ফাইল চিত্র
বিধানসভা নির্বাচন মেটার পর এ বার ভাবনায় পুরভোট।
কর্পোরেশন এবং মিউনিসিপ্যালিটি মিলিয়ে রাজ্য মোট ১১৬ টি পুরসভার ভোট করতে হবে। কলকাতা যার অন্যতম। রাজ্য সরকারের পরামর্শ অনুসারে রাজ্য নির্বাচন কমিশন এর দিনক্ষণ ঠিক করবে। আলোচনার উৎস সেখানে। তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব মনে করেন, পুজোর আগে সেপ্টেম্বর নাগাদ পুরভোট পর্ব মেটাতে পারলে ভাল। রাজ্য নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যাচ্ছে, তারাও ভোটের জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সেরে রেখেছে। তবে শাসক শিবিরের খবর, এ ক্ষেত্রে আপাতত চিন্তা কোভিড পরিস্থিতি। যার উপর বাকিটা নির্ভর করছে।
কলকাতা-সহ যে পুরসভাগুলির মেয়াদ ফুরিয়েছে, সেগুলিতে প্রশাসকমণ্ডলী গড়ে কাজ চলছে। বিধানসভা ভোটের আগে আদালতে রাজ্য জানিয়েছিল, সাধারণ নির্বাচন হয়ে গেলে পুরভোট করা হবে। রাজনৈতিক ভাবে তৃণমূলও মনে করে, বিধানসভা ভোটের ফলের নিরিখে এখন ভোট করে নেওয়ার ‘সুসময়’।
বিধানসভার ৬টি আসনে উপনির্বাচনও প্রয়োজন। গত মে মাসে বিধানসভার ফল প্রকাশের সময় থেকে ধরলে ৬ মাস অর্থাৎ নভেম্বরের মধ্যে তা হওয়া উচিত। এ ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেবে দেশের
নির্বাচন কমিশন।
এর আগে রাজ্যে ৮ দফা ভোটের শেষ পর্বের কোভিড পরিস্থিতি গুরুতর আকার নেওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বাম-কংগ্রেসের মতো বিরোধীরা একবাক্যে ভোটের পর্ব কমানোর দাবি তুলেছিলেন। তা মানা হয়নি। এখন কোভিডের তৃতীয় ঢেউ (যা অক্টোবরের আগেই আসতে পারে) কত দূর ধাক্কা দেবে বা তাতে রাজ্যের অবস্থা কী হবে, সেই বিষয়টি না বুঝে নবান্ন পুরভোটের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, সংক্রমণের একটি ঢেউয়ের শেষে মাস তিনেক স্থিতাবস্থা থাকে। তার পরে নতুন ঢেউ আসার সম্ভাবনা তৈরি হয়। স্থিতাবস্থা থাকাকালীন ভোট করানো যায় কি না, তা নিয়েই ভাবনাচিন্তা চলছে। তবে সংক্রমণের প্রথম ধাক্কার পরে থাকা স্থিতাবস্থার সময় রাজ্যে বিধানসভার ভোট হয় আট দফায়। তার পরে দৈনিক সংক্রমণের হার ২০ হাজারে পৌঁছে গিয়েছিল। ফলে তৃতীয় ঢেউয়ের আগে সেই অভিজ্ঞতাকেও মাথায় রাখছে প্রশাসন।
তৃণমূলের এক শীর্ষনেতা শনিবার বলেন, ‘‘দ্রুত পুরভোট করতে আমরাও চাই। তবে সেপ্টেম্বরে সম্ভব না হলে দীপাবলির আগে হয়তো তা করা যাবে না। কারণ, সে সময় উৎসবের মরসুম চলবে।’’ তবে তৃণমূলের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষণ হল, রাজ্য পুরভোটের ব্যাপারে তৎপরতা না দেখালে সেই পরিস্থিতি দেখিয়ে নির্বাচন কমিশন বিধানসভার উপনির্বাচনগুলিও ঝুলিয়ে রাখতে পারে। তাই রাজ্য সরকার দ্রুত পুরভোট করার আগ্রহ দেখাবে সেটাই স্বাভাবিক। তৃণমূলের ওই শীর্ষনেতার কথায়, ‘‘করোনা মোকাবিলায় গোটা রাজ্যে ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ চলছে। তা সন্তোষজনক জায়গায় পৌঁছলে হয়তো ভোটের বিষয়টি চূড়ান্ত করার কথা ভাবা যাবে।’’
রাজ্য নির্বাচন কমিশনের এক কর্তা বলেন, “এখনও পর্যন্ত নবান্ন থেকে কোনও বার্তা আসেনি। সরকার জানালেই এ ব্যাপারে পদক্ষেপ করা হবে। মূল কাজগুলি হয়ে থাকায় বাকি প্রস্তুতি সারতে বেশি সময় লাগবে না।” প্রসঙ্গত, গত ১৫ জানুয়ারি ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ শেষ হয়েছে। তার ভিত্তিতে কলকাতায় কত ভোটার রয়েছে, ওয়ার্ডভিত্তিক ভাবে তার চূড়ান্ত তালিকা (অ্যাডাপ্টেশন) তৈরির কাজও শেষ।