ক্লাসে ঢুকে শিক্ষিকাকে ‘কুকথা’, অভিযুক্ত টিএমসিপি ছাত্রনেতা

এর আগেও কলেজের শিক্ষকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে টিএমসিপি সদস্যদের বিরুদ্ধে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৯ ০৩:৫০
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

ছাত্র ইউনিয়নের নেতা-কর্মী হিসেবে বহিরাগতেরা দাদাগিরি চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ ওঠায় সান্ধ্য সিটি কলেজের ইউনিয়ন ঘরে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন কলেজ-কর্তৃপক্ষ। কিন্তু খাস কলকাতাতেই শাসক দলের ছাত্রনেতাদের দাপট যে আদৌ কমেনি, বুধবার তার প্রমাণ মিলল বিদ্যাসাগর কলেজে। এ দিন সেখানে ক্লাস চলাকালীন শ্রেণিকক্ষে ঢুকে শিক্ষিকার সঙ্গে অভব্য আচরণের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) এক নেতার বিরুদ্ধে।

Advertisement

ওই কলেজের ইতিহাসের শিক্ষিকা ঈশিতা চক্রবর্তী জানান, এ দিন তিনি প্রথম বর্ষের ক্লাস নিচ্ছিলেন। কয়েক জন পড়ুয়া দেরিতে ঢোকেন। শিক্ষিকা জানান, দেরিতে আসায় তাঁদের ক্লাস করতে দেবেন না তিনি। তবে তাঁদের এ দিনের হাজিরা নথিভুক্ত করে দেবেন। তার পরেই সদলবল হাজির হন কলেজের টিএমসিপি নেতা শানু মাকাল। ঈশিতাদেবীর অভিযোগ, পরে আসা পড়ুয়াদের কেন ঢুকতে দেওয়া হয়নি, সেই প্রশ্ন তুলে অশ্রাব্য ভাষায় ও ভঙ্গিতে শানু তাঁকে শাসাতে থাকেন। ঈশিতাদেবী অধ্যক্ষ গৌতম কুণ্ডুর কাছে গেলে তাঁর পিছনে পিছনে যান সদলবল শানুও। শিক্ষকদের নিয়ে বৈঠক করছিলেন অধ্যক্ষ। ওই ছাত্রনেতা উপস্থিত শিক্ষকদের সঙ্গেও উদ্ধত আচরণ করায় শিক্ষকেরা প্রতিবাদ করেন। অধ্যক্ষ কোনও মতে তাঁদের ঘর থেকে বার করে দেন।

এর আগেও কলেজের শিক্ষকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে টিএমসিপি সদস্যদের বিরুদ্ধে। ঈশিতাদেবী বলেন, ‘‘আমরা আর পেরে উঠছি না। শিক্ষকতা করতে এসে এই অপমান কি আমাদের প্রাপ্য?’’ এ দিনের ঘটনা সম্পর্কে বক্তব্য জানতে বারবার চেষ্টা করে কলেজের অধ্যক্ষকে ফোনে পাওয়া যয়নি। মেসেজেরও দেননি তিনি।

Advertisement

টিএমসিপির রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য জানান, ওই কলেজের ছাত্র সংসদের সদস্যেরা তাঁকে বলেছেন, নিয়মিত ক্লাস না-হওয়ায় শানু বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে ওই শিক্ষিকার ক্লাসে গিয়েছিলেন। পরে তিনি অধ্যক্ষের কাছেও যান। এর বাইরে কিছু হয়নি।

প্রশ্ন উঠছে, দু’বছর তো ছাত্র সংসদের নির্বাচনই হয়নি। তা হলে কিসের ছাত্র সংসদ? তাদের খবরদারি করতেই বা বলছে কে? বস্তুত, বহিরাগত ছাত্রনেতাদের দাদাগিরি ঠেকাতেই অদূরে সান্ধ্য সিটি কলেজের ইউনিয়ন ঘর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

বিদ্যাসাগর কলেজের টিচার্স কাউন্সিলের সম্পাদিকা সোহিনী ঘোষ নিয়মিত ক্লাস না-হওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘‘ওই টিএমসিপি নেতা কলেজের নিয়মিত ছাত্র নন। ও ক্লাসে ঢুকবে কেন?’’ এই নিয়ে তাঁরা আন্দোলনে নামবেন বলে জানান সোহিনীদেবী। পশ্চিমবঙ্গ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির (ওয়েবকুটা) সাধারণ সম্পাদক কেশব ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এই নৈরাজ্য দমন না-করলে শিক্ষা ব্যবস্থা বলে আর কিছুই থাকবে না।’’

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement