রাজ্যের ১০৮টি পুরসভার সদ্যসমাপ্ত নির্বাচনে একচেটিয়া জয় পেয়েছে তৃণমূল। তার ফলেই সব মিলিয়ে এই পুরনির্বাচনে দলের নির্বাচিত পুরসদস্যের সংখ্যা প্রায় ২ হাজারের কাছাকাছি।
পদাধিকারী নির্বাচনে পুরবোর্ডের নবনির্বাচিত সদস্যদের ‘মুচলেকা’ নেবে তৃণমূল কংগ্রেস। দলীয় নেতৃত্বের ঠিক করে দেওয়া পুরপ্রধান ও উপপুরপ্রধান সম্পর্কে তাঁরা যে প্রশ্ন বা আপত্তি করবেন না, ওই ‘মুচলেকা’য় সে কথাই জানাতে হবে তাঁদের।
রাজ্যের ১০৮টি পুরসভার সদ্যসমাপ্ত নির্বাচনে একচেটিয়া জয় পেয়েছে তৃণমূল। তার ফলেই সব মিলিয়ে এই পুরনির্বাচনে দলের নির্বাচিত পুরসদস্যের সংখ্যা প্রায় ২ হাজারের কাছাকাছি। প্রাথমিক ভাবে উত্তর ২৪ পরগনায় নির্বাচিত পুরসদস্যদের কাছে এই রকম একটি ছাপানো ‘ফর্ম’ বিলির পরিকল্পনা হয়েছে। প্রত্যেক সদস্যকেই নিজেদের এই ‘সম্মতি’ জানিয়ে সেই ফর্ম পূরণ করে দলের কাছে জমা করতে হবে।
নিয়ম মতো নির্বাচিত সদস্যদেরই পুরসভার দলনেতা বা নেত্রী নির্বাচন করার কথা। তাঁকে পুরপ্রধান হিসেবে সামনে রেখেই উপ-পুরপ্রধান বা অন্যান্য পদাধিকারী নির্বাচন করার কথা। কিন্তু সাধারণ ভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের উচ্চতর নেতৃত্ব এই সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। এবং দলীয় ব্যবস্থায় তা সংশ্লিষ্ট পুরদলের কাছে পাঠানো হয়। সেই প্রক্রিয়াকে প্রশ্নহীন করতেই এ বার এই ‘ফর্ম’-এর ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে। তৃণমূলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা দলের এক নেতা অবশ্য এই ‘ফর্ম’কে ‘মুচলেকা’ বলতে নারাজ। তাঁর কথায়, ‘‘এটা এক রকম সম্মতি। পুরপ্রধান ও উপপ্রধান বাছাইয়ে সিদ্ধান্ত দলই নেয়। তবে সব ক্ষেত্রেই দলীয় নেতৃত্ব সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন।’’
এই ‘মুচলেকা’ বা ‘সম্মতিপত্র’টি জেলা স্তরে কেন্দ্রীয় ভাবে তৈরি করা হয়েছে। সেখানেই পুরসদস্যের ঘোষণা হিসেবে তাতে লেখা রয়েছে, ‘আমরা এই জনপ্রতিনিধি সর্বসম্মতি ক্রমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিতেছি যে দলের সর্বোচ্চ নেত্রী দলের পক্ষ থেকে পৌরপ্রধান ও উপপৌরপ্রধান নির্বাচনের ব্যাপারে যে সিদ্ধান্ত নেবেন আমরা সেই সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার অঙ্গীকার করছি।’ আবেদনের পক্ষে পুরসদস্যদের সকলের স্বাক্ষর, ওয়ার্ড পরিচিতির জায়গাও রাখা হয়েছে ওই ‘ফর্ম’-এ।
দলীয় সূত্রে খবর, পঞ্চায়েত ভোটের পরেও উত্তর ২৪ পরগনা সহ কয়েকটি জেলায় এই রকম ‘ফর্ম’ তৈরি করেছিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। পঞ্চায়েত স্তরে মূলত অনাস্থা এবং তা ঘিরে কোন্দল ঠেকাতে এই রকম নির্বাচিত সদস্যদের ‘সম্মতি’ নিতে এই রকম ফর্ম দেওয়া হয়েছিল। তাতে অবশ্য অনাস্থা বা পদাধিকারী মনোনয়ন নিয়ে অভ্যন্তরীণ দাবি- আপত্তি আটকানো যায়নি। কারণ দল এইরকম ‘ফর্ম’-এ নির্বাচিত সদস্যদের স্বাক্ষর নিলেও তার কোনও আইনি স্বীকৃতি নেই।
এ বার পুরভোটের শুরু থেকে দলের বিক্ষুব্ধদের নিয়ে এক সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিল তৃণমূল। তাই পদাধিকারী নির্বাচন নিয়ে অভ্যন্তরীণ বিরোধ এড়াতে এই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।