জয়ের উল্লাসে জোড়াফুল শিবিরের কর্মী-সমর্থকেরা। —নিজস্ব চিত্র।
এই প্রথম পাহাড়ে ঘাসফুল ফোটালেন তৃণমূলের বিনয় তামাং-সহ পাঁচ প্রার্থী। ফলে জিটিএ বোর্ডেও এ বার প্রবেশ করল তৃণমূল।
বুধবার গোর্খা আঞ্চলিক পরিষদ (গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা জিটিএ)-এর নির্বাচনে জয়ী হয়েছে অনীত থাপার দল ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা। মোট ৪৫টি আসনের মধ্যে ২৭টি দখলে এসেছে অনীতদের। তবে প্রথম বার জিটিএ নির্বাচনের লড়ে ডালি ব্লুমফিল্ড সমষ্টি-সহ পাঁচটি আসন ছিনিয়ে নিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল।
জিটিএ নির্বাচনে ১০টি আসনে লড়েছে তৃণমূল। যদিও নির্বাচনের প্রাক্কালে পাহাড়ে ঘাসফুল শিবিরের জেতার তেমন সম্ভাবনা নেই বলে মনে করেছিলেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ। তবে বুধবার সে ধারণাকে আক্ষরিক অর্থেই নস্যাৎ করে দিলেন বিনয় তামাংরা। বুধবার সকাল ৮টা থেকে জিটিএ-র ফলাফল ঘোষণা শুরু হতেই দেখা যায়, একের পর এক খাতা খুলতে শুরু করেছেন ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা এবং নির্দল প্রার্থীরা। পাশাপাশি, এক এক করে খাতা খোলে তৃণমূল। প্রথমে ডালি ব্লুমফিল্ড সমষ্টি থেকে জয়ের খবর পান তৃণমূল প্রার্থী বিনয় তামাং। এর পর আরও চারটি জায়গায় জয়ের খবর আসে জোড়াফুল শিবিরে।
গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
স্বাভাবিক ভাবেই এই ফলাফলে উচ্ছ্বসিত দলের কর্মী-সমর্থকেরা। সবুজ আবির উড়িয়ে পাহাড়ি রাস্তায় উল্লাস শুরু করেন তাঁরা। জয়ের পর বিনয় তামাং বলেন, ‘‘প্রথমেই সকলকে ধন্যবাদ। যাঁরা আমাকে এবং আমাদের দলকে সমর্থন করেছেন তাঁদের পাশাপাশি যাঁরা অন্যান্য দলে থেকেও আমার পাশে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন, তাঁদের ধন্যবাদ জানাই।’’ জয়ের পর পাহাড়ে দলীয় সংগঠনের ভার বাড়ানোর দিকে মন দেওয়ার কাজ করতে চান অনীত। তিনি আরও বলেন, ‘‘ভবিষ্যতে তৃণমূলের সংগঠনের জোর আরও বাড়বে। তবে আমাদের প্রথম কাজ হবে, পাহাড়ে যাঁরা ভূমিহীন বা যাঁদের জমির সঠিক কাগজপত্র নেই, তাঁদের পাট্টা প্রদান করা।’’
প্রসঙ্গত, জিটিএ নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থিতালিকা ঘোষণার পর দেখা যায় যে তাতে ওজনদার নাম বলতে রয়েছেন বিনয় তামাং। তা সত্ত্বেও কার্যত পাহাড়ের মাটি কামড়ে লড়েছেন দলীয় কর্মীরা। লড়াই মূলত ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা এবং হামরো পার্টির মধ্যে ছিল। নির্দলের লড়াই থাকলেও অনীতের দলের প্রতি তাঁদের একাংশের সমর্থন ছিল। তবে নিজেদের মতো করে ১০টি আসনে নিঃশব্দে প্রচার সেরেছে তৃণমূল। পাহাড় ও সমতলের তৃণমূলের পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাস দফায় দফায় শিলিগুড়ি এসে মহকুমা ও পাহাড়ের খোঁজ নিয়েছেন। তারই ফল হাতেনাতে এসেছে বলে মনে করছেন জোড়াফুল শিবিরের কর্মী-সমর্থকেরা।