কাটমানি নিয়ে ধুন্ধুমার, বক্সীর সামনেই বিক্ষোভ তৃণমূলে

তৃণমূল রাজ্য সভাপতি বিষয়টি নিয়ে কিছু বলতে চাননি। জেলা তৃণমূলের নেতারাও বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০১৯ ০২:৩৭
Share:

পথ-রুখে: রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর পথ আটকে বিক্ষোভ তৃণমূলের। বক্সী পরে ফিরেও গেলেন। নিজস্ব চিত্র

সবে বিজেপির বিক্ষোভ থেকে ফিরে দলেরই পার্টি অফিসে বসেছেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। তাঁর সামনেই এক তৃণমূল নেত্রী ও তাঁর স্বামীকে ঘেরাও করে তাঁরা ‘কাটমানি’ নিয়েছেন অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ শুরু করেন দলেরই একদল কর্মী। রাজ্য সভাপতির বারবার অনুরোধেও কাজ হয়নি। শেষ পর্যন্ত ওই নেতা-নেত্রীকে পার্টি অফিস থেকে বের করে দেওয়া হয়। সোমবার মাথাভাঙার কেন্দ্রীয় কার্যালয়তে এমনই ঘটনা ঘিরে শোরগোল পড়েছে গোটা কোচবিহারে।

Advertisement

ওই নেত্রীর নাম কল্যাণী পোদ্দার। তিনি কোচবিহার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারপার্সন। তাঁর স্বামী চন্দন দাস মাথাভাঙা পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান।

তৃণমূল রাজ্য সভাপতি বিষয়টি নিয়ে কিছু বলতে চাননি। জেলা তৃণমূলের নেতারাও বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ বলেন, “দল কোচবিহার আসনে হেরে গিয়েছে। তাই কর্মীদের সামান্য ক্ষোভ-বিক্ষোভ থাকতে পারে। সেটা কোনও বিষয় নয়। সব বিষয়ে আলোচনা করা হবে।” কল্যাণী অবশ্য ঘটনার পর থেকে মোবাইল সুইচড অফ করে রেখেছেন। তাঁর স্বামী চন্দন ঘটনার পিছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে পাল্টা অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, “পরিকল্পিত ভাবে আমাদের হেয় করার চেষ্টা হচ্ছে। এর পিছনে রাজনীতি রয়েছে। সে জন্যেই এমন মিথ্যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে।”

Advertisement

দলীয় সূত্রের খবর, কল্যাণী জেলা তৃণমূলের পুরনো নেতা-নেত্রীদের এক জন হিসেবেই পরিচিত। এক সময় তৃণমূলের ডাকসাইটে নেত্রী বলেও পরিচিত ছিলেন। পরে দল ক্ষমতায় এলে তাঁকে কোচবিহার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান করা হয়। তাঁর স্বামীও পুরভোটে জিতে মাথাভাঙা পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান হন।

এ দিন তাঁদের দু’জনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূলের মাথাভাঙার নেতা নজরুল হক এবং তাঁর অনুগামীরা। পার্টি অফিসের ভিতরেই একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন তাঁরা।

তাঁদের অভিযোগ ছিল, প্রাথমিকে চাকরির নাম করে, বদলির নাম করে টাকা তোলা হয়েছে। দলের তরুণ-তরুণীদের বঞ্চিত করে টাকার বিনিময়ে বাইরের মানুষকে চাকরি দেওয়া হয়েছে।

সেই টাকার হিসেব চেয়ে সরব হন কর্মীদের অনেকে। কেন এমনটা হল সুব্রতবাবুর কাছেও জানতে চান ওই কর্মীরা।

দলের জেলা নেতারা বার বার কর্মীদের থামানোর চেষ্টা করলেও লাভ হয়নি। বিক্ষোভ চলতেই থাকে। ওই মিটিং থেকে ওই নেতা-নেত্রীকে বের করে দেওয়ার দাবি তোলা হয়। নজরুল হককেও দলের নেতাদের সামনে চিৎকার করতে দেখা যায়। বেশ কিছুক্ষণ এমনটা চলার পরে কল্যাণী ও তাঁর স্বামী বেরিয়ে যান।

মিটিং না করে বেরিয়ে পড়েন সুব্রত বক্সীও। নজরুল পরে বিষয়টি নিয়ে কিছু বলতে চাননি। তিনি বলেন, “যা বলার রাজ্য নেতাকে বলেছি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement