সিবিআই হেফাজতে রয়েছেন বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। ফাইল চিত্র।
রাজ্যে শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে গ্রেফতার করা হয়েছে তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে। নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে অতীতে দলের নেতাদের গ্রেফতারির পর তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে দেখা গিয়েছে জোড়াফুল শিবিরকে। যদিও এখনও জীবনকৃষ্ণের বিরুদ্ধে তেমন কোনও পদক্ষেপ করেননি তৃণমূল নেতৃত্ব। এই আবহে গ্রেফতারির পর দল কি তাঁর পাশে রয়েছে? শনিবার সাংবাদিকদের এমনই প্রশ্নের মুখোমুখি হন মুর্শিদাবাদের বড়ঞার বিধায়ক। যা শুনে শুধুমাত্র ২টি শব্দে জবাব দিলেন জীবনকৃষ্ণ।
সিবিআই হেফাজতে রয়েছেন জীবনকৃষ্ণ। শনিবার সকালে নিজাম প্যালেস (কলকাতায় যেখানে সিবিআইয়ের দফতর রয়েছে) থেকে তাঁর শারীরিক পরীক্ষার জন্য তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। নিজাম প্যালেস থেকে বেরোনোর সময় জীবনকৃষ্ণকে সাংবাদিকরা জিজ্ঞাসা করেন, দল কি তাঁর পাশে রয়েছে? প্রশ্ন শুনে বিধায়ক বলেন, ‘‘অবশ্যই আছে।’’ পাশাপাশি জীবনকৃষ্ণ দাবি করেছেন যে, তিনি কোনও অন্যায় করেননি।
শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে গত ১৪ এপ্রিল জীবনকৃষ্ণের আন্দির বাড়িতে হানা দেয় সিবিআই দল। এর পর প্রায় ৬৬ ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ এবং তল্লাশি অভিযানের পর গত ১৭ এপ্রিল ভোরে জীবনকৃষ্ণকে গ্রেফতার করে সিবিআই।
অতীতে এই কেলেঙ্কারিতে গ্রেফতার করা হয়েছে তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, পলাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যকে। পার্থের গ্রেফতারির পর তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করে তৃণমূল। দল থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে পার্থকে। পাশাপাশি মন্ত্রিত্ব থেকেও সরানো হয়েছে তাঁকে। এর পর নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কুন্তল ঘোষের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ করেছে ঘাসফুল শিবির। তাঁদের বহিষ্কার করা হয়েছে দল থেকে। তবে মানিক, জীবনকৃষ্ণদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করেননি তৃণমূল নেতৃত্ব। গরু পাচারকাণ্ডে ধৃত অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধেও এখনও কোনও পদক্ষেপ করতে দেখা যায়নি জোড়াফুল শিবিরকে। এই আবহে জীবনকৃষ্ণ জানিয়ে দিলেন যে, দল তাঁর সঙ্গেই রয়েছে।
জীবনকৃষ্ণের গ্রেফতারির পর মুখ খুলেছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও বিধায়কের নাম করেননি তিনি। নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে প্রশ্নোত্তর পর্বে মমতার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, রাজ্যের আরও এক বিধায়কের নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়া প্রসঙ্গে তিনি কিছু বলতে চান কি না। জীবনকৃষ্ণের নাম করেই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, বড়ঞার বিধায়কের বিরুদ্ধে যে ৫০০ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, সে প্রসঙ্গেই বা কী বলবেন? জবাবে মমতা প্রশ্নকর্তাকে থামিয়ে পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘‘বললেই হয়ে গেল? ৫০০ কোটি টাকা গুনে দেখেছেন? আমি যদি কাল আপনার বাড়িতে গিয়ে বলি ৫০০ কোটির হিসাব পাওয়া গিয়েছে, আপনি মেনে নেবেন?’’ এর পরে মমতার সংযোজন, ‘‘কোনও প্রমাণ আছে? ৫০০ কোটি যে পাওয়া গিয়েছে তার কোনও প্রমাণ দেখাতে পারবে?’’ তবে এর থেকে বেশি কিছু বলেননি তিনি।