সোমবার মমতার সঙ্গে সাক্ষাতের পরেই, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার নেতাদের নিয়ে বৈঠক অভিষেকের। ফাইল চিত্র।
মমতার সঙ্গে বৈঠকের পরেই কি ‘সক্রিয়’ হলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাঁর সঙ্গে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার কয়েক জন নেতার সাক্ষাতের পরেই এমনই জল্পনা শুরু হয়েছে শাসকদলের অন্দরে। সোমবার তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসের সন্ধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে যান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। সেখানে দু’ঘণ্টার বেশি সময় ছিলেন তিনি।
বৈঠক শেষে ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক শওকত মোল্লার মন্তব্যের পরেই ফের অভিষেকের রাজনীতিতে সরব হওয়া নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের জেলায় চারটি লোকসভা আসন রয়েছে। সেই সবক’টি আসনে আমাদের জিততে হবে। সেই বিষয়েই আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন আমাদের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।’’ ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক আরও বলেন, ‘‘আপনারা দেখবেন আমাদের নেতা শীঘ্রই স্বমহিমায় রাজনীতির ময়দানে কাজকর্ম শুরু করবেন। তাঁর নেতৃত্বেই আমরা গত বিধানসভা ভোটে জেলার ৩১টি আসনের মধ্যে ৩০টিতে জয়লাভ করেছিলাম।’’ উল্লেখ্য, ২০১৪ সাল থেকে অভিষেক ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ হলেও, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার চারটি আসনেই নজর দেন। তাই লোকসভা ভোটের মাস কয়েক আগে সেই বিষয়ে আবারও খোঁজখবর নেওয়া শুরু করলেন বলেই মনে করছে রাজ্য রাজনীতির কারবারিদের একাংশ।
গত কয়েক দিন ধরে তৃণমূলের অন্দরে নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই নিয়ম করে নেতারা পরস্পরের বিরুদ্ধে বিবৃতি পাল্টা বিবৃতি দিয়ে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ছেন। এ হেন পরিস্থিতিতে একেবারে নীরব রয়েছেন অভিষেক। কিন্তু এই নীরবতার মধ্যে গত শনিবার উত্তর ২৪ পরগনার কয়েকজন নেতার সঙ্গে কালীঘাটের দফতরে বৈঠক করেন অভিষেক। শনিবার অভিষেকের কালীঘাটের অফিসে বৈঠকে বসেন কুণাল ঘোষ, পার্থ ভৌমিক, নারায়ণ গোস্বামী, ব্রাত্য বসু ও তাপস রায়। জানা গিয়েছে, তাঁরাই অভিষেককে ‘সেনাপতি’র ভূমিকায় নামার অনুরোধ করেছিলেন। সূত্রের খবর, অভিষেক তাঁর ঘনিষ্ঠ নেতাদের জানিয়েছেন, তিনি লোকসভা ভোটে কেবল ডায়মন্ড হারবারেই থাকবেন। দল জনসভা দিলে তাতে অংশ নেবেন। কিন্তু সেই দিন যদি ডায়মন্ড হারবারে পূর্বনির্ধারিত কোনও কর্মসূচি থাকে, তা হলে তিনি সেই জনসভা করতে যাবেন না।
কিন্তু মঙ্গলবার শওকত অবশ্য অভিষেক আবারও রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার কথা বলেছেন। এমনিতেই আগামী ৭ জানুয়ারি পৈলানে নিজের লোকসভা কেন্দ্রে একটি অনুষ্ঠান রয়েছে অভিষেকের। সেখানে তিনি নিজের লোকসভা কেন্দ্রের আবেদনকারীদের বার্ধক্যভাতা দেওয়া শুরু করবেন। ওই দিন কেবলমাত্র বিষ্ণুপুর বিধানসভার জন্য এই পরিষেবা প্রদান করা হবে। তারপর ডায়মন্ড হারবার লোকসভার অধীনে বাকি ছ’টি বিধানসভাতেও একই ধরনের কর্মসূচি করা হবে।