবধান প্রায় তিন হাজার কমিয়ে এনেছে তৃণমূল। তাতে বিজেপির প্রভাবের মধ্যেও আসন বার করতে সুবিধা হয়েছে শাসক দলের।

Advertisement

তৃণমূলের এই টোটকায় চমক দেওয়ার কৌশল আছে। বিশেষত, একাধিক জেলা সফরে স্থানীয় মানুষের দাবি-দাওয়া পূরণে অভিষেকের পদক্ষেপে তা স্পষ্ট। কিন্তু একটি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে কাজে এলেও তা কি সামগ্রিক ভাবে লোকসভা বা বিধানসভা ভোটে ‘মডেল’ করা সম্ভব? দলের ওই শীর্ষ নেতার কথায়, ‘‘বিজেপির তৈরি লড়াইয়ের পথ এড়াতে এই পরিকল্পনা কাজে আসে। দেখতে হবে, লোকসভা কেন্দ্র ধরে এ ভাবে এগোনো যায় কি না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement