অনেক গ্রন্থাগারই ধুঁকছে, তৃণমূলে প্রশ্ন পুরস্কার নিয়ে 

গণ গ্রন্থাগার দিবসে সরকার পোষিত সেরা গ্রন্থাগারগুলিকে পুরস্কৃত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ অগস্ট ২০১৯ ০০:৩২
Share:

প্রতীকী ছবি।

নানান ক্ষেত্রে পুরস্কারের পাশাপাশি গ্রন্থাগার পুরস্কারও দিচ্ছে রাজ্য সরকার। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে যে-সব গ্রন্থাগারের বেহাল দশা, তাদের দিকে নজর না-দিয়ে এমন পুরস্কারের আদৌ কোনও সার্থকতা আছে কি? এবং প্রশ্নটা উঠছে শাসক দলেই।

Advertisement

গণ গ্রন্থাগার দিবসে সরকার পোষিত সেরা গ্রন্থাগারগুলিকে পুরস্কৃত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য। এই উদ্যোগকে সাধারণ ভাবে স্বাগত জানালেও সরকার পোষিত গ্রন্থাগারগুলির পরিকাঠামো এবং পরিচালন পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলছে ‘সাধারণের গ্রন্থাগার এবং কর্মী কল্যাণ সমিতি’। তাদের বক্তব্য, পরিকাঠামো শিকেয় তুলে এমন পুরস্কার কর্মসূচি বাস্তবসম্মত নয়। ওই সংগঠন শাসক দল তৃণমূলেরই অধীনে রয়েছে।

সমিতির নেতারা জানাচ্ছেন, এক সময় রাজ্যে প্রায় আড়াই হাজার সরকার পোষিত গ্রন্থাগার ছিল। সেগুলির জনপ্রিয়তাও ছিল যথেষ্ট। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিকাঠামো বেহাল হতে শুরু করে। প্রায় এক হাজার গ্রন্থাগার কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছে। গ্রন্থাগার পরিচালনার জন্য আগে সরকারি ভাবে ৫৫২০টি অনুমোদিত পদের অস্তিত্ব ছিল। কিন্তু সেখানে কর্মী-সংখ্যা কমে হয়েছে ২১০০। অর্থাৎ ৩৪২০টি পদ খালি। সংগঠনের সভাপতি সইদুল ইসলাম এবং প্রধান উপদেষ্টা মনোজ চক্রবর্তী জানান, এক-এক জন গ্রন্থাগারিককে একাধিক গ্রন্থাগারের দায়িত্ব সামলাতে হচ্ছে। কোথাও কোথাও আবার অস্থায়ী ভাবে নিযুক্ত কর্মীকে গ্রন্থাগার সামলানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

ওই নেতাদের বক্তব্য, গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা যে-কেউ করতে পারেন না। রীতিমতো প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হয়। যে-সব অস্থায়ী কর্মীর প্রশিক্ষণ নেই, তাঁরা কতটা দক্ষতার সঙ্গে গ্রন্থাগার সামলাতে পারবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয় স্বাভাবিক ভাবে। ‘‘আমরা দফতরকে বহু বার এই সব সমস্যার কথা জানিয়েছি। কিন্তু কোনও ইতিবাচক পদক্ষেপ করা হয়নি। পুরস্কার কর্মসূচি ভাল। কিন্তু তা সমস্যার সমাধান করতে পারবে না। আমরা মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করছি,’’ বলেন সমিতির দুই নেতা।

এমন অভিযোগ সম্পর্কে গ্রন্থাগার দফতরের বক্তব্য জানা যায়নি। ফোন ধরেননি গ্রন্থাগারমন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। মোবাইলে বার্তা পাঠানো হলেও উত্তর মেলেনি। তবে সরকারি সূত্রের খবর, গণ গ্রন্থাগার দিবস উপলক্ষে ৩১ অগস্ট সেরা গ্রন্থাগার সম্মান কর্মসূচি পালিত হবে। শহর, মহকুমা গ্রামীণ, প্রাথমিক ও আঞ্চলিক গ্রন্থাগারগুলির মধ্য থেকে একটি করে গ্রন্থাগারকে সেরা হিসেবে পুরস্কৃত করা হবে। বই সংগ্রহ, সদস্য, বরাদ্দের খরচ-সহ গ্রন্থাগার পরিকাঠামোর তথ্য দফতরের কাছে পাঠাতে হবে গ্রন্থাগারগুলির কর্তৃপক্ষকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement