মালদহে যুব তৃণমূলের সভা— নিজস্ব চিত্র।
ঘোষিত কর্মসূচি ছিল, ‘নয়া কৃষি আইন, মূল্যবৃদ্ধি-সহ কেন্দ্রের নানা জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে মেগা রোড শো এবং জনসভা’। কিন্তু বুধবার দুপুরে মালদহে যুব তৃণমূলের সেই কর্মসূচি পরিণত হল শুভেন্দু অধিকারীর সমালোচনার মঞ্চে।
সপ্তাহের ব্যস্ত দিনে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের ভিড়ে শহর অবরুদ্ধ হয়ে রইল ঘন্টা তিনেক। জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী মৌসম বেনজির নূর, প্রাক্তন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী-সহ জেলার নেতারা শহরে মিছিল করলেন। বিজেপি বিরোধী স্লোগানে পাশাপাশি শোনা গেল, ‘মীরজাফর, গদ্দার বলে শুভেন্দু অধিকারী দূর হঠো’। বস্তুত, ব্যান্ডপার্টি এবং গম্ভরী শিল্পীদের নিয়ে সুসজ্জিত মিছিলে নরেন্দ্র মোদী সরকারের চেয়ে বেশি গুরুত্ব পেল বিজেপিতে পা বাড়ানো নেতা-কর্মীদের সমালোচনা। একই ছবি ছিল মিছিল শেষে সভাতেও।
বুধবার দুপুর ১টায় মালদহ শহরের কলেজ মাঠ এলাকা থেকে শুরু হয় যুব তৃণমূলের মহামিছিল। নেতৃত্বে ছিলেন সংগঠনের জেলা সভাপতি প্রসেনজিৎ দাস। প্রায় দু’ঘন্টা ধরে শহরের বিভিন্ন রাস্তা পরিক্রমা করে জেলা প্রশাসনিক ভবনের সামনে শেষ হয় মিছিল। এই মিছিলের জেরে শহরের বিভিন্ন এলাকায় যানজট তৈরি হয়। তবে আয়োজকদের দাবি, তৃণমূলের এত বড় মিছিল আগে কখনও দেখেননি মালদহবাসী।
মিছিল শেষে জেলা প্রশাসনিক ভবনের সামনে আয়োজিত সভায় কৃষ্ণেন্দুর পাশাপাশি রাজ্যের আরেক প্রাক্তন মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র হাজির ছিলেন। ছিলেন, ইংরেজবাজার টাউন তৃণমূল সভাপতি নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি, দলের জেলার কোঅর্ডিনেটর বাবলা সরকার, মহিলা তৃণমূলের জেলা সভানেত্রী চৈতালি সরকার-সহ অন্যান্য নেতারা।
প্রসেনজিৎ বলেন, ‘‘গত ২৩ মার্চ রাজ্য নেতৃত্ব আমাকে এই পদের দায়িত্ব দিয়েছেন। তার পরেই করোনা এবং লকডাউন হয়েছে। কিন্তু তারই মধ্যে এদিনের মহামিছিল করে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে মালদায় তৃণমূলের শক্তি কতটা বেড়েছে।’’ গাজোলের বিধায়ক দীপালি বিশ্বাসের বিজেপি-তে যোগদানের উদাহরণ দিয়ে কৃষ্ণেন্দু বলেন, ‘‘দলে এখনও বেশ কয়েকজন গদ্দার রয়েছে। যারা তলে তলে শুভেন্দু সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে।’’
রাজ্যসভা সাংসদ মৌসুম নূর বলেন, ‘‘আমরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শে দল করি। কিছু সুবিধাবাদী নেতা-নেত্রী আছেন, যাঁরা সময় বুঝে অন্য দলে ঝাঁপ মারেন। এমন নেতা-নেত্রীদের আমাদের দরকার নেই। অনেকেই বলেছিলেন মালদহে না কি তৃণমূলে অন্তর্কলহ চলছে। কিন্তু আজকের মহামিছিল প্রমাণ করে দিয়েছে, জেলায় আগামী বিধানসভায় সবকটি আসন তৃণমূলের দখলে থাকবে।’’