সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির পরিচালন সমিতি থেকে একসঙ্গে ৮ জন সদস্য পদত্যাগ করলেন। নিজস্ব চিত্র
পঞ্চায়েত ভোটের মুখে পূর্ব বর্ধমানে ফের প্রকাশ্যে শাসকদলের গোষ্ঠীকোন্দল। যার জেরে সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির পরিচালন সমিতি থেকে একসঙ্গে ৮ জন সদস্য পদত্যাগ করলেন। ওই সমিতিতে সদস্য সংখ্যা ছিল ১০। একসঙ্গে পদত্যাগের কারণে সদস্য সংখ্যা কমে দাঁড়াল ২।
যাঁরা পদত্যাগ করেছেন তাঁদের অভিযোগ, তৃণমূল কংগ্রেসের একটি গোষ্ঠী তাঁদের নানা ভাবে হেনস্থা ও অপমান করছে। ফলে সমবায়ে স্বাধীন ভাবে নির্বিঘ্নে কাজ করা যাচ্ছে না। এ বিষয়ে উচ্চ নেতৃত্বের কাছে অভিযোগ জানিয়েও লাভ হয়নি বলে জানিয়েছেন তাঁরা। ফলে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিতে ‘বাধ্য’ হয়েছেন।
পূর্ব বর্ধমানের জামার সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির সভাপতি সঞ্জয় কোনার। তিনি রায়ান ২ নম্বর পঞ্চায়েতের সদস্য। এর আগে তৃণমূলের ব্লক সহ সভাপতি এবং পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ ছিলেন তিনি। বাকিদের সঙ্গে তিনিও পদত্যাগ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘সমিতি পরিচালনার দায়িত্বে আমরা যত জন ছিলাম, সকলেই প্রবীণ। সম্মানের সঙ্গে দলের কাজ করেছি। কিন্তু এখন যুব তৃণমূলের কিছু দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা পদে পদে অপমান করে। পঞ্চায়েতে গেলেও অপদস্থ হতে হয়। তাই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’
এ দিকে যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তৃণমূলের সেই যুবনেতারা যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁদের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘ওঁরা একতরফা ভাবে সমিতি চালাচ্ছেন। আমরা হিসাব চাইতে গেলে আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন।’’ চাষীরা সমিতি থেকে যে সার কেনেন, তার দামও বাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ওই সদস্যদের বিরুদ্ধে। হিসাব না দিয়ে প্রবীণরা পদত্যাগ করেছেন বলে দাবি যুব নেতৃত্বের। সমিতির সভাপতি সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে এ-ও অভিযোগ উঠেছে যে, তিনি বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন।
এ দিকে একসঙ্গে এত জনের পদত্যাগের ফলে সমিতির কাজে ব্যাঘাত ঘটছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। এ প্রসঙ্গে রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র দেবু টুডু বলেন, ‘‘খবর পেয়েছি। মনোমালিন্য হয়েছে। সব মিটে যাবে।’’
অন্য দিকে বিজেপি নেতা কল্লোল নন্দন বলেন, ‘‘ভাগ নিয়ে ঝামেলা। এটা তো গোটা রাজ্যেই চলছে। চুরি তৃণমূলের শিরায় শিরায়। তবুও ওঁদের ধন্যবাদ যে ওঁরা প্রতিরোধ করার চেষ্টা করেছেন।’’