ফাইল চিত্র।
পশ্চিমবঙ্গ-সহ সীমান্তবর্তী সব রাজ্যে বিএসএফের কাজের পরিধি বাড়ানোর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সংসদীয় কমিটিতে সরব হল তৃণমূল কংগ্রেস। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বাংলাদেশ ও পাকিস্তান সীমান্তবর্তী তিন রাজ্যে সীমান্ত থেকে ৫০ কিলোমিটার ভিতর পর্যন্ত বিএসএফ গ্রেফতার, তল্লাশি ও বিতর্কিত সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করতে পারবে। সূত্রের খবর, কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে ওই বৈঠকে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তৃণমূলের সদস্য।
আজ ওই বৈঠকে যোগ দিতে দিল্লি আসেন কমিটির সদস্য তথা তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। নতুন কমিটি গঠন হওয়ার পর আজই ছিল তার প্রথম বৈঠক। সূত্রের খবর, বৈঠকের শুরুতেই তৃণমূলের পক্ষ থেকে দাবি তোলা হয়, আলোচনা এবং রিপোর্ট তৈরির জন্য, যে পাঁচটি বিষয় ইতিমধ্যেই নথিবদ্ধ হয়েছে, সেখানে উপকূলবর্তী নিরাপত্তার সঙ্গে সীমান্ত নিরাপত্তাকেও জুড়ে দেওয়া হোক। চেয়ারম্যান আনন্দ শর্মা সম্মতি দেন।
সূত্রের খবর, কমিটির চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলিকে ডেকে এই নিয়ে তাদের মতামত জানতে চাওয়া হবে। কমিটি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিনিধিদের ডেকেও বিষয়টি নিয়ে খতিয়ান চাইবে বলেই জানা গিয়েছে। সূত্রের বক্তব্য, আজকের বৈঠকে বিজেপির পশ্চিমবঙ্গের সাংসদ দিলীপ ঘোষ উপস্থিত ছিলেন না। উপস্থিত বিজেপি সদস্যরাও তৃণমূলের বক্তব্যকে খণ্ডন করেননি। এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে জড়িত অন্য দুই রাজ্য, অসম এবং পঞ্জাবের কোনও সাংসদ এ দিনের বৈঠকে ছিলেন না। তবে পঞ্জাবের কংগ্রেস সরকার কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়েছে ইতিমধ্যেই।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক নির্দেশিকা জারি করে বিএসএফের কাজের এলাকা বাড়ালেও সংসদের আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনে বিষয়টি সংসদের দু’টি কক্ষে পেশ করতে হবে সরকারকে। তখন বিষয়টির তীব্র বিরোধিতা করা হবে বলে জানিয়েছেন তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে। তৃণমূল ছাড়াও এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেছে কংগ্রেস, সিপিএম। বক্তব্য, বিএসএফ-কে দিয়ে এলাকা দখলের খেলা শুরু করেছে মোদী সরকার। তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গের ২৩টি জেলার মধ্যে মোট ১০টি জেলা এর ফলে বিএসএফ-প্রভাবিত হবে। রাজ্যের মোট ৪২টি লোকসভা আসনের মধ্যে প্রভাবিত হবে ২১টি আসন। এর গভীর রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে বলেই মনে করেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব।