কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। ফাইল চিত্র।
বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসের বাইরে তৃণমূলপন্থী আইনজীবীদের একাংশের অবস্থান বিক্ষোভ। এজলাসের বাইরে গেট আটকে কোর্ট বয়কট করেন আইনজীবীদের একাংশ। এর ফলে স্তব্ধ হয়ে যায় বিচারপতি মান্থার বেঞ্চে বিচারপ্রক্রিয়া।
এই বিক্ষোভের বিরোধিতা করেন কংগ্রেসের আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী। তিনি এ বিষয়ে বিচারপতি মান্থাকে হস্তক্ষেপ করার অনুরোধ করেন। আপাতত বিচারপতি এজলাস ছেড়ে উঠে গিয়েছেন।
১৩ নম্বর আদালত কক্ষে বিচারপতি মান্থাকে বয়কট করা নিয়ে প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন কেন্দ্রের ডেপুটি সলিসিটর জেনারেল বিল্বদল ভট্টাচার্য। কী ভাবে এক জন বিচারপতির এজলাসের বাইরে ধর্না দিয়ে প্ল্যাকার্ড তুলে বিক্ষোভ দেখানো হচ্ছে, সেই ছবি তুলে ধরেন আইনজীবী শ্রীজীব চক্রবর্তী। আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের এজলাসে গিয়ে বিষয়টি নিয়ে নিন্দা প্রকাশ করেন। তাঁর আবেদন, বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতিকে ডেকে প্রয়োজনে সুপ্রিম কোর্টে বিষয়টি তোলা হোক।
প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এ প্রসঙ্গে বলেন, “এটা উচিত নয়। সব তথ্যপ্রমাণ নিয়ে আসুন। বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতিকে ডেকে পাঠাচ্ছি। এই ঘটনা হওয়া উচিত নয়। বিষয়টি আমরা দেখেছি।” প্রধান বিচারপতি এই ঘটনায় বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এবং রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলকে ডেকে পাঠান। তাঁদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চান তিনি। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “বিচারপতির এজলাস কী ভাবে বয়কট করা যেতে পারে?”
এজি এসে প্রধান বিচারপতিকে জানান, তিনি সবেমাত্র বিষয়টি জানতে পেরেছেন। এর পরই প্রধান বিচারপতি বলেন, “কেন বোঝেন না, এই সব সুপ্রিম কোর্টে গেলে সমস্যা তৈরি হবে। ছবি, ভিডিয়ো সব রয়েছে। কেন সমস্যা ডেকে আনছেন?”
১৩ নম্বর কোর্টের সামনে এসে এজি বিক্ষোভরত আইনজীবীদের বলেন, “এটা ভাল হচ্ছে না। এগুলো করা উচিত নয়। অবস্থান বিক্ষোভ তুলে নিন। আমি অনুরোধ করছি।” তৃণমূলপন্থী আইনজীবীদের একাংশ এজিকে পাল্টা বলেন, “অনেক মামলায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। আরও যদি সমস্যা তৈরি হয় বা মামলা খারিজ হয়ে যায়, তখন তার দায়িত্ব কে নেবেন?” প্রধান বিচারপতি বলেন, “সাড়ে ১১টা পর্যন্ত সময় দেওয়া হচ্ছে। সমস্যা মিটিয়ে নিন। না হলে পদক্ষেপ করা হবে।”
এর আগেও বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন তৃণমূলপন্থী বলে পরিচিত আইনজীবীদের একাংশ। বিচারপতি মান্থার বেঞ্চ থেকে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা এবং অতিসক্রিয়তার অভিযোগ সংক্রান্ত মামলা সরানোর দাবিতে গত সেপ্টেম্বরে এই বিক্ষোভ দেখানো হয়। অন্য আইনজীবীদের এজলাসে ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। বিজেপি এবং বাম মনোভাবাপন্ন আইনজীবীদের এজলাসে ঢুকতে বাধা দেওয়া হলে আইনজীবীদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়ে যায়।