ক্ষমতায় আসার আগে যাঁরা দলের সঙ্গে ছিলেন, এবার তাঁদেরই খোঁজ করছে তৃণমূল। পর্যালোচনা করতে গিয়ে দল বুঝেছে, পুরনোদের সঙ্গে সম্পর্ক থাকলে জঙ্গলমহলের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে আগাম আভাস পাওয়া সহজ হত। এখন পঞ্চায়েত ভোট মেটার পরে এইরকম কিছু সমর্থক-শুভানুধ্যায়ীদের কাছ থেকে পাওয়া চিঠিপত্র নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ শুরু করেছেন দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
নির্বাচনের ফল পর্যালোচনায় ঝাড়গ্রামে গিয়েছিলেন তিনি। তখনই বলে এসেছিলেন, যে কোনও সমস্যা বা অভাব-অভিযোগের কথা দলকে জানাতে। শুধু দলের নেতা-কর্মীরাই নয়। এই আবেদন ছিল তৃণমূলের শুভানুধ্যায়ী সাধারণ মানুষের কাছেও। গত পনেরো-কুড়ি দিনে এইরকম বেশ কিছু চিঠি পৌঁছেছে তাঁর কাছে। তার মধ্যে অবশ্য দলের মূলস্রোত থেকে সরে যাওয়া একাংশের চিঠিও রয়েছে। পার্থের কথায়, ‘‘বাম জমানা থেকে জঙ্গলমহলের প্রতি সরকারের বঞ্চনা নিয়ে সরব মমতা। সেখানকার মানুষ তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাই তাঁরা এখন কী বলছেন, তা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।’’ এই সব চিঠি পড়ে দল ও প্রশাসনিক স্তরে কী করা যায়, তা নিয়ে পূর্ণাঙ্গ আলোচনা করতে চাইছেন শাসকদলের শীর্ষনেতৃত্ব।
পঞ্চায়েতের ক্ষতপূরণে যে কোনও ‘শর্টকাট’ রাস্তা নেই, তা মেনে নিয়েই জঙ্গমলহলে কাজ করতে চাইছে তৃণমূল। আপাতত এই কাজের ভার পেয়েছেন দলের মহাসচিব। তাই দলীয় রাজনীতির বাইরেও যে সমস্ত ব্যক্তি বা সংগঠনের প্রভাব রয়েছে, তাদের সঙ্গে নতুন করে যোগাযোগের চেষ্টা শুরু হয়েছে। পার্থের কথায়, ‘‘পরিবর্তনের পরে স্থানীয় প্রয়োজনের ভিত্তিতেই কাজ হয়েছে। কিন্তু কোথায় খামতি, তার স্পষ্ট ধারণা পেতে দলীয় বৃত্তের বাইরে পা রাখতে হবে।’’ তাই স্থানীয় স্তরের নেতা বা জনপ্রতিনিধিদের বদলে সরাসরি এই ব্যবস্থায় জঙ্গলমহলে প্রত্যাখ্যানের কারণ বুঝতে চাইছেন শাসকদলের নেতারা।