ফাইল চিত্র।
দলের অন্দরে ‘এক ব্যক্তি এক পদে’র পরবর্তী ধাপে পা রাখছে তৃণমূল। লোকসভা ভোটের কথা মাথায় রেখেই সাংগঠনিক জেলার সংখ্যা বাড়িয়ে বিকেন্দ্রীকরণের কথা ভাবা হয়েছে। এই কাঠামোয় বড় সংখ্যায় নতুন মুখও আনতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলীয় সূত্রে খবর, চলতি সপ্তাহেই সাংগঠনিক এই রদবদল চূড়ান্ত হয়ে যেতে পারে।
বিধানসভা নির্বাচনের পরেই দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক পদে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে এনে বড় রদবদলের বার্তা দিয়েছিল তৃণমূল। এ বার জেলা স্তরে মুখ বদলের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা চলছে দলের শীর্ষ স্তরে। তৃণমূল সূত্রে খবর, লোকসভা নির্বাচনের আগে সংগঠনকে আরও সক্রিয় করতে একাধিক জেলাকে দুই অথবা তিন ভাগে ভাগ করে দায়িত্ব বণ্টন করতে চাইছেন দলীয় নেতৃত্ব। শুক্রবার এ নিয়ে দলনেত্রী মমতার সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে অভিষেকের। বৈঠকে ছিলেন তৃণমূলের পরামর্শদাতা ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরও। সাংগঠনিক দায়িত্ব বিকেন্দ্রীকরণ ও নতুন মুখ তুলে আনার লক্ষ্যে একেবারে অঞ্চল কমিটিতেও রদবদলের প্রস্তাবও রয়েছে তাঁদের কাছে। তবে আপাতত জেলা স্তরে হাত দিতে চলেছে তৃণমূল। মূল দলের পাশাপাশি যুব ও ছাত্র সংগঠনেও রদবদলের প্রস্তাব রয়েছে।
‘এক ব্যক্তি এক পদ’ নীতি কার্যকর করতে উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া, পূর্ব মেদিনীপুর এবং পূর্ব বর্ধমানে সভাপতি বদল করার কথা। আবার এই জেলাগুলি একাধিক সাংগঠনিক জেলা কমিটিতে ভাগ করার কথাও রয়েছে। পাঁচটি লোকসভা আসনের উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় এখন সভাপতি রয়েছেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। একই সঙ্গে তিনি বনমন্ত্রীও। তাই তাঁর পরিবর্তে এক বা একাধিক সভাপতি করা হতে পারে ৩৩ আসনের এই জেলায়। আলোচনায় নাম রয়েছে পার্থ ভৌমিক, নারায়ণ গোস্বামী, গোপাল শেঠের মতো নেতাদের। ভাগ করা হতে পারে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা কমিটিও। কারণ ৩১ আসনের এই এই জেলায়ও ভাগ করার প্রয়োজন আছে বলে মনে করছেন দলীয় নেতৃত্ব।
একই সম্ভাবনা রয়েছে হাওড়ায়ও। এই জেলায় দলের শহর ও গ্রামীণ, দুই জেলা কমিটির সভাপতিই এখন মন্ত্রী। তাঁদের বদলে নতুন দু’জনকে আনা হতে পারে। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা সভাপতি সৌমেন মহাপাত্রও এখন মন্ত্রী। তাঁর বদলে এখানে নতুন সভাপতি আনা হতে পারে। সেই সঙ্গে রাজনৈতিক দিক থেকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ এই জেলা কমিটি ভাঙা হতে পারে দু’ভাগে। দু’টি লোকসভা আসনের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে দুই হাতে। জেলা কমিটি দু’ভাগে ভেঙে নতুন মুখ আনা হতে পারে পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামেও। দীর্ঘদিন ধরে সাংগঠনিক রদবদলের চর্চায় রয়েছে বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া।
উত্তরবঙ্গেও তৃণমূলের সাংগঠনিক রদবদল নিয়ে একাধিক প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। লোকসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে এখানেও আসন ভিত্তিক সভাপতি নিয়োগ করতে পারে তৃণমূল। ভোটের ফল ভাল হলেও সংগঠনের হাল ভাল নয় মুর্শিদাবাদে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মিটিয়ে সংগঠন চালাতে এই জেলায় কমিটি ভাগ করার পাশাপাশি নতুন মুখের সন্ধান করেছে তৃণমূল।
পাহাড়ের তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রে দলের অবস্থা একেবারেই ভাল নয়। তাই তার জন্য আলাদা ভাবনা রয়েছে তৃণমূলের।