প্রতীকী ছবি।
মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের জন্য বাবা তিন বছর ধরে কার্যত গৃহবন্দি। নিজের একটি জিম ছিল, কিন্তু করোনার সময় থেকে লোকসানে চলায় বিক্রি করতে বাধ্য হন। এখন শামুকতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য অমিত ভট্টাচার্যের সংসার চালানোই কঠিন। স্নাকতোত্তর ডিগ্রি রয়েছে যুবকের। তা-ও তিনি ঠিক করেছেন, পঞ্চায়েত সদস্যের পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে গুজরাতের সুরাতে যাবেন বস্ত্রশিল্পে কাজ করার জন্য। অর্থাৎ, পরিযায়ী শ্রমিক।
বছর তেত্রিশের অমিত বিজেপির হয়ে পঞ্চায়েত ভোটে জিতলেও ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটের পরে তৃণমূলে যোগ দেন। এখন তিনি আর্থিক অনটনের মধ্যে রয়েছেন বলে তাঁর বন্ধু-পরিজনেরাই জানিয়েছেন। অমিত বলেছেন, ‘‘কয়েক দিনের মধ্যেই সুরাতে যাচ্ছি। আমার জায়গায় পঞ্চায়েতের কাজ দেখবেন কোনও সুপারভাইজ়ার।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমার স্নাতকোত্তর ডিগ্রি রয়েছে। কিন্তু এলাকায় সেই সংক্রান্ত তো বটেই, অন্য কাজও তেমন নেই। তাই ভিন্ রাজ্যে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’
বিরোধীরা অনেক দিন ধরেই অভিযোগ করছেন, রাজ্যে কাজের অভাব যথেষ্ট, একশো দিনের প্রকল্প ছাড়া কাজের সুযোগ নেই। অমিতের সিদ্ধান্তের কথা সমাজমাধ্যমে জানার পরেই বিজেপি বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছে। বিজেপির আলিপুরদুয়ার জেলার সভাপতি ভূষণ মোদক বলেন, ‘‘তৃণমূল মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে ওই পঞ্চায়েত সদস্যকে দলে নিয়েছিল। রাজ্যে কাজ নেই। ফলে যুবকেরা হতাশ। সেই দলে অমিতও পড়েন। তাঁকেও বাধ্য হয়ে পঞ্চায়েতের সদস্যপদ ছেড়ে বাইরে যেতে হচ্ছে।’’
তৃণমূলের আলিপুরদুয়ার জেলা সাধারণ সম্পাদক ভাস্কর মজুমদার বলেন, ‘‘তৃণমূল কাউকে প্রলোভন দেখিয়ে দলে আনে না। এ ক্ষেত্রেও তা করা হয়নি।’’ ভূষণের দাবি প্রসঙ্গে ভাস্করের পাল্টা যুক্তি, ‘‘আমাদের রাজ্যে বেকারত্বের হার দেশের বেশির ভাগ রাজ্যের থেকে অনেক কম। এই পরিসংখ্যান কেন্দ্রীয় সরকারেরই। ভূষণবাবু একটু পড়াশোনা করুন।’’
অমিত যে পঞ্চায়েত ছেড়ে সুরাত যাবেন বলে ঠিক করেছেন, সে ব্যাপারে কিছুই জানেন না বলে মন্তব্য করেছেন শামুকতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পবনকুমার রাই। তিনি বলেন, ‘‘খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’