(বাঁ দিকে) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুভেন্দু অধিকারী (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র
বিধানসভায় ফের বাংলা ভাগের বিরুদ্ধে প্রস্তাব আনতে চলেছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। আগামী সোমবার ১৮৫ নম্বর ধারায় বিধানসভায় এই প্রস্তাব আনবে তৃণমূলের পরিষদীয় দল। ওই দিন বিধানসভায় বন মহোৎসবের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তৃণমূলের পরিষদীয় দল সূত্রে খবর, বাংলা ভাগে বিরুদ্ধে আনা প্রস্তাব সংক্রান্ত আলোচনায় অংশ নেবেন মুখ্যমন্ত্রীও।
বিজেপির পরিষদীয় দল সূত্রে খবর, তাদের বিধায়কেরাও এই আলোচনায় অংশ নেবেন। মঙ্গলবার বিধানসভার কার্যবিবরণী কমিটির বৈঠকে স্থির হয় যে, আগামী সোমবার বিধানসভার চলতি অধিবেশনের শেষ দিনে বাংলা ভাগের বিরুদ্ধে প্রস্তাব এনে আলোচনা হবে। বৈঠকের পর এই তথ্য জানান রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। প্রসঙ্গত, এর আগে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এই একই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়েছিল রাজ্য বিধানসভায়। এই প্রসঙ্গে শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ বলেন, “রাজনৈতিক স্বার্থে বঙ্গভঙ্গ বিরোধী প্রস্তাব আনছে রাজ্যের শাসকদল।”
উত্তরবঙ্গের বালুরঘাট কেন্দ্র থেকে দ্বিতীয় বারের জন্য জিতে উত্তর-পূর্ব উন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে উত্তরবঙ্গের কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলিকে উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রকল্পগুলির অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। যা থেকেই নতুন করে বাংলা ভাগ সংক্রান্ত বিতর্কের সূত্রপাত। আবার গোড্ডার বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে বিহারের কাটিহার, আরারিয়া, কিষানগঞ্জের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের মালদহ, মুর্শিদাবাদ জেলাকে নিয়ে পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গড়ার দাবি তুলে দিয়েছেন। মুর্শিদাবাদ জেলার দুই বিজেপি বিধায়ক গৌরীশঙ্কর ঘোষ ও কাঞ্চন মৈত্র আবার মুর্শিদাবাদ নিয়ে নিশিকান্তের দাবির সপক্ষে সওয়াল করেন।
বিধানসভায় বাংলা ভাগ নিয়ে বিজেপিকে হুঁশিয়ারি দিয়ে সোমবার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আসুক বাংলা ভাগ করতে। দেখিয়ে দেব কী করে রুখতে হয়! ভোট চলে গেলেই ভাগাভাগি ইস্যু নিয়ে আসা হয়। এক জন বলছেন, মুর্শিদাবাদ-মালদহ ভেঙে দাও। কেউ বলছেন, অসমের তিনটি জেলাকে নিয়ে নতুন কিছু করো। কেউ আবার উত্তরবঙ্গকে উত্তর-পূর্বের সঙ্গে যুক্ত করে দিতে বলছেন। চার মন্ত্রী বলেছেন উত্তরবঙ্গ ভাগের কথা। আমি ধিক্কার জানাই। আসুক বাংলা ভাগ করতে, কী করে রুখতে হয় দেখিয়ে দেব।’’
বাংলার বিভাজন নিয়ে বিজেপির অবস্থান ব্যাখ্যা করতে গিয়ে শুভেন্দু সোমবার বলেন, ‘‘ভারতীয় জনতা পার্টির পরিষ্কার স্ট্যান্ড। আমরা বঙ্গভঙ্গ, বাংলা ভাগ, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল বা আলাদা রাজ্য এ সব চাই না। দলগত ভাবে আমি এটা বলতে পারি। আমাদের বক্তব্য খুব স্পষ্ট, হিন্দু পলায়ন রুখতে, অবিলম্বে অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করতে হবে। রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীদের ঘাড় ধরে বের করতে হবে।’’