চোপড়ায় ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের টার্গেট ঘোষণা করলেন অভিষেক। ফাইল চিত্র।
ছাব্বিশের টার্গেট বেঁধে দিলেন তেইশেই। পঞ্চায়েত ভোটের আগে মানুষের প্রার্থী খুঁজে বার করতে ৬০ দিনের কর্মসূচিতে বেরিয়ে জেলায় জেলায় সফর করছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার সেই অধ্যায়ে উত্তর দিনাজপুর জেলার চোপড়ায় সভা করলেন তিনি। সেখানেই বক্তৃতায় অভিষেক বলেন, ‘‘তৃণমূলকে চমকে ধমকে আটকে রাখা যাবে না। তৃণমূলকে যত চমকেছেন, ধমকেছেন, তত তৃণমূল শক্তিশালী হয়েছে। ২০১১ সালে ক’টা সিট ছিল? ১৮৪টা। ২০১৬ সালে ২১১ আর ২০২১ সালে ২১৪। ২০২৬-এ ২৪০ হবে।’’
এ ভাবেই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতি পর্বেই দলকে আগামী বিধানসভা ভোটের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছেন বলেই মত বাংলার রাজনীতির কারবারিদের একাংশের। এখনও বিধানসভা ভোটের ৩ বছর বাকি। কিন্তু অভিষেক যে পঞ্চায়েত ও লোকসভার পাশাপাশি, সেই বিধানসভা নির্বাচনকেও পাখির চোখ করে রেখেছেন, তাঁর মন্তব্য সেই ইঙ্গিতই খুঁজে পেয়েছেন অনেকে। আবার অন্য অংশের মতে, সিউড়ির জনসভা থেকে রাজ্যে বিজেপির পক্ষে লোকসভা ৩৫টি আসন জেতা সম্ভব বলে দাবি করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেই দাবিকে সরাসরি নস্যাৎ না করেও নিজের মতো করেই বিজেপির বাংলা দখলের স্বপ্নকে অভিষেক এ ভাবেই উড়িয়ে দিয়েছেন বলেই মনে করা হচ্ছে।
বিজেপিকে ঢেলে ভোট দেওয়ার পর কী ভাবে তাদের দ্বারাই বাংলার মানুষ প্রতি পদে বঞ্চিত হচ্ছে, তা মানুষের সামনে তুলে ধরেন অভিষেক। তাঁর অভিযোগ, ‘‘১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনা, গ্রাম সড়ক যোজনা-সহ একাধিক প্রকল্পে কেন্দ্র কোনও টাকা দিচ্ছে না। সব মিলিয়ে বাংলার প্রাপ্য ১ লক্ষ ১৫ হাজার কোটি টাকা।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘গণতান্ত্রিক দেশে কেউ আপনাদের টাকা আটকে রাখতে পারবে না। তাই ৬০ দিনের এই কর্মসূচি শেষে দিল্লির বুকে তৃণমূল দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বৃহত্তর আন্দোলন সংগঠিত করবে। এবং সেই টাকা ছিনিয়ে আনব, সেই টাকা আপনাদের হাতে আসা সময়ের অপেক্ষা।’’
তথ্য তুলে ধরে অভিযোগের সুরে অভিষেক বলেন, ‘‘বিজেপি নেতারা দিল্লিকে চিঠি লিখে বাংলার টাকা আটকে রাখতে বলছেন। এখন আপনারা বুঝুন, ওদের ভোট দিয়ে কী পেলেন!’’ তাঁদের প্রতি বিজেপি নেতাদের বিন্দুমাত্র সহানুভূতি নেই বলেই দাবি করেছেন তিনি। উত্তরবঙ্গকে ভাগ করার যে বিপজ্জনক তাস বিজেপির কিছু নেতা খেলছেন, সে সম্পর্কে সজাগ থেকেই পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোট দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন অভিষেক।
অভিষেক বলেন, ‘‘বিজেপির কয়েক জন নেতা চিমটি কেটে বাংলা ভাগের উস্কানি দিচ্ছেন। সাহস থাকলে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ, জেপি নাড্ডারা এক বার প্রকাশ্যে রাজ্য ভাগের কথা বলুন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি রিপোর্ট কার্ড নিয়ে কথা বলছি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী করেছেন, আর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কী দিয়েছেন? তা আপনারাই হিসেব করে দেখুন। দিদি লক্ষ্মীর ভান্ডার যে টাকা দিচ্ছে, মোদী সেই টাকাই আধার আর প্যান কার্ড লিঙ্কের নামে নিয়ে চলে যাচ্ছে।’’