ফাইল চিত্র।
ছোট-বড় মিলিয়ে রাজ্যে ব্রাহ্মণ-পুরোহিতদের প্রায় ১৯টি সংগঠন রয়েছে। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ বা আরএসএস এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মোকাবিলায় তাদের নিয়ে একটি অভিন্ন সংগঠন গড়তে চলেছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। চলতি বছরের শেষে অথবা আগামী বছরের গোড়ায় সেই সংগঠনের শক্তি প্রদর্শনে দল এখন চূড়ান্ত প্রস্তুতির পথে।
তৃণমূল নেতা তথা মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, আগামী বিধানসভা ভোটের আগে আরএসএস এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মতো সংগঠনের মোকাবিলায় অঞ্চল স্তর পর্যন্ত পৌঁছতে কাজ করবে ব্রাহ্মণ-পুরোহিতদের এই অভিন্ন সংগঠন।
রাজীববাবুর দাবি, ব্রাহ্মণ-পুরোহিতদের ১৯টি সংগঠনের মধ্যে ১৮টির সংযুক্তিকরণ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়েছে। দেড় লক্ষেরও বেশি সদস্য নিয়ে বড় সভা করার প্রস্তুতি চলছে। রাজ্য সরকার অতীতে ইমাম-মোয়াজ্জেম ভাতা চালু করার পরে ব্রাহ্মণ-পুরোহিতেরাও একই দাবি তুলেছিলেন। তাঁদের দাবিদাওয়ার বেশির ভাগই মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিচ্ছে তৃণমূল। ব্রাহ্মণ-পুরোহিতদের দাবিদাওয়ার মধ্যে রয়েছে সদস্যদের ভাতা, দুঃস্থ সদস্যদের বাসস্থান, তাঁদের স্বাস্থ্য বিমা, সংস্কৃত শিক্ষার পরিবেশ তৈরি ইত্যাদি। রাজীববাবু বলেন, “ওঁদের দাবিদাওয়া নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করব। সংগঠনের সদস্যেরা আশ্বাস দিয়েছেন, বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতিতে তাঁরা আমাদের সঙ্গে সহযোগিতা করবেন।’’
তৃণমূলের অন্দরে অনেকে মনে করছেন, তাঁদের দলের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু তোষণের অভিযোগ বারবার ওঠে। গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির ফল ভাল হওয়ায় সেই অভিযোগ খণ্ডন করতে পুরোহিতদের সমাবেশের কথা বলা হয়েছে।
রাজীববাবু অবশ্য এ কথা মানতে নারাজ। তাঁর বক্তব্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার মানুষের সামগ্রিক উন্নয়নের কথা ভাবে, সব ধর্মের মানুষকে সমান ভাবে দেখে। বিজেপি এবং হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি রাজনৈতিক স্বার্থে ধর্মকে কাজে লাগায়। তৃণমূল পুরোহিতদের জীবনধারণের মান উন্নত করার লক্ষ্যে এই সংগঠন তৈরি করছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পক্ষে এবং ধর্মীয় অপপ্রচার রোধেও কাজ করবে এই সংগঠন।
পুরোহিতদের নিয়ে তৃণমূল প্রথম সম্মেলন করে বীরভূমে। বিজেপির নেতারা তখন কটাক্ষ করেছিলেন, সংখ্যালঘু তোষণের পথে হেঁটে বিপাকে পড়েই তৃণমূল এ ভাবে ভাবমূর্তি উদ্ধারের চেষ্টা করছে। রবিবার বক্তব্য জানতে ফোন এবং এসএমএস করা হলেও বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ফোন ধরেননি। সিপিএম, কংগ্রেসের বক্তব্য, এতে শাসক দলের লাভ হবে না, উল্টে বিজেপিরই হাত শক্ত হবে।