৭,৮০০ কোটি আয় প্রতিবাদের তেলেই

ভোট মিটতেই বেড়েছে রান্নার গ্যাসের দাম। বাড়ছে-কমছে পেট্রল, ডিজেলের দরও। এরই মধ্যে পেট্রোপণ্যের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছে তৃণমূল। কিন্তু নবান্নে অর্থ দফতরের কর্তারা তেল থেকে রোজগারে স্বাভাবিক ভাবেই খুশি।

Advertisement

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৯ ০৩:৪৪
Share:

গ্যাস ও পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে গোলপার্ক থেকে হাজরা পর্যন্ত তৃণমূলের মিছিল। নিজস্ব চিত্র

পেট্রোপণ্যের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে মঙ্গলবার থেকে রাস্তায় নেমেছে তৃণমূল। কিন্তু অর্থ দফতর সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী, ২০১৮-১৯ সালে সেই তেল থেকেই বিক্রয় কর হিসেবে ৭,৮০০ কোটি টাকা ঘরে তুলেছে রাজ্য। কর্তারা মানছেন, ওই অঙ্ক ভাঁড়ারে এসেছে তেলের দাম চড়া থাকার কারণেই। শুধু তা-ই নয়। মাঝে রাজ্য প্রতি লিটার তেলে যে ১ টাকা ছাড় দিয়েছিল, তা না দিলে, ওই খাতে রাজস্বের পরিমাণ ১০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেত বলে তাঁদের দাবি।

Advertisement

ভোট মিটতেই বেড়েছে রান্নার গ্যাসের দাম। বাড়ছে-কমছে পেট্রল, ডিজেলের দরও। এরই মধ্যে পেট্রোপণ্যের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছে তৃণমূল। কিন্তু নবান্নে অর্থ দফতরের কর্তারা তেল থেকে রোজগারে স্বাভাবিক ভাবেই খুশি। এক রাজস্ব কর্তার কথায়, ‘‘তেলের দাম বাড়লে আমজনতার কষ্ট হয় ঠিকই, কিন্তু তেমনই রাজকোষেও বাড়তি কর আসে। তা ফের জনকল্যাণেই খরচ হয়।’’

অর্থ দফতরের একাংশের মতে, জিএসটি চালু হওয়ার পরে রাজ্যের নিজস্ব কর আদায়ের ক্ষমতা সীমিত হয়ে গিয়েছে। হাতে রয়েছে মদ, লটারি, স্ট্যাম্প ডিউটি, জমির খাজনা, গাড়ির কর, তেল। সে ক্ষেত্রে পেট্রোপণ্যের দাম বাড়লে ৮-১০ হাজার কোটি আদায়ের সুযোগ থাকে।

Advertisement

পেট্রোপণ্য এখনও জিএসটির আওতায় আসেনি। অধিকাংশ রাজ্য তা চায়ও না। এ রাজ্যে পেট্রলের মূল দামের উপরে ২৫% হারে বিক্রয় কর বসে। ডিজেলে ১৭%। ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে তেলের দাম টানা বাড়ার সময়ে পশ্চিমবঙ্গের তেল থেকে কর আদায় হয়েছিল ১২,৯৯৯ কোটি টাকা। ২০১৮-১৯ সালেও তা অন্তত ১০ হাজার কোটি পেরোবে বলে আশা ছিল। কিন্তু গত ১২ সেপ্টেম্বর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
ঘোষণা করেছিলেন, তেলের দাম মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষকে কিছুটা সুরাহা দিতে তিন মাসের জন্য লিটারে ১ টাকা ছাড় দেবে রাজ্য। প্রথম দফার সময়সীমা শেষ হওয়ার পরে ১২ ডিসেম্বর তা আবার জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এখন দেখার, চলতি মাসের পরেও রাজ্য তেলের দামে ওই ছাড় বহাল রাখে কি না। অর্থ দফতরের কর্তারা অবশ্য মনে করেন, ওই ছাড় বহাল থাকলে, আদপে রাজস্ব হাতছাড়া হবে চলতি আর্থিক বছরেও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement