রাজ ভবনের সামনে যুব কংগ্রেসের বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।
কৃষি বিলের বিরোধিতায় পথে নেমে প্রতিবাদে শামিল হচ্ছে রাজ্যের শাসক তৃণমূল ও বিরোধী বাম এবং কংগ্রেস। বাম এবং কংগ্রেসের নানা সংগঠন ইতিমধ্যেই কৃষি সংক্রান্ত তিনটি অধ্যাদেশকে সংসদীয় রীতি-নীতির তোয়াক্কা না করে বিলে পরিণত করার প্রতিবাদে আন্দোলনে নেমে পড়েছে। পথে নামার ঘোষণা করে দিয়েছে তৃণমূলও। আর বিরোধীরা কৃষি বিল নিয়ে মানুষকে ‘বিভ্রান্ত’ করছে বলে অভিযোগ করে রাজ্য জুড়ে পাল্টা প্রচারে নামার কর্মসূচি নিচ্ছে বিজেপি।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার নবান্নে কৃষি বিল এবং ‘গণতন্ত্র-হত্যা’র সর্বাত্মক প্রতিবাদের ডাক দেওয়ার পরেই তৃণমূলের তরফে কর্মসূচি ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছে। তৃণমূলের মহিলা সংগঠন আজ, মঙ্গলবার মেয়ো রোডে গাঁধী মূর্তির পাদদেশে ধর্না-অবস্থানে বসবে। পর দিন, বুধবার তৃণমূল ছাত্র পরিষদ শহরে মিছিল করে মেয়ো রোডেই প্রতিবাদ সভা করবে।
বিভিন্ন কৃষক সংগঠনের যৌথ মঞ্চ কিষাণ সংগ্রাম সমন্বয় কমিটি আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর ভারত বন্ধ এবং দেশ জুড়ে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে কৃষিকে কর্পোরেটের হাতে তুলে দেওয়ার নীতির প্রতিবাদে। সিটু, আইএনটিইউসি, এআইটিইউসি-সহ কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনগুলি ওই প্রতিবাদকে সমর্থন করছে। আলিমুদ্দিনে এ দিন বামফ্রন্ট এবং সহযোগী মিলে ১৬টি দল বৈঠক করে ঠিক করেছে, তারাও কৃষক বিক্ষোভের সঙ্গে থাকবে। বিভিন্ন অংশের মানুষ ও সংগঠনকে নিয়ে ২৫ তারিখ ধর্মতলা থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত যে মিছিলের ডাক দিয়েছে শ্রমিক সংগঠনগুলি, পিছনে থেকেই তার সঙ্গে বাম নেতৃত্ব পা মেলাবেন বলে জানিয়েছেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। কেন্দ্রীয় সরকারের নানা ‘জন-বিরোধী’ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ ও লকডাউনে বিপন্ন পরিবারগুলিকে সাহায্যের দাবিতে ১৭ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর সরব হওয়ার ডাক দিয়েছিল সিপিএমের পলিটব্যুরো। তারই অঙ্গ হিসেবে আজ মহাজাতি সদন থেকে শ্যামবাজার এবং হাজরা থেকে গোলপার্ক পর্যন্ত দু’টি বিক্ষোভ মিছিল হবে। জেলায় জেলায় এ দিনও দেখা গিয়েছে বামেদের প্রতিবাদ।
আরও পড়ুন: গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে সর্বোচ্চ মৃত্যু, টানা বাড়ছে সুস্থতাও
আরও পড়ুন: চার বছর ধরে তৈরি হচ্ছিল মুর্শিদাবাদের এই জেহাদি গ্যাং, দাবি গোয়েন্দাদের
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের অবশ্য পাল্টা বক্তব্য, ‘‘কৃষি বিল নিয়ে মিথ্যা প্রচার করে বিরোধীরা মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চাইছে। এই বিলের ফলে আসলে কী ভাবে কৃষক উপকৃত হবেন, জেলা থেকে বুথ পর্যন্ত প্রচার করে আমরা সেই সত্য তুলে ধরব।’’
কৃষি বিলের বিরোধিতায় এবং নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের ‘স্বৈরাচারী শাসনে’র প্রতিবাদে এ দিন রাজভবনের সামনে রাস্তায় বিক্ষোভ দেখিয়েছে যুব কংগ্রেস। বিক্ষোভ কর্মসূচিতে কৃষক সেজেও এসেছিলেন যুব কংগ্রেসের কিছু কর্মী। প্রদেশ যুব কংগ্রেস সভাপতি শাদাব খান, ছাত্র পরিষদের সভাপতি সৌরভ প্রসাদ, দক্ষিণ কলকাতা জেলা কংগ্রেসের সভাপতি আশুতোষ চট্টোপাধ্যায়, যুব কংগ্রেসের শাহিনা জাভেদ, শেখ হবিবুর রহমান-সহ বিক্ষোভকারীদের মধ্যে জনাপঞ্চাশকে পুলিশ গ্রেফতার করে। প্রধানমন্ত্রীর কুশপুতুল এবং কৃষি বিলের প্রতিলিপি পোড়ানো হয় বিক্ষোভে।