কোন কোন লক্ষণ দেখে বুঝবেন অ্যাডিনোভাইরাসের সংক্রমণ। ছবি: ফ্রিপিক।
করোনার দাপট কমেছে, কিন্তু সাধারণ সর্দি-কাশির ভাইরাসের প্রকোপে শহর জুড়ে জ্বরে কাবু আট থেকে আশি। খামখেয়ালি আবহাওয়া এই ভাইরাসকে আরও সংক্রামক করে তুলেছে। এক সময়ে অ্যাডিনোভাইরাসের সংক্রমণ হলে কেবল সর্দি বা হালকা জ্বর হত। যাকে চিকিৎসকেরা বলতেন ‘কমন কোল্ড’। কিন্তু এখন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে জ্বর, সর্দির পাশাপাশি শুকনো কাশি, গলা ব্যথা, পেশিতে ব্যথা এমনকি কনজাংটিভাইটিসের ঝুঁকিও বাড়ছে।
এই বিষয়ে চিকিৎসক অনির্বাণ দলুই বলছেন, “বর্ষার সময়ে ভিজে স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে এই অ্যাডিনোভাইরাসের উপদ্রব বাড়ে। এখন যেহেতু বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি, তাই এই ভাইরাস দ্রুত বংশবিস্তার করতে পারে ও ছড়িয়ে পড়তে পারে বহুজনের মধ্যে। বাড়িতে একজন আক্রান্ত হলে, তাঁর থেকে বাকিদেরও সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।”
কী ভাবে ছড়ায় এই ভাইরাস?
অ্যাডিনোভাইরাস ইতিমধ্যেই কোভিড-পরবর্তী নতুন আতঙ্ক তৈরি করেছে বলেই মত অধিকাংশ চিকিৎসকের। দু’বছরের কমবয়সি বাচ্চাদের অতি দ্রুত শ্বাসযন্ত্রে সংক্রমণ বা ‘রেসপিরেটরি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন ‘ হচ্ছে। শ্বাসযন্ত্রের উপরিভাগ ও নিম্নভাগে এই ভাইরাস বাসা বাঁধে। শ্বাসনালির মাধ্যমে ফুসফুসে প্রবেশ করে। চিকিৎসক জানাচ্ছেন, আক্রান্তের থুতু, লালা, হাঁচি-কাশির মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। ভাইরাসের সংক্রমণ গুরুতর পর্যায়ে গেলে নিউমোনিয়ার লক্ষণও দেখা দিতে পারে।
অ্যাডিনোভাইরাসের সংক্রমণ হলে, জ্বর, সর্দি-কাশি, ক্রমাগত নাক দিয়ে জল পড়া, গলা শুকিয়ে যাওয়া, গলায় ব্যথার মতো সমস্যা হবে। শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা থাকতে পারে। বিশেষ করে শিশুরা আক্রান্ত হলে তা ভয়াবহ পর্যায়ে যেতে পারে। যদি বুক ধড়ফড়, শ্বাস কষ্ট শুরু হয় তা হলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে। এই ভাইরাসকে কাবু করার কোনও প্রতিষেধক নেই। তাই সচেতন থাকতেই হবে।
অ্যাডিনোভাইরাসে আক্রান্ত হলে কী করবেন?
জ্বর ১০০ ডিগ্রির আশপাশে থাকলে প্যারাসিটামল খেতে হবে, পাশাপাশি প্রচুর জল খেতে হবে।
হাঁচি-কাশির সময়ে মুখ ঢেকে রাখবেন।
ঘন ঘন সাবান জল দিয়ে হাত ধুতে হবে। স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার করতে হবে।
বাড়িতে কারও সংক্রমণ হলে তাঁকে আলাদা রাখতেই হবে, কারণ এই ভাইরাস খুব ছোঁয়াচে।
বেশি ভিড়, জমায়েত এড়িয়ে চলতে হবে।
তরল খাবার বেশি করে খেতে হবে। বেশি মশলাদার খাবার খাওয়া চলবে না।
এই প্রতিবেদন সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। জ্বর হলে নিজে থেকে ওষুধ খাবেন না। উপসর্গ দেখা দিলে কী কী করণীয় তা চিকিৎসকের থেকে জেনে নেওয়াই ভাল।