TMC MLAs Oath Dilemma

শপথের জন্য রাজ্যপালকে ফের অনুরোধ সায়ন্তিকার, দিল্লিতে নির্মলার সঙ্গে সাক্ষাতে সিভি আনন্দ বোস

গত ৪ জুন লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গেই ফলঘোষণা হয়েছিল বরাহনগর ও ভগবানগোলা উপনির্বাচনের। তিন সপ্তাহ কেটে গেলেও শপথ নিতে পারেননি বরাহনগর ও ভগবানগোলার জয়ী প্রার্থী সায়ন্তিকা ও রায়াত।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০২৪ ২০:৩৮
Share:

(বাঁ দিকে) শনিবার দিল্লিতে নির্মলা সীতারমনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন সিভি আনন্দ বোস। কলকাতায় শপথের অপেক্ষায় সায়ন্তিকা (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

আবারও রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের কাছে শপথগ্রহণের জন্য অনুরোধ জানালেন বরাহনগরের জয়ী তৃণমূল প্রার্থী তথা অভিনেত্রী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার বিকেলে নিজের এক্স হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটার) সদ্য উপনির্বাচনে জয়ী তৃণমূল প্রার্থী লেখেন, ‘‘আমি মহামান্য রাজ্যপালের কাছে কী ভুল করেছি, তা কি জানতে পারি? আমি আপনার কাছে বিনীত ভাবে অনুরোধ করছি যে, ভারতীয় সংবিধানের ১৮৮ অনুচ্ছেদ অনুসারে কলকাতার বিধানসভাতেই স্পিকারের কাছে আমাকে শপথগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হোক।’’ নিজের এই বিবৃতির সঙ্গে রাজ্যপালকে লেখা দু’টি চিঠিও পোস্ট করে দিয়েছেন তিনি। যদিও, শুক্রবার রাজভবন থেকে জানানো হয়েছে, উপনির্বাচনে জয়ী বিধায়কেরা তাঁদের এলাকায় কাজ করতে চাইলে শপথগ্রহণ ছাড়াই তা করা যায়।

Advertisement

উল্লেখ্য, ৪ জুন লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গেই ফলঘোষণা হয়েছিল বরাহনগর ও ভগবানগোলা বিধানসভার উপনির্বাচনের। কিন্তু প্রায় তিন সপ্তাহ কেটে গেলেও শপথ নিতে পারেননি সায়ন্তিকা ও ভগবানগোলার জয়ী তৃণমূল প্রার্থী রায়াত হোসেন সরকার। ২৬ জুন দু’জনকে রাজভবনে ডেকে শপথগ্রহণ করানোর আমন্ত্রণ পাঠিয়েছিল রাজভবন। কিন্তু দুই জনই পাল্টা চিঠি দিয়ে জানান, তাঁরা বিধানসভাতেই স্পিকারের কাছে শপথ নিতে চান। কিন্তু ওই দিন রাজভবনে শপথগ্রহণ না হওয়ায় পূর্বনির্ধারিত সূচি মেনে দিল্লি চলে যান রাজ্যপাল। সেই থেকে দিল্লিতেই রয়েছেন তিনি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে শুক্রবার সাক্ষাৎ করেছেন বোস। শনিবার সায়ন্তিকার এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করার পরেই রাজভবন থেকেও শনিবার দিল্লিতে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনের সঙ্গে রাজ্যপালের বৈঠকের ছবি পোস্ট করা হয়। জানানো হয়, মৎস্য বিষয়ক ক্ষেত্রে দেশের আর্থিক উন্নয়ন নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে রাজ্যপাল-অর্থমন্ত্রীর। রবিবারও তিনি দিল্লি থেকে কলকাতায় ফিরবেন কি না, সে বিষয়েও রাজভবনে কোনও খবর নেই।

শপথগ্রহণ নিয়ে এ হেন অনিশ্চয়তার পরিবেশ তৈরি হলে বিধানসভায় অম্বেডকর মূর্তির নীচে ধর্না দিচ্ছেন সায়ন্তিকা-রেয়াত। রোজই তৃণমূল বিধায়কেরা তাঁদের সঙ্গ দিচ্ছেন। অন্য দিকে, বিধায়কদের শপথগ্রহণ প্রক্রিয়া থমকে যাওয়া নিয়ে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে চিঠি দেওয়ার পাশাপাশি, উপরাষ্ট্রপতিকেও বিষয়টি জানিয়েছেন। আপাতত, রাজ্যপাল বোসের দিল্লি থেকে কলকাতায় ফেরার অপেক্ষায় সকলেই। সোমবার বিধানসভা খুললেই সায়ন্তিকা ও রেয়াত ফের ধর্না শুরু করবেন।

Advertisement

রাজভবনে যেতে মহিলারা ‘ভয়’ পাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মন্তব্যে রুষ্ট রাজ্যপাল কি কলকাতা হাই কোর্টে মানহানির মামলা দায়ের করছেন মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে? সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই কলকাতা হাই কোর্টে সেই মামলা দায়ের করা হয়েছে। যদিও নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক হাই কোর্টের আইনজীবীরা শনিবার জানিয়েছেন, এমন কোনও মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে শোনা যায়নি। আবার রাজভবন সূত্রের খবর, রাজ্যপাল আপাতত দিল্লিতে। সেখানে কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী অর্জুনরাম মেঘাওয়ালের সঙ্গে শুক্রবার বৈঠক করেছেন বোস। তিনি কলকাতায় ফেরার পরে ওই মামলা দায়ের করা হতে পারে বলেই সূত্রের খবর। দিল্লিতে ওই বিষয়ে আইনি পরামর্শও নিয়ে থাকতে পারেন রাজ্যপাল। তাই শপথগ্রহণ জট আরও জটিল আকার ধারণ করতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।

শুক্রবার তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেছেন, ‘‘রাজ্যপালকে আমি সম্মান করি। কিন্তু, আমি তৃণমূলের একজন সৈনিক। যদি সোমবার বেলা ৩টের মধ্যে আমাদের দু’জন জয়ী প্রার্থী বিধায়ক হিসেবে শপথ নিতে না পারেন, তা হলে মঙ্গলবার থেকে দিল্লির তাজ প্যালেস হোটেলে কী ঘটেছিল, সেই অজানা ঘটনা প্রকাশ্যে আসতে শুরু করবে।’’ কী ঘটেছিল দিল্লির তাজ প্যালেসে, তা অবশ্য খোলসা করেননি কুণাল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement