TMC

‘ভোটার কার্ডের ত্রুটি দূর না করে আধার সংযুক্তিকরণ বিপজ্জনক’, কমিশনে গিয়ে বলল তৃণমূল

তৃণমূলের অভিযোগ, ভোটার তালিকায় কারচুপির কথা জানিয়ে গত ৬ মার্চ কমিশনের কাছে যে স্মারকলিপি তারা জমা দিয়েছিল, তার গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নগুলির এখনও কোনও উত্তর মেলেনি।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২৫ ১৪:৩৩
Share:

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

তৃণমূলের অভিযোগ, ভোটার তালিকায় কারচুপি সমস্যার সমাধান না করেই ভোটার কার্ডের সঙ্গে আধার কার্ডের সংযুক্তিকরণ নিয়ে সক্রিয় হয়েছে নির্বাচন কমিশন। শুক্রবার দিল্লিতে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারের সঙ্গে দেখা করে তৃণমূল সাংসদদের একটি প্রতিনিধিদল স্মারকলিপি জমা দিয়ে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর চেয়েছে।

Advertisement

কমিশনের কাছে তৃণমূলের অভিযোগ, ভোটার তালিকায় কারচুপির কথা জানিয়ে গত ৬ মার্চ কমিশনের কাছে যে স্মারকলিপি তারা জমা দিয়েছিল, তার গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নগুলির এখনও কোনও উত্তর মেলেনি। প্রশ্নগুলি হল: কতগুলি ভোটার কার্ড সত্যিই যাচাই করা হয়েছে? কেন নির্বাচন কমিশন এখনও স্পষ্ট ভাবে জানায়নি যে আধার সংযোগ ঐচ্ছিক? কেন সুপ্রিম কোর্টে দেওয়া প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশন ফর্ম ৬-বি সংশোধন করেনি? কেন নির্বাচন কমিশন আধার-ভোটার আইডি সংযোগ ঐচ্ছিক করতে কেন্দ্রের অনুমোদন চেয়েছিল? এবং কেন নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের অসম্মতিকে আদালতে চ্যালেঞ্জ করেনি?

শুক্রবার কমিশনের দফতরে স্মারকলিপি দেওয়ার পরে তৃণমূল সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এটি একটি বিপজ্জনক প্রবণতা। আমরা দেখেছি, একই এপিক নম্বরে ৬০টি ভোটার কার্ড রয়েছে। আগে কমিশনকে নির্ভুল ভোটার কার্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।’’ সংসদের বাজেট অধিবেশনে তৃণমূল দাবি জানানো সত্ত্বেও ভোটার কার্ডে ‘জালিয়াতি’ নিয়ে আলোচনার অনুমতি দেওয়া হয়নি বলে জানান তিনি।

Advertisement

ভোটার কার্ডের এপিক নম্বরের সঙ্গে আধার কার্ড সংযোগ নিয়ে পদক্ষেপ করা হবে বলে গত ১৮ মার্চ জানিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। জানানো হয়, আধার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ওই বিষয়ে আলোচনাও হয়েছে। শীঘ্রই ওই কাজের জন্য আধার কার্ডের প্রযুক্তিবিদদের সঙ্গে কমিশনের আধিকারিকেরা বৈঠক করবেন। কমিশন সূত্রে খবর, শুধুমাত্র সংযোগ নয়, আধারের মতো ভোটার কার্ডও প্রযুক্তিগত ভাবে কাজ করবে। ভূতুড়ে ভোটার নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে সরব হয়েছে তৃণমূল-সহ বেশ কয়েকটি বিরোধী দল। সেই আবহেই পদক্ষেপের কথা জানিয়েছিলেন জ্ঞানেশ।

প্রসঙ্গত, ‘এক ভোটার এক এপিক (ভোটার কার্ড)’ চালুর দাবি দেশের প্রথম রাজনৈতিক দল হিসেবে তৃণমূলই তুলেছে। গত ৬ মার্চ রাজ্যের শাসকদল রাজ্য নির্বাচন কমিশনে গিয়ে ভোটার কার্ডে ‘ইউনিক আইডি’ চালুর দাবি জানিয়েছিল। কমিশনে স্মারকলিপি দিয়ে বেরিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেছিলেন, ‘‘বাংলার ভোটকে প্রহসনে পরিণত করার চেষ্টা করছে বিজেপি। একই এপিক নম্বরে বিভিন্ন রাজ্যে ভোটার কার্ড থাকা চলবে না। আধার কার্ড, পাসপোর্টে যেমন থাকে, তেমন ভাবে ভোটার কার্ডেও ইউনিক আইডি চালু করতে হবে।’’

তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম ভুয়ো ভোটার, একই নম্বরের একাধিক ভোটার আইডি কার্ড নিয়ে সরব হয়েছিলেন গত মাসের গোড়ায়। এর পরে নির্বাচন কমিশন বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানায় যে, অনেক ক্ষেত্রেই এপিক নম্বর এক হলেও ভোটকেন্দ্র এবং বিধানসভা কেন্দ্র আলাদা হয়। এপিক কার্ডে যে কেন্দ্রের ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে, শুধু সেখানেই ভোট দেওয়া যাবে। অন্য কোথাও নয়। কিন্তু এর পরে কার্যত ভুল স্বীকার করে কমিশন বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছিল, ত্রুটিপূর্ণ ভোটার কার্ডের ব্যাপারে তিন মাসের মধ্যে যথাযথ পদক্ষেপ করা হবে। তাতে সংশ্লিষ্ট ভোটারদের জাতীয় ইউনিক নম্বর দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল।

২০২৩ সালে আধারের সঙ্গে ভোটার সংযুক্তি নিয়ে এর আগে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হয়েছিল। সেই সময় শীর্ষ আদালতে কমিশন জানিয়েছিল, আধারের সঙ্গে ভোটার সংযোগ বাধ্যতামূলক নয়। কমিশন সূত্রে খবর, এখন দেশে ভোটার সংখ্যা ১০০ কোটির কাছাকাছি। ২০২৩ সালে সারা দেশ জুড়ে ৬৬ কোটি ২৩ লক্ষ আধার কার্ডের নম্বর ভোটার কার্ডের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। এ বার সব ভোটার কার্ডের সঙ্গে আধার জোড়ার কাজ করতে চায় কমিশন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement