(বাঁ দিকে) তৃণমূলের চিকিৎসক-কাউন্সিলর সুমিতকুমার সাহা, রামপুরহাটের চিকিৎসক দেবব্রত রায়ের প্রেসক্রিপশন। —নিজস্ব চিত্র।
পথ দেখিয়েছিলেন উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের চিকিৎসক। সেই পথে হেঁটে প্রেসক্রিপশনে ওষুধ ও পরামর্শ লেখার পাশাপাশি ‘বিচার চাই’ স্ট্যাম্প মারছেন উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত পুরসভার তৃণমূলের এক চিকিৎসক-কাউন্সিলরও। আরজি করে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ঘটনার প্রতিবাদের এই ধরন ছড়িয়ে পড়েছে অন্যান্য জেলাতেও। প্রতিবাদের এই মাধ্যম বেছে নিয়েছেন বীরভূমের রামপুরহাটের এক চিকিৎসকও।
শুক্রবারই প্রকাশ্যে এসেছিল রায়গঞ্জের চিকিৎসক দেবব্রত রায়ের প্রেসক্রিপশনের একটি ছবি। সেই প্রেসক্রিপশনে লাল রঙের স্ট্যাম্পে গোল করে লেখা, ‘আরজি কর: বিচার চাই। অপরাধ চক্রের বিনাশ চাই।’ মাঝখানে ইংরেজিতে লেখা, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস।’ সেই ছবি ইতিমধ্যেই সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। শনিবার দেখা গেল, বারাসতের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা দন্তচিকিৎসক সুমিতও একই স্ট্যাম্প ব্যবহার করছেন প্রেসক্রিপশনে। তিনি বলেন, ‘‘আরজি করের নারকীয় ঘটনায় সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষ প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন। যার ফলে প্রতিবাদের ভাষা বিভিন্ন আঙ্গিকে বিভিন্ন রকম হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু মনে রাখতে হবে, এক চিকিৎসকের নৈতিক কর্তব্য চিকিৎসা পরিষেবা জারি রাখা। সরকারি হাসপাতালে যে প্রতিবাদ হচ্ছে, সেখানেও যেন পরিষেবা চালু হয়। পরিষেবা বন্ধ রেখে প্রতিবাদ হতে পারে না। সব চিকিৎসকদের কাছে আমার আর্জি, তাঁরা যেন পরিষেবা দিয়ে যান।’’
তৃণমূলের চিকিৎসক-কাউন্সিলরের ‘প্রতিবাদের ভাষা’ প্রসঙ্গে দলীয় মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বিচার আমরাও চাইছি। ডাক্তারবাবুরাও প্রতিবাদ করতেই পারেন। তাঁদের প্রাইভেট প্র্যাকটিসে স্ট্যাম্পও দিতে পারেন। তাতে কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু সরকারি জায়গায় তাঁরা যেন কাজটা শুরু করেন। আন্দোলনে থাকুন, কিন্তু কর্মবিরতিতে নয়। একটা অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে রোগীদের প্রাণহানি না নয়।’’
একই ভাবে আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদ জানাচ্ছেন রামপুরহাটের চিকিৎসক দেবব্রত দাস। তিনি বলেন, ‘‘প্রতিবাদের হাতিয়ার আমার কাছে প্রেসক্রিপশন। যে ঘটনা ঘটেছে, সেটার নিন্দা করার ভাষা নেই। সবচেয়ে বড় কথা হল, সিবিআই সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে জানাচ্ছে যে, পুলিশ নাকি তথ্যপ্রমাণ নষ্ট করে ফেলেছে। এটা বড় অভিযোগ। এতে আমরা বিচলিত। চিকিৎসকদের যে সব হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপ রয়েছে, সর্বত্র এই প্রেসক্রিপশনের ছবি পাঠিয়ে দিয়েছি।’’