আবাসে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ। ফাইল ছবি।
পর পর দু’দিন। দুই বিধায়কের সাম্প্রতিক মন্তব্য শাসকদলের অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে দিল। ঘটনাচক্রে দু’জনই হাওড়ার বিধায়ক। শুক্রবারই নিজের দল তৃণমূলকে ‘কোম্পানি’ এবং নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘ব্র্যান্ড’ হিসাবে অভিহিত করে বিতর্কে জড়িয়েছেন উত্তর হাওড়ার বিধায়ক গৌতম চৌধুরী। ঠিক পর দিনই অর্থাৎ, শনিবার দলকে ‘বেকায়দায়’ ফেললেন শ্যামপুরের বিধায়ক কালীপদ মণ্ডল।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ‘দুর্নীতি’ ও ‘স্বজনপোষণ’-এর অভিযোগ ঘিরে পঞ্চায়েত ভোটের আগে এমনিতেই অস্বস্তিতে রাজ্য সরকার। সেই আবহে এ বার ‘দুর্নীতি’র দায়ভার সরকারি আধিকারিকদের ঘাড়েই চাপালেন কালীপদ। তাঁর দাবি, অযোগ্য হওয়া সত্ত্বেও ‘স্বজনপোষণ’ করে ঘনিষ্ঠদের প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বাড়ি পাইয়ে দিয়েছেন বিডিওরাও! কারণ, উপভোক্তাদের তালিকা তাঁরাই তৈরি করেছেন। তিনি আরও বলেন, ‘‘শাসকদলকে বিড়ম্বনায় ফেলতেই ‘দুর্নীতি’ করেছেন সরকারি আধিকারিকেরা।’’
শনিবার যে ভাবে প্রকাশ্যে কালিপদ এই মন্তব্য করেছেন, তাকে ‘সমর্থন’ করেননি রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার। তিনি বলেন, ‘‘প্রকাশ্যে এই ধরনের মন্তব্য করা একেবারেই উচিত হয়নি। ওঁর যদি মনে হয় দুর্নীতি হয়েছে, তা হলে বিডিও বা এসডিও দফতরের গ্রিভ্যান্স সেলে অভিযোগ জানাতে পারতেন। উনি অভিযোগ করার পরেও যদি কোনও পদক্ষেপ করা না হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে আমায় জানাতে পারতেন। তবে প্রকাশ্যে এই ধরনের কথাবার্তা বলা একেবারেই উচিত নয়।’’
শনিবার শ্যামপুরে দিদির সুরক্ষা কবচ কর্মসূচি নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন কালিপদ। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘আবাস যোজনায় সরকারি আধিকারিকেরাও যুক্ত। এঁরাও একশো ভাগ সৎ নয়। অনেক নামকরা আধিকারিক আছেন, যাঁরা তিন তলা বাড়ির মালিকদের নাম তালিকায় ঢুকিয়ে দিয়েছে। এত বড় কর্মযজ্ঞে সরকারি স্তরে বিডিওরাও ভুল করতে পারেন।’’ বিধায়কের আরও বক্তব্য, আবাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগ তুলে স্মারকলিপি জমা দিতে হলে বিডিওর দফতরে জমা দেওয়া হোক। পঞ্চায়েত দফতরে নয়। কালীপদ বলেন, ‘‘আমাদের মধ্যেও সকলে সৎ নয়। এখানেও সুযোগসন্ধানী আছে। তবে সরকারি আধিকারিকেরা সরকারকে বিড়ম্বনায় ফেলার জন্যই এ সব করছেন। যদি কৈফিয়ত দিতেই হয়, বিডিও দেবেন। লিস্ট তো বিডিও তৈরি করেছেন।’’
কালীপদের এমন মন্তব্যের প্রেক্ষিতে শ্যামপুর-১ ও ২ ব্লকের বিডিও যথাক্রমে তন্ময় কাজি এবং শাহনাজ খানামের সঙ্গে যোগাযোগ করে আনন্দবাজার অনলাইন। তবে তাঁরা এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। পঞ্চায়েতমন্ত্রী অবশ্য বলেছেন, ‘‘কিছু ভুল হয়েছে। তার সংশোধন করা হচ্ছে।’’