গারুলিয়া পুরসভা পুনরুদ্ধার করল তৃণমূল।
হাতছাড়া হওয়া আরও এক পুরসভার প্রত্যাবর্তন তৃণমূলে। অধিকাংশ কাউন্সিলর পাশ থেকে সরে যাওয়ায় আগেই চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন সুনীল সিংহ। শুক্রবার ভোটাভুটিতে নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন তৃণমূলের সঞ্জয় সিংহ।
গারুলিয়া পুরসভার ২১ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ১৩ জন এ দিন ভোটাভুটিতে উপস্থিত ছিলেন। ১৩ জনই তৃণণূলের কাউন্সিলর। বিজেপির সঙ্গে থাকা ৭ জন এবং ফরওয়ার্ড ব্লকের ১ কাউন্সিলর এ দিন ভোটাভুটিতে অনুপস্থিত থাকেন। ফলে তৃণমূলের নতুন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী সঞ্জয় সিংহ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এ দিন পুরপ্রধান নির্বাচিত হয়েছেন।
লোকসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই বেশ কয়েকটি পুরসভার হাতবদল হয়েছিল। অধিকাংশই ছিল উত্তর ২৪ পরগনায়। তৃণমূল ছেড়ে ওই সব পুরসভার সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সিলর নাম লিখিয়েছিলেন বিজেপিতে। কিন্তু বনগাঁ, নৈহাটি-সহ বেশ কয়েকটি পুরসভায় সে সময়ে নতুন বোর্ড গঠন আটকে দিয়েছিল রাজ্যের পুর দফতর। কিন্তু ভাটপাড়া, হালিশহর, কাঁচরাপাড়া, গারুলিয়ার বোর্ড বিজেপির দখলে যাওয়া রোখা যায়নি। কারণ ওই সব পুরসভার ক্ষেত্রে শুধু সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সিলররা নন, চেয়ারম্যানরাও দল বদলেছিলেন।
আরও পড়ুন: দুষ্মন্তর ‘চাবি’তেই খুলছে হরিয়ানায় সরকার গঠনের ‘তালা’? অমিত শাহের বাড়িতে জেজেপি সুপ্রিমো
সেই সাফল্য কিন্তু বিজেপি ধরে রাখতে পারল না। বনগাঁ বা নৈহাটির ক্ষেত্রে তো অনাস্থা প্রস্তাবের উপরে ভোটাভুটির আগেই দলে ফেরানো হয়েছিল কাউন্সিলরদের। আর কাঁচরাপাড়া বা হালিশহরে চেয়ারম্যানরাও বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরেছিলেন। এ বার গারুলিয়া পুরসভাও বিজেপির হাত থেকে বেরিয়ে গেল।
নোয়াপাড়া থেকে তৃণমূলের টিকিটে জয়ী হওয়া বিধায়ক সুনীল সিংহই ছিলেন গারুলিয়া পুরসভার চেয়ারম্যান। লোকসভা নির্বাচনের পরে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। গারুলিয়া পুরসভার অধিকাংশ কাউন্সিলরকে সঙ্গে নিয়েই তিনি বিজেপিতে গিয়েছিলেন। অর্থাৎ সুনীল সিংহকে পেয়ে বিজেপির শুধু এক জন বিধায়ক বাড়েনি, একটা গোটা পুরসভাও তাদের দখলে গিয়েছিল।
আরও পড়ুন: বদলি হলেন সত্যপাল, কেন্দ্রশাসিত কাশ্মীরের প্রথম উপরাজ্যপাল হচ্ছেন গিরীশচন্দ্র মুর্মু
তৃণমূল চুপচাপ বসে থাকেনি। হাতছাড়া হওয়া অন্য পুরসভাগুলির মতো গারুলিয়ার বোর্ড পুনর্দখলের চেষ্টাও শুরু হয়ে গিয়েছিল। অধিকাংশ কাউন্সিলরকে নিজেদের পক্ষে টানতে পারার পরে সেপ্টেম্বর মাসে সুনীল সিংহের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনে তৃণমূল। অনাস্থা প্রস্তাবের উপরে ভোটাভুটিতে জিততে পারবেন না বুঝে সুনীল সিংহ নিজেই ইস্তফা দিয়ে দেন চেয়ারম্যান পদ থেকে। ফলে গারুলিয়ার পুরবোর্ডে তৃণমূলের দখল কায়েম হওয়ার পথে শুধু আনুষ্ঠানিকতাটুকু বাকি ছিল, শুক্রবার সেটাও সম্পন্ন করে নিল তৃণমূল।