বাম আমলের নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন উদয়ন গুহ। —নিজস্ব চিত্র।
বাম আমলে নিয়োগ দুর্নীতির ‘প্রমাণ’ দিতে কোটায় চাকরিপ্রাপ্তদের কয়েকটি করে নাম প্রতি দিন সমাজমাধ্যমে ফাঁস করবেন। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীকে রবিবার সরাসরি এমনই চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন রাজ্যের মন্ত্রী উদয়ন গুহ। বামেদের সময় কোটায় চাকরি নিয়ে নিজের মন্তব্যেই অনড় তিনি। যদিও উদয়নের এই অভিযোগকে গুরুত্ব দিতে নারাজ বামেরা। উল্টে তাঁকে ‘আপাদমস্তক দুর্নীতিপরায়ণ’ বলে তকমা দিয়েছেন।
শনিবার বাম আমলের চাকরি নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে সরব হয়েছিলেন উদয়ন। বলেছিলেন, বামফ্রন্ট আমলে দলের কর্মীদের কোটায় চাকরি হত। বাম আমলের দুর্নীতিতে তৎকালীন কৃষিমন্ত্রী তথা তাঁর বাবা কমল গুহও যুক্ত ছিলেন বলে চাঞ্চল্যকর মন্তব্য করেন তিনি। রবিবার সরাসরি সুজনকে চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন উদয়ন। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজনের নাম নিয়ে ফেসবুকে উদয়নের প্রশ্ন, ‘‘সুজনবাবু কোটায় চাকরি হত না? তবে এরা কি করে চাকরি পেয়েছিল? অঞ্জলি সেন, শুক্লা সরকার, বুদ্ধদেব রায়, বিশ্বনাথ রায়, মলয় রায়!’’
এখানেই থামেননি উদয়ন। রবিবার সুজনকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে তিনি বলেছেন, ‘‘বামফ্রন্ট আমলে যাঁদের কোটায় চাকরি হয়েছে, প্রতি দিন তাঁদের কয়েকটি করে নাম সমাজমাধ্যমে পোস্ট করব। যদি সুজন চক্রবর্তী প্রমাণ করতে পারেন, আমি মিথ্যা বলছি, তা হলে কান ধরে ওঠবস করে সমস্ত বক্তব্য ফিরিয়ে নেব।’’
রাজ্য জুড়ে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নাম জড়িয়েছে তৃণমূলের হেভিওয়েট-সহ যুবনেতাদের। তবে বামেদের আমলে যে নিয়োগ দুর্নীতির বিস্তর উদাহরণ রয়েছে, সে দাবি করেছেন উদয়ন। তার প্রমাণও তিনি দিতে পারেন বলে দাবি করেছেন। ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘‘চাকরি পাওয়ার কোনও যোগ্যতা ছিল না, কিন্তু (চাকরি) পেয়েছিলেন। এই ধরনের ১০০ জনের তালিকা রয়েছে আমার কাছে।’’ অন্য একটি পোস্টে তাঁর আরও দাবি, ‘‘একদা কোচবিহার জেলায় জনৈক জহাঙ্গীর আলম ১১০ শতাংশ সুস্থ হয়েও বিশেষ ভাবে সক্ষম কোটায় প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি পেয়েছেন।’’ নির্দিষ্ট করে এই জহাঙ্গীর আলমের পরিচয় না দিলেও অনেকের মতে, নাটাবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের প্রাক্তন সিপিআইএমের বিধায়ক তমশের আলির পুত্র জহাঙ্গীর আলমের কথাই লিখেছেন উদয়ন।
উদয়নের অভিযোগ প্রমাণের দায়িত্ব তাঁরই বলে মনে করেন প্রাক্তন সাংসদ তথা সিপিএম নেতা শমীক লাহিড়ি। প্রাক্তন ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক তথা অধুনা তৃণমূল সরকারের মন্ত্রী উদয়নের অভিযোগে নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আপাদমস্তক দুর্নীতিপরায়ণ লোক তিনি (উদয়ন)। তাই ওঁর অভিযোগের জবাব দেওয়ার কোনও প্রয়োজন আছে বলে আমরা বোধ করি না। একটা কথা বলতে পারি, যিনি অভিযোগ করেন, তাঁকেই সেটি প্রমাণ করতে হয়। যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, সেই অভিযুক্তকে তা প্রমাণ করতে হয় না। যিনি ক্ষমতার লোভে বার বার দল বদল করেন, তাঁর মুখে কোনও অভিযোগই শোভা পায় না।’’