—প্রতীকী ছবি।
সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিয়ো ফুটেজ ঘিরে চাঞ্চল্য মালদহে। ওই ভিডিয়োয় (যার সত্যতা আনন্দবাজার পত্রিকা যাচাই করেনি) দেখা যাচ্ছে, এক জনের জামার কলার খামচে ধরে অন্য এক যুবক টাকা ফেরত চাইছেন। যাঁর কাছে টাকা ফেরত চাওয়া হচ্ছে, তিনি মালদহ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান স্বপন মিশ্র বলে দাবি। স্বপন মালদহ জেলা পরিষদের প্রাক্তন কর্মাধ্যক্ষও। তৃণমূলের ব্লক সভাপতিও ছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার তাঁর ‘হেনস্থার’ এই ভিডিয়ো ভাইরাল হলেও, তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, ভিডিয়োটি দেড় থেকে দু’মাসের পুরনো। জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েত ভোটের আগে থেকেই কার্যত নিরুদ্দেশ স্বপন। দলীয় নেতার এই ভিডিয়ো ‘ভাইরাল’ হতেই অস্বস্তিতে তৃণমূল নেতৃত্ব। সুর চড়িয়ে আসরে নেমেছে বিরোধী দলগুলি।
তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ হিসাবেও জেলায় পরিচিত স্বপন। কৃষ্ণেন্দু এ দিন বলেন, “কেউ প্রতারণা করে টাকা নিয়ে থাকলে দল তাঁর পাশে দাঁড়াবে না। শুনেছি উনি (স্বপন) অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। এত টাকা নিয়ে কী করলেন, তা উনিই বলতে পারবেন। পুলিশ ও প্রশাসন খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবে।” যদিও এখনও পর্যন্ত স্বপনের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি বলে খবর।
এ দিন সকাল থেকেই একাধিক সমাজমাধ্যমে এই ভিডিয়ো ছড়াতে থাকে। তাতে চেয়ারে মাথা নিচু করে বসে থাকতে দেখা গিয়েছে স্বপনকে। তাঁর কলার ধরে সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা ফেরত চাইছেন এক যুবক। বলছেন, ‘‘কবে টাকা ফেরত দিবি?’’ তখন স্বপনকে নিচু স্বরে বলতে শোনা যাচ্ছে, কিছু দিন সময় দিলে টাকা ফেরত দেবেন তিনি।তবে ওই যুবক কী কারণে টাকা চাইছেন, তা স্পষ্ট জানা যায়নি, দাবি তৃণমূল নেতৃত্বের।
তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, স্বপন ২০১৪ সালে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান হন। ২০১৮ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষও ছিলেন। তিনি স্কুলের শিক্ষকও। যদিও কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে প্রাথমিকে নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত শুরু হতেই স্বপন গা ঢাকা দেন বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। সে-ও পঞ্চায়েত ভোটের আগে। তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, শহরের বাড়িও তিনি বিক্রি করে দিয়েছেন।
বিজেপি নেতা অম্লান ভাদুড়ি বলেন, “প্রাথমিকে চাকরি দেওয়ার নাম করে তৃণমূলের নেতারা প্রচুর টাকা নিয়েছেন। এখন মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটছে।” সিপিএম নেতা দেবজ্যোতি সিংহ বলেন, “তৃণমূল নেতাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে মানুষ প্রতিবাদ করতে শুরু করেছে।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি আবদুর রহিম বক্সী বলেন, “ভিডিয়োটি দেখেছি। এখানে দলের ব্যাপার নেই। কেউ, কোনও অন্যায় করলে আইন, আইনের পথে চলবে।”