হুমায়ুন কবীর। —ফাইল ছবি।
রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, চিকিৎসকদের আন্দোলনের বিষয়ে কেউ যেন কোনও আলটপকা মন্তব্য না করেন। তার আগে তৃণমূলের সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেছিলেন, নাগরিক আন্দোলন কিংবা চিকিৎসকেদের আন্দোলনকে কেউ যেন কটাক্ষ না করেন। কিন্তু মমতা-অভিষেকের বলাই সার। বুধবার বিধানসভার বৈঠকে যোগ দিতে এসে ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর সরাসরি চিকিৎসকদের উদ্দেশে হুঁশিয়ারিই ছুড়ে দিলেন। প্রশ্ন তুলেছেন, জনগণের মৃত্যু হলে, চিকিৎসকেরা সুরক্ষিত থাকবেন কেন?
হুমায়ুনের কথায়, ‘‘চিকিৎসকেরা যদি নিজেদের সুরক্ষা এবং নিজেদের স্বার্থ দেখতে থাকেন, তা হলে আমজনতার স্বার্থ দেখার জন্য আমরাও রাস্তায় নামতে বাধ্য হব। আমি হুমায়ুন কবীর এই ক্যারেক্টারের লোক।’’ তাঁর কথায়, ‘‘পাবলিক মরছে, তা হলে ডাক্তারেরা সুরক্ষিত থাকবেন কেন?’’ তৃণমূলের অনেকের মতে, আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলার জন্য রাজ্য সরকার যে চেষ্টা চালাচ্ছে, সেই সময়ে হুমায়ুনের মন্তব্য লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশিই করবে।
হুমায়ুনের কথার জন্য অতীতেও তৃণমূলকে একাধিক বার বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে। চিকিৎসকদের আন্দোলনকে যখন তৃণমূল এবং প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তর থেকে স্পর্শকাতর বিষয় হিসাবে দেখা হচ্ছে, তখন তার মধ্যেই ফের ‘উস্কানিমূলক’ মন্তব্য করে বসলেন হুমায়ুন। আন্দোলনরত চিকিৎসকেদের উদ্দেশে হুমায়ুন বলেন, ‘‘ডাক্তারবাবুরা সরকারের বেতন ভোগ করেন, সুবিধা ভোগ করেন। তাঁদের দায়িত্ব আউটডোরে পরিষেবা দেওয়া। আমার যখন সেই জায়গায় হাত দেব, তখন ডাক্তারেরা কোথায় যাবেন!’’ শুধু তা-ই নয়, চিকিৎসকেদের উদ্দেশে পাল্টা ঘেরাওয়ের কথাও বলেছেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক।
পথ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে মৃত্যু হয়েছে কোন্নগরের যুবক বিক্রম ভট্টাচার্যের। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, আরজি কর হাসপাতালে নিয়ে য়াওয়া হলেও কোনও চিকিৎসক এগিয়ে আসেননি। বিনা চিকিৎসকায় ছেলের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন মৃতের মা। বিক্রমের মায়রে বক্তব্যকে সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। সেই প্রসঙ্গও উল্লেখ করেছেন হুমায়ুন। কিন্তু তৃণমূলের কোনও নেতাই সরাসরি চিকিৎসকেদের সুরক্ষা নিয়ে কোনও হুঁশিয়ারি দেননি। সেটাই করে বসলেন হুমায়ুন।