পলাশীপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টচার্য। ফাইল চিত্র।
বিধানসভার কোনও কমিটি থেকে বাদ দেওয়া যাবে না মানিক ভট্টাচার্যকে। সম্প্রতি বিধানসভা সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে। নিয়োগ-দুর্নীতি মামলায় এখন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে বন্দি তিনি। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিকের কারাবাসের মেয়াদ প্রায় দেড় মাস হল। ফলে তিনি বিধানসভার কোনও কমিটির বৈঠকেই যোগ দিতে পারেননি। তাই স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছিল, তাঁর বদলে কী ওই কমিটিতে অন্য কোনও বিধায়ককে জায়গা দেওয়া যায়? কারণ এখনও মানিক বিধানসভার উচ্চ শিক্ষা ও উপবিধান কমিটির সদস্য।
পলাশিপাড়ার বিধায়ক মানিককে বিধানসভার কোনও কমিটি থেকে ছেঁটে ফেলা হয়নি। বিধানসভার পরিষদীয় বিধিই সে ক্ষেত্রে বাধা বলে মনে করা হচ্ছে। বিধানসভায় সর্বশেষ চালু হওয়া বিধি অনুযায়ী, কোনও মন্ত্রী সাধারণত এই ধরনের স্থায়ী কমিটির সদস্য হন না। প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি হলেও, এখনও তিনি বিধানসভার সদস্য। তাই ইচ্ছে সত্ত্বেও তাঁকে বাদ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। প্রসঙ্গত, বিধানসভার কমিটির সদস্য হিসেবে মাসে ন্যূনতম চারটি বৈঠকে হাজিরা দিলে বিধায়করা ভাতা বাবদ সর্বোচ্চ ৬০ হাজার টাকা পান। জেলে বন্দি থাকায় মানিক এখন সেই টাকা পাচ্ছেন না। বিধায়কের বেতন ও অন্য ভাতা মিলিয়ে বর্তমানে মাসে প্রায় ১৮ হাজার টাকা ঢুকছে তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) হাতে গ্রেফতার হওয়ার আগে পর্যন্ত বিধানসভা থেকে সব মিলিয়ে মাসে ৮৫ হাজার টাকা মতো বেতন পেতেন তিনি। কিন্তু ইডির হেফাজতে থাকা মানিককে কমিটি থেকে ছেঁটে দেওয়ার ব্যাপারে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়েরও কিছুই করার নেই বলেই জানাচ্ছে বিধানসভার সচিবালয়। একমাত্র তিনি নিজে যদি কমিটি থেকে সরে দাঁড়ানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেন তা হলেই সেটা সম্ভব হবে।
বিধি অনুযায়ী এই উপায় থাকলেও এ ক্ষেত্রে তা বলবৎ হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। ফলে নতুন কমিটি না হওয়া পর্যন্ত মানিক বিধানসভার কমিটিগুলির সদস্যপদে বহাল থাকবেন। বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হবে আগামী বছর অগস্ট মাসে। তারপর নতুন কমিটি গঠনের সময় স্পিকার চাইলে মানিককে বাদ দিতে পারেন। একই ভাবে ইডির হাতে গ্রেফতার প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বেহালা পশ্চিমের বিধায়ক হিসেবে রুলস কমিটিতে থেকে গিয়েছেন। তাঁর গ্রেফতারির পর মন্ত্রিসভার রদবদল এবং বিধানসভার কমিটিগুলিতে কিছু হেরফের করেছেন স্পিকার। কিন্তু কাউকে কমিটি থেকে বাদ দেওয়ার ক্ষমতা তাঁর নেই। ফলে এখনও মানিকের সঙ্গে পার্থও রুলস কমিটিতে রয়ে গিয়েছেন।