হাড়োয়ার তৃণমূল বিধায়ক হাজি শেখ নুরুল ইসলাম। —নিজস্ব চিত্র।
কেবলমাত্র স্বচ্ছ ভাবমূর্তির দলীয় কর্মীদেরই আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের টিকিট দেওয়া হবে। তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনীতে দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে এই বার্তা দিলেন উত্তর ২৪ পরগনার জেলার হাড়োয়ার তৃণমূল বিধায়ক হাজি শেখ নুরুল ইসলাম। যদিও একে ‘হাস্যকর’ বলে কটাক্ষ করেছেন জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। তাঁদের মন্তব্য, একের পর এক কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত দলের বিধায়কের মুখে এ কথা বেমানান।
শনিবার সন্ধ্যায় হাড়োয়া ব্লকে তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনী হয়। সেই মঞ্চে নিজের ভাষণে আগামী বছরের প়ঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ের মানদণ্ড জানিয়ে দেন হাড়োয়ার বিধায়ক। তাঁর স্পষ্ট কথা, ‘‘যাঁরা অস্বচ্ছ ভাবে রোজগার করেছেন, মানুষের সেবা করেননি, সে সমস্ত নেতৃত্বরা টিকিট পাবেন না। আমরা তাঁদের টিকিট দেব না। পঞ্চায়েত নির্বাচনে স্বচ্ছ ভাবমূর্তির এবং মানুষের পাশে থেকে যাঁরা কাজ করেছেন, তাঁদেরকে টিকিট দেওয়া হবে।’’
বিধায়কের এই বার্তা নিয়ে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। হাড়োয়ার বিধায়কের মন্তব্যকে কটাক্ষ করে বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার বিজেপির যুব মোর্চার সভাপতি পলাশ সরকার বলেন, ‘‘তৃণমূল বিধায়কের মুখে স্বচ্ছতার কথাটি মানায় না। এটা হাস্যকর বিষয়। কারণ তৃণমূল এবং স্বচ্ছ— দু’টি বিপরীত মেরুর শব্দ। এই শব্দ দু’টি কখনও এক মেরুতে অবস্থান করতে পারে না।’’
সাম্প্রতিককালে শাসকদলের একাংশের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সে প্রসঙ্গ তুলে পলাশের মন্তব্য, ‘‘পশ্চিমবঙ্গবাসী (তৃণমূলের) স্বচ্ছতার রূপ দেখছে। কী ভাবে বেকারদের চাকরি চুরি করেছে, বালি থেকে কয়লা— সব কিছু চুরি করেছে দলটি। এদের নেতা থেকে মন্ত্রী, একের পর এক জেলে যাচ্ছেন। সারা পশ্চিমবাংলা জুড়ে এসএসসি দুর্নীতি, টেট দুর্নীতি-সহ একাধিক কেলেঙ্কারি বাংলার মানুষ দেখছে।’’ এর পর তৃণমূলের নেতৃত্বকে পরামর্শও দিয়েছে পলাশ। তিনি বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটের আগে প্রতিটি বুথে বুথে যে ভাবে গোষ্ঠী কোন্দল লাগিয়েছেন, তাতে সাধারণ মানুষের শান্তি বিঘ্নিত হচ্ছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের কথা পরে ভাববেন। আগে নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব মেটান। এ ভাবে স্বচ্ছতার কথা বলবেন না।’’
বিজেপির কটাক্ষেভরা মন্তব্যকে গুরুত্ব দিতে নারাজ হাড়োয়ার বিধায়ক। তিনি বলেন, ‘‘সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, টিকিটের জন্য কারও দরবার করতে হবে না। যাঁরা মানুষের সঙ্গে কাজ করেছেন, সমাজের উন্নয়ন করেছেন, তাঁরা টিকিট পাবেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনে স্বচ্ছতার সঙ্গে স্বচ্ছ ব্যক্তিদের টিকিট দেওয়া হবে। অস্বচ্ছদের কোনও টিকিট দেওয়া হবে না। তাই দলের উচ্চ নেতৃত্বের নির্দেশ কর্মীদের জানাতে এই মন্তব্য করেছি।’’