সুখেন্দুশেখর রায়। —ফাইল ছবি।
সুখেন্দুশেখরের ‘প্রত্যাবর্তন’! তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় সম্প্রতি ‘অস্বস্তি’র কারণ হয়ে উঠেছেন দলের কাছে। মেয়েদের ‘রাত দখল’কে সমর্থন করেছেন, আরজি কর-তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে গ্রেফতারি চেয়েছেন কলকাতার পুলিশ কমিশনারের। তার পর লালবাজারের ডাক পেয়ে আদালতে বলেছেন, বিভ্রান্ত হয়ে ভুল তথ্য দিয়ে ফেলেছেন। সেই সুখেন্দুশেখরই শুক্রবার আবার এক তাৎপর্যপূর্ণ পোস্ট করলেন সমাজমাধ্যমে। ভারত-চিন যুদ্ধের সময়ে প্রকাশিত একটি কার্টুন শেয়ার করলেন তিনি। যেখানে ‘গুজব’ এবং ‘তথ্য’ নিয়ে ব্যঙ্গ রয়েছে।
কার্টুনটি ১৯৬২ সালের ২৬ ডিসেম্বরের। শিল্পী আর কে লক্ষ্মণ। সেখানে দেখা যাচ্ছে পুলিশ এক ব্যক্তিকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। তলায় লেখা, ‘‘এটা ঠিক যে, আপনি গুজব ছড়াচ্ছিলেন না। আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ, আপনি ঠিক তথ্য ছড়াচ্ছিলেন।’’ পুরনো সেই কার্টুনটি নিজের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে শেয়ার করেছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর। সঙ্গে একটি অট্টহাসির ইমোজি।
এর আগে আরজি কর-কাণ্ডের প্রেক্ষিতে গত ১৪ অগস্ট মেয়েদের ‘রাত দখল’কে সমর্থন করেছিলেন তিনি। এমনকি, নিজের মতো করে প্রতিবাদ কর্মসূচিও সেরেছিলেন। যোধপুর পার্কে নেতাজি মূর্তির সামনে বিকেল ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ধর্নায় বসেছিলেন সুখেন্দুশেখর। আরজি কর-কাণ্ডে রাজ্য সরকার যখন অস্বস্তিতে, তখন সুখেন্দুর এ হেন কীর্তিকলাপে শাসকদল আরও বিড়ম্বনায় পড়ে। সুখেন্দু যদিও সেখানে থামেননি। এর পর তিনি কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল এবং আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে সিবিআই হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার দাবি জানিয়ে পোস্ট করেন। নিজেদের দলের সাংসদের এমন পোস্টে আবারও অস্বস্তিতে পড়ে তৃণমূল। এর পর তাঁকে কলকাতা পুলিশ ডেকে পাঠায়। নোটিস পেয়েই হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন সুখেন্দু। আদালতে জানান, বিভ্রান্ত হয়ে ভুল তথ্য পোস্ট করেছেন। পরে সেই মামলা খারিজও করে দেয় আদালত। সেটি গত বুধবারের ঘটনা।
এর পর শুক্রবার ফের এক্সে পোস্ট করেন সুখেন্দুশেখর। এ বার শিল্পী আর কে লক্ষ্মণের কার্টুন। ‘গুজব’ ছড়িয়েছেন বলে পুলিশ তাঁকে ডেকে পাঠায়। আদালতে নিজেই দাবি করলেন, বিভ্রান্ত হয়ে ভুল তথ্য ছড়িয়ে ফেলেছেন। সেই তিনিই শুক্রবার যে কার্টুন পোস্ট করলেন, তাতে ‘ব্যঙ্গ’ স্পষ্ট। এবং সেই ব্যঙ্গ আসলে ‘গুজব’ এবং ‘সঠিক’ তথ্য নিয়ে। রাজনীতির কারবারিদের একাংশের মতে, তৃণমূলের মুখপত্রের সম্পাদক সুখেন্দুশেখর এই কার্টুন পোস্ট করে আবারও দলকেই অস্বস্তিতে ফেললেন। একই সঙ্গে কটাক্ষ করতে চেয়েছেন পুলিশকেও।