প্রতীকী ছবি।
কলকাতা থেকে হুগলির হরিপালের একটি কলেজে রক্ত সংগ্রহের শিবির করতে গিয়েছিল নীলরতন সরকার (এনআরএস) মেডিক্যাল কলেজের ব্লাড ব্যাঙ্ক। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যদের বাধায় সেই শিবির করা গেল না বলে অভিযোগ উঠল শনিবার। এনআরএস সূত্রের খবর, শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের সদস্যেরা নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড় থাকায় শেষ পর্যন্ত রক্ত সংগ্রহ না-করেই কলকাতা ফিরতে বাধ্য হন ব্লাড ব্যাঙ্কের কর্মীরা।
হরিপালের বিবেকানন্দ মহাবিদ্যালয়ে শনিবারের রক্তদান শিবিরের অন্যতম উদ্যোক্তা ছিল কলেজের এনএসএস-এর ১ ও ২ নম্বর ইউনিট। শিবিরের সঙ্গে যুক্ত একটি সংগঠনের প্রতিনিধি জগন্নাথ পাল জানান, কলেজে ঢোকার কিছু ক্ষণের মধ্যে সেমিনার হলে প্রায় ৭০ জন ছাত্র রক্তদানের জন্য জড়ো হয়েছিলেন। কিন্তু টিএমসিপি’র নেতারা ছাত্রদের শিবিরে যোগ দিতে মানা করেন। তাঁদের বক্তব্য ছিল, শিবিরের জন্য ছাত্র সংসদের নেতৃত্বের অনুমতি নেওয়া হয়নি। তাই শিবির হবে না। ওই ঘটনার পরে ছাত্রেরা সকলে চলে যান। বারবার মাইকে ঘোষণা করেও তাঁদের শিবিরে আনা যায়নি। অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে ছাত্রদের বোঝানোর জন্য পরিচালন সমিতির সভাপতি বাবলু গায়েনের দ্বারস্থ হন অধ্যক্ষ অসীম কুমার সামন্ত। তিনিও ব্যর্থ হলে ব্লাড ব্যাঙ্কের কর্মীদের লিখিতভাবে অধ্যক্ষ জানিয়ে দেন, অনিবার্য কারণে শিবির করা যাচ্ছে না। এ দিন অধ্যক্ষ বলেন, ‘‘অনেক চেষ্টা করেও শিবির করা গেল না ভেবে খারাপ লাগছে।’’
শিবির বানচালের জন্য অধ্যাপকদের একাংশকে দায়ী করে স্থানীয় পঞ্চায়েতের নেতা সুমিত সরকার বলেন, ‘‘শিবিরের আয়োজক অধ্যাপকদের ব্যর্থতার জন্য ছাত্রছাত্রীরা রক্ত দিতে যাননি। ছাত্ররা তো শিবিরের কথা জানতই না!’’ কলেজের টিএমসিপি নেতা জামিরুলের বক্তব্য, ‘‘ছাত্রের অভাবে শিবির হয়নি বলে শুনেছি।’’ ঘটনার কথা জানার পরে স্বাস্থ্য দফতরের এক পদস্থ কর্তা জানান, রক্তের খুব দরকার বলেই এত দূরে শিবিরেও আপত্তি করা হয়নি। ৭০ ব্যাগ রক্ত পেলে অনেক মানুষ উপকৃত হতেন। তাঁর কথায়, ‘‘রক্তদানে একটা বেলা নষ্ট হওয়ার গুরুত্ব কতখানি তা ছাত্রসমাজের না-বোঝাটা দুর্ভাগ্যজনক।’’