উপনির্বাচনের দাবিতে নির্বাচন কমিশনের রাজ্য দফতরে যাবে তৃণমূল, জানালেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র
উপনির্বাচনের দাবিতে রাজ্য নির্বাচন দফতরে যাবে তৃণমূল। এমনটাই জানালেন তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। মঙ্গলবার উপনির্বাচন সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে পার্থ বলেন, ‘‘আমরা রাজ্যের নির্বাচন দফতরে কয়েক বার ধর্না দিয়েছি। দু'একদিনের মধ্যে আবার যাব।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘উপনির্বাচনের দাবি আমরা নিশ্চয়ই করতে পারি। কারণ এখন জনজীবন সচল রয়েছে। জনজীবন সচল না থাকলে আমরা কখনওই উপনির্বাচনের দাবি করতাম না। আমরা দাবি করছি, অবিলম্বে উপনির্বাচনের দিন ঘোষণা করা হোক।’’ তবে কবে তাঁরা রাজ্য নির্বাচন দফতরে যাবেন, সে বিষয়ে কোনও নির্দিষ্ট সময় বা দিনের কথা উল্লেখ করেননি শিল্পমন্ত্রী। উল্লেখ্য, গত ১৫ জুলাই দিল্লিতে মুখ্য নির্বাচন কমিশনের দফতরে গিয়ে রাজ্যে বকেয়া সাতটি বিধানসভার নির্বাচনের জন্য মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুশীল চন্দ্রের কাছে দরবার করেছিল তৃণমূলের প্রতিনিধি দল।
কোভিড সংক্রমণের জন্য উপনির্বাচন করা যাচ্ছে না, এমন দাবির পাল্টা যুক্তিতে তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বলেছিলেন, ‘‘বিধানসভা ভোটের সময় বাংলায় কোভিডের হার ছিল শতকরা ৩৩ শতাংশ। সেটা বর্তমানে এসে দাঁড়িয়েছে ২ শতাংশের নীচে। আমরা তাঁদের বুঝিয়েছি যে, রাজ্যের মানুষ চায় ছ’মাসের মধ্যেই উপনির্বাচন হোক। তার জন্য যদি প্রচারের সময় অল্প রাখা হয়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, তাতেও আমাদের বিশেষ আপত্তি নেই।’’
প্রসঙ্গত, রাজ্যের মোট সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রে ভোট বকেয়া রয়েছে। জঙ্গিপুর ও শামসেরগঞ্জে সাধারণ বিধানসভা নির্বাচনের সময়েই প্রার্থীদের মৃত্যুর জন্য ভোট করা যায়নি। আর ভোটের ফলাফল ঘোষণার আগেই করোনা সংক্রমণে মারা গিয়েছেন খড়দহ কেন্দ্রের বিজয়ী তৃণমূল প্রার্থী কাজল সিংহ। বিধায়ক পদে শপথ নেওয়ার পরে মারা গিয়েছেন গোসাবার তৃণমূল বিধায়ক জয়ন্ত নস্করও। এ ছাড়া, জিতেও সাংসদ পদে থেকে যাওয়ার কারণে দিনহাটা ও শান্তিপুর বিধানসভা থেকে পদত্যাগ করেছেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক ও জগন্নাথ সরকার। আবার ভবানীপুর বিধানসভা থেকে পদত্যাগ করেছেন কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তাই সব মিলিয়ে সাতটি কেন্দ্রে নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণার অপেক্ষায় তৃণমূল নেতৃত্ব।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আগামী ৫ নভেম্বরের মধ্যে উপনির্বাচনে জিতে সাংবিধানিক শর্ত পূরণ করতে হবে। সঙ্গে কৃষিমন্ত্রী শোভনদেবকেও কোনও একটি কেন্দ্র থেকে জিতে আসতে হবে। তবেই তিনিও মন্ত্রী পদে বহাল থাকতে পারবেন। তৃণমূল সূত্রে খবর, এই উপনির্বাচনে ভবানীপুরে মুখ্যমন্ত্রী ও খড়দহে শোভনদেব প্রার্থী হতে পারেন। তবে রাজ্য নির্বাচন দফতর সূত্রে খবর, তাঁরা উপনির্বাচনের যাবতীয় প্রস্তুতি রাখছেন। ইভিএম ও ভিভিপ্যাট চেকিং করে ত্রুটিপূর্ণ যন্ত্রগুলি বাদ দেওয়ার কাজ আগামী ৬ অগস্টের মধ্যে শেষ করে ফেলতে বলা হয়েছে।