বসুন্ধরা গোস্বামী। ফাইল চিত্র।
তৃণমূল মুখপত্রে উত্তর সম্পাদকীয় লিখে সিপিএমের রোষানলে পড়েছেন অজন্তা বিশ্বাস। এ বার তাঁর সমর্থনে এগিয়ে এলেন আরও এক প্রয়াত বামপন্থী নেতার কন্যা। মঙ্গলবার তৃণমূল মুখপত্রে উত্তর সম্পাদকীয় লিখে সিপিএম-কেই স্ট্যালিনিস্ট দল বলে আক্রমণ করলেন প্রয়াত আরএসপি নেতা ক্ষিতি গোস্বামীর কন্যা বসুন্ধরা গোস্বামী।
অনিল-কন্যার সমর্থনে বসুন্ধরা লিখেছেন, ‘‘ইতিহাসের অধ্যাপিকা অজন্তা বিশ্বাস ‘জাগো বাংলা’-য় একটি লেখা লিখেছেন। বিষয় ‘বঙ্গ রাজনীতিতে নারীশক্তি’। এই লেখাটির পর মিডিয়ায় দেখছি সিপিএমের তরফ থেকে অজন্তাকে আক্রমণ করা হচ্ছে। শো-কজ করা হবে, ব্যবস্থা নেওয়া হবে, এ সব বলা হচ্ছে। এই সব দেখে আমি বিস্মিত হয়ে যাচ্ছি। অজন্তার লেখাটি আমি পড়েছি। ইতিহাসের ছাত্রী, ইতিহাসের অধ্যাপিকা হিসেবে একটি সুন্দর লেখা লিখেছেন। লেখাটি তথ্যসমৃদ্ধ।’’ তিনি আরও লিখেছেন, ‘‘দলমত নির্বিশেষে সবার ভূমিকার সশ্রদ্ধ উল্লেখ করেছেন। বামপন্থী নেত্রীদের কথাও রয়েছে। আর এটা বাস্তব যে বঙ্গরাজনীতিতে নারীশক্তি নিয়ে লেখা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া সম্পূর্ণ হতে পারে না। অজন্তা এটা লিখে কোনও ভুল করেনি।’’
ক্ষিতি-কন্যা লিখেছেন, ‘‘সম্পাদকীয় বিভাগেও অজন্তার লেখায় বামপন্থীদের অংশ অটুট রেখে উদারতার পরিচয় দিয়েছেন। এ নিয়ে অজন্তাকে সিপিএমের আক্রমণ দেখে আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি ওরা স্ট্যালিনিস্ট দল।’’ প্রসঙ্গত, গত বুধবার সিপিএমের প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক তথা পলিটব্যুরো সদস্য অনিল বিশ্বাসের কন্যা অজন্তার লেখা তৃণমূলের মুখপত্রে প্রকাশিত হওয়ার পর হইচই শুরু হয় রাজ্য সিপিএমের অন্দরমহলে। অজন্তা বর্তমানে পার্টির সদস্য ও অধ্যাপক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। তাই অধ্যাপক সংগঠনের পক্ষ থেকেই তাঁকে শো-কজ করা হয়েছে। সঙ্গে পার্টির সাধারণ সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেছেন, ‘‘বিষয়টা আমি শুনেছি। অজন্তা যা করেছে, তা কোনও ভাবেই ছোট করে দেখা যায় না। অজন্তা ইউনিটের সদস্য। যা পদক্ষেপ করার আগে ইউনিট নেবে। তারপর কলকাতা জেলা কমিটি রয়েছে। তারপর আমরা। ওকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হবে। তবে ও যা করেছে, তা কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।’’ সূর্যকান্তর এমন বক্তব্য সামনে আসার পরেই মনে করা হচ্ছে, অজন্তার বিরুদ্ধে কঠিন পদক্ষেপ করার দিকেই এগোচ্ছে সিপিএম।
আর তারপরেই ক্ষিতি-কন্যা অজন্তার সমর্থনে এগিয়ে এসে সিপিএমকে তুলোধনা করলেন। সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে বামফ্রন্টের শূন্য হয়ে যাওয়ার জন্যও বড় শরিককেই দায়ী করেছেন তিনি। মনস্তত্ত্ববিদ বসুন্ধরা লিখেছেন, ‘‘সিপিএমের এই সব আচরণ বহু প্রতিভাকে বামফ্রন্টের স্রোত থেকে সরে যেতে বাধ্য করেছে। ওরা সবেতেই চক্রান্তের গন্ধ দেখে। বদনাম দেয়। তারপর শাস্তির পথে যায়। এই খেলা মানুষ ধরে ফেলেছেন। প্রকৃত বাম মনোভাবাপন্ন স্বাধীনতচেতা মানুষ কোনও অবস্থায় এটা মানবে না। এই করতে করতে বামফ্রন্টকে শূন্যে নামিয়েছে সিপিএম। তাতেও শিক্ষা হয়নি।’’