প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
প্যান কার্ডের সঙ্গে আধার কার্ডের সংযুক্তিকরণের জন্য টাকা ধার্য করেছে মোদী সরকার! রবিবার উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের সভায় এই নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে দলের ‘নবজোয়ার কর্মসূচি’তে এই মুহূর্তে উত্তর দিনাজপুরে রয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। গত ২৫ এপ্রিল থেকে এই কর্মসূচি শুরু করেছেন অভিষেক। প্রথম দিন থেকেই বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাচ্ছেন তৃণমূল সাংসদ। পাশাপাশি তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে কেন জোড়াফুল প্রতীককে মানুষ বেছে নেবেন, সেই ব্যাখ্যাও দিচ্ছেন একের পর এক সভায়। ইসলামপুরের সভায় দু’দলের মধ্যে ফারাক বোঝাতে গিয়ে প্যান এবং আধার কার্ডের সংযুক্তিকরণের প্রসঙ্গ টেনে দেশের বিজেপি সরকারের দিকে আঙুল তুললেন অভিষেক।
প্যান কার্ডের সঙ্গে আধার কার্ডের সংযুক্তিকরণের নির্দেশ দিয়েছে আয়কর দফতর। ভারতীয় নাগরিকদের সুবিধার জন্য এই দুই পরিচয়পত্র সংযুক্ত করার মেয়াদ বৃদ্ধি করে শেষ তারিখ ঠিক করা হয়েছে ৩০ জুন। তবে, এই সংযুক্তিকরণের জন্য টাকা দিতে হচ্ছে। সংযুক্তিকরণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য ১ হাজার টাকা অনলাইন মাধ্যমে দিতে হবে। কিন্তু যথাসময়ে পরিচয়পত্র দু’টি সংযুক্তিকরণ না হলে, ৩০ জুনের পর থেকে প্যান কার্ড বাতিল হয়ে যেতে পারে। প্যান এবং আধার কার্ডের সংযুক্তিকরণ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে অতীতে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। এ বার এই প্রসঙ্গ উত্থাপন করে বিজেপিকে আক্রমণ করলেন অভিষেক।
ইসলামপুরের সভায় মোদী সরকার এবং মমতা সরকারের তুলনা টানেন তৃণমূলের ‘সেনাপতি’। বলেন, ‘‘গত ৯ বছর ধরে মোদী সরকার ক্ষমতায় রয়েছে। আপনারা ৯ বছরের রিপোর্ট কার্ড দেখান। আমরা আমাদের ১২ বছরের সরকারের রিপোর্ট কার্ড দেখাব। তথ্য-পরিসংখ্যান তুলে ধরে মানুষের দরবারে প্রতিযোগিতা হোক। দেখি কে কী কাজ করেছে মানুষের জন্য। ১০-০ গোল দিয়ে মাঠছাড়া করব।’’ এর পরই রাজ্য এবং কেন্দ্র সরকারের তুলনা টেনে অভিষেকের মন্তব্য, ‘‘এক দিকে, লক্ষ্মীর ভান্ডার করে বছরে ৬ হাজার, ১২ হাজার টাকা দিচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। আর অন্য দিকে, নরেন্দ্র মোদীর সরকার আধার-প্যানের সংযুক্তিকরণের নামে হাজার টাকা করে নিয়ে যাচ্ছে।’’ এই কথা বলার পরই জনতার উদ্দেশে অভিষেকের বার্তা, ‘‘আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, কার সঙ্গে থাকবেন আপনি।’’
অভিষেক আরও বলেন, ‘‘২০২১ সালে জেতার পর লক্ষ্মীর ভান্ডার দিয়েছেন মমতা। আর ২০২১ সালে বাংলায় হারার পর আবাস যোজনার টাকা বন্ধ করে দিয়েছে মোদী সরকার।’’ এর পরই সাধারণ মানুষের উদ্দেশে অভিষেকের বার্তা, ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচনে এমন কাউকে প্রার্থী করুন, যিনি প্রগতিশীল পঞ্চায়েত গড়বেন। ১০০ দিনের টাকা, রাস্তার টাকা, আপনার প্রাপ্য যাতে পান, সেটা সুনিশ্চিত করতে হবে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘২০২১ সালে লক্ষ্মীর ভান্ডারকে সামনে রেখে ভোট দিয়েছিলেন, তাই লক্ষ্মীর ভান্ডার হয়েছে। ২০২৩, ২০২৪, ২০২৬ সালের নির্বাচনে ধর্ম নয়, নিজের প্রাপ্যের জন্য ভোট দিন। যে আপনার এলাকার উন্নয়ন করবে, তাকে ভোট দেবেন।’’ বিজেপি ‘ভাঙা অডিয়ো ক্যাসেট’ বলেও কটাক্ষ করেছেন অভিষেক।