স্বামীজির ছবি ও ফুটবল হাতে উত্তর কলকাতার প্রতিবাদ মিছিলে তৃণমূল যুব নেতৃত্বের সঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী শশী পাঁজা। ছবি: সংগৃহীত।
খেলা হবে স্লোগান দিয়ে তৃতীয় বারের জন্য পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতায় এসেছিল তৃণমূল। এ বার খেলা হল রাজপথে। তবে প্রতিবাদের অস্ত্র হিসাবে ফুটবল খেলাকে ব্যবহার করল বাংলার শাসকদলের যুব সংগঠন। বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের ‘গীতা ও ফুটবল’ নিয়ে রাজ্য জুড়ে তৃণমূলের এই আন্দোলন হল রাজ্য জুড়েই। তবে মূল প্রতিবাদ বিক্ষোভটি সংগঠিত হয়েছিল কলকাতা রাজপথে। মঙ্গলবার রাজপথে ফুটবল পায়ে প্রতিবাদে সামিল হলেন রাজ্যের বাণিজ্যমন্ত্রী শশী পাঁজা থেকে শুরু করে যুব তৃণমূলের রাজ্য সভানেত্রী সায়নী ঘোষ। শ্যামবাজার পাঁচমাথার মোড় থেকে সিমলায় স্বামীজির বাড়ি পর্যন্ত মিছিলে পা মেলাতে মেলাতে ফুটবল পাস করলেন পরস্পরকে। তাদের সঙ্গে পা ফুটবল খেললেন উত্তর কলকাতার যুব নেতারাও।
উল্লেখ্য, রবিবার সকালে লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠ অনুষ্ঠানে যোগদান করতে ব্রিগে়ড এসেছিলেন সুকান্ত। সেখানেই সংবাদমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বালুরঘাটের সাংসদ বলেন, ‘‘বাংলা বহু যুগ ধরে সনাতন সংস্কৃতির ধারক এবং বাহক। ভক্তি আন্দোলনের পীঠস্থানও ছিল। মাঝে বাংলা কিছুটা ডিরেল্ড হয়েছিল বামপন্থীদের দ্বারা।’’ এরপর তিনি আরও বলেন, ‘‘এই দেখতে পাচ্ছেন না অল্প বিদ্যা ভয়ঙ্করী। গীতাপাঠের চেয়ে ফুটবল খেলা ভাল যাঁরা বলছেন, তাঁরা বামপন্থী প্রোডাক্ট আর কী। এখন বাংলা সঠিক পথে যাবে। আজ থেকে শুরু হচ্ছে সঠিক পথে যাওয়া।’’
তাঁর এমন মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় শাসকদলের নেতারা। রবিবার সন্ধ্যায় তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করে সুকান্তর মন্তব্যের সমালোচনা করেন মন্ত্রী ব্রাত্য বসু এবং শশী পাঁজা-সহ তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। সোমবার বড়দিনের ছুটি থাকায় কোনও প্রতিবাদ বিক্ষোভ করেননি তৃণমূলের যুবরা। মঙ্গলবার রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদ কর্মসূচির কথা ঘোষণা করে যুব তৃণমূল নেতৃত্ব। কর্মসূচি শেষে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সায়নী বলেন, ‘‘সুকান্তবাবু নিজে বাঙালি। তিনি কীভাবে এই অদ্ভুত কথাটি বলে দিলেন? ওনার ভিতরে রাগ আছে, দুঃখ আছে। ক্ষোভে উনি ফেটে পড়ছেন। ওনাকে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে জবাবদিহি করতে হচ্ছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘কেন হেরে যাচ্ছ? কেন এত কম সিট আসছে? কেন মানুষের মধ্যে হিংসার বীজ বপণ করতে পারছ না? সেই সব জবাব উনি দিতে না পারার হতাশা থেকে এইসব বলেছেন।’’ সুকান্তকে তাঁর মন্তব্যের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে বলেও মন্তব্য করেছেন সায়নী।