—প্রতীকী ছবি।
পঞ্চায়েত ভোটের ফলের ভিত্তিতে পাঁচ-সাতটি জেলার দলীয় নেতৃত্বে রদবদল করতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ ও দুই মেদিনীপুরে সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ও চেয়ারম্যান পদে এই রদবদলের প্রস্তাব বিবেচনায় রয়েছে। বেশ কিছু জেলায় ব্লক স্তরেও মুখ বদলের কথা ভেবেছেন শাসক দলের শীর্ষ নেতৃত্ব।
হাজার অভিযোগের মধ্যেও সদ্যসমাপ্ত পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপি-সহ বিরোধীদের প্রাপ্ত আসনকে উপেক্ষা করতে পারছে না তৃণমূল। সেই কারণেই লোকসভা ভোটের আগে সংগঠনে রদবদলের এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলীয় নেতৃত্ব। এই পর্যায়ে যে সব জেলায় সংখ্যালঘু ভোটে ধাক্কা এসেছে, সেই জেলাগুলিতে মুখবদলের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে ফল প্রকাশের পর থেকেই। দলের এক নেতার কথায়, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটের সঙ্গে লোকসভা ভোটের চরিত্রগত ফারাক থাকে। তবু একেবারে জেলা ধরে পর্যালোচনার পরে যে সব আসনে নানা রকম দুর্বলতা দলের নজরে এসেছে, সেখানে পরিবর্তন করা হবে।’’
নদিয়া, মুর্শিদাবাদে তৃণমূলের সংখ্যালঘু ভোটে উল্লেখযোগ্য ভাঙন দেখা গিয়েছে এ বারের পঞ্চায়েত ভোটে। অন্যান্য কয়েকটি কারণের সঙ্গে সাংগঠনিক দুর্বলতাও চিহ্নিত করেছেন দলীয় নেতৃত্ব। তার ভিত্তিতেই এই রদবদলের পরিকল্পনা করা হয়েছে। সাংগঠনিক কাজে কয়েক জন পদাধিকারীর নিষ্ক্রিয়তাও চিহ্নিত করা হয়েছে। দলীয় সূত্রে খবর, পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী বাছাই, ভোট-প্রক্রিয়া পরিচালনা এবং ভোটের পরে বোর্ড গঠনের প্রক্রিয়ায় বহু জায়গায় গোষ্ঠী-কোন্দল বেড়েছে। এবং তা নিয়েই সাংগঠনিক দায়িত্বে থাকা নেতাদের সঙ্গে বিধায়ক ও সাংসদদের একাংশের বিরোধের খবর পৌঁছেছে শীর্ষ নেতৃত্ব পর্যন্ত। সেই বিবাদে যাতে লোকসভা ভোটে দলের ক্ষতি না হয়, তা নিশ্চিত করতেই এই রদবদল প্রয়োজনীয় বলে মনে করছে তৃণমূল।
সাংগঠনিক স্তরে জেলা সভাপতি বদলের এই পরিকল্পনায় বেশিসংখ্যক দলীয় নেতাকে যুক্ত করার ভাবনাও রয়েছে তৃণমূলের অন্দরে। সে ক্ষেত্রে দলের আগের সিদ্ধান্ত মতো প্রশাসনিক দায়িত্বে আছেন, এমন কাউকে লোকসভা নির্বাচনের আগে সংগঠনের দায়িত্বে না রাখার ভাবনাও রয়েছে। প্রাথমিক ভাবে এই পরিবর্তনের তালিকা আগামী সপ্তাহেই দলের তরফে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পাঠানো বলে বলে সূত্রের খবর। তাঁর অনুমোদন নিয়েই সেই তালিকা চূড়ান্ত হবে। নতুন সাংগঠনিক দায়িত্ব বণ্টনের পরেই রাজ্যব্যাপী দলের প্রচার-পরিকল্পনা তৈরি করা হবে।